Published : 11 Dec 2022, 05:22 PM
শেষ হয়ে আসা বছরটিতে মানুষ যে সিনেমাগুলো সম্পর্কে জানতে গুগলে সবচেয়ে বেশি অনুসন্ধান করেছেন, সেগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে এই সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট।
অনুসন্ধানের ওই তালিকায় থাকা প্রথম পাঁচটি সিনেমা নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন। তালিকার শীর্ষে আছে– ‘থর: দ্য লাভ অ্যান্ড থান্ডার’, ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’, ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’, ‘দ্য ব্যাটম্যান’ ও ‘এনকানটো’।
‘থর: লাভ অ্যান্ড থান্ডার’
মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স চলতি বছরে নিয়ে আসে ‘থর: লাভ অ্যান্ড থান্ডার’ সিনেমাটি। হলিউড তারকা ক্রিস হেমসওয়র্থ এবং নাটালি পোর্টম্যান অভিনীত সিনেমাটি মুক্তি পায় চলতি বছরের ৮ জুলাই।
‘থর’ নিখোঁজ ছিলেন অনেকদিন ধরে। ‘থর: র্যাগনারক’ সিনেমা দিয়ে মহাকাশে পাড়ি জমানোর পর এই সুপার হিরো আর দেখা দেননি মার্ভেল ভক্তদের। সিনেমামুক্তি পর দেখা গেছে বেকার বসে নেই ‘থর’। রহস্যময় শক্তিতে ভরপুর হাতুড়ি নিয়ে তিনি দুধর্ষ অভিযানে বাঁচিয়ে চলেছেন একের পর এক গ্রহ।
‘থর’সহ দেবতাদের ধ্বংসে একের পর এক কূটচাল চালেন সুপারভিলেন ‘গর দ্য গড বুচার’। এই ভিলেনের চরিত্রটি করেছেন ক্রিস্টিয়ান বেল। আরও অভিনয় করেছেন টেসা থম্পসন; তাইকা ওয়াতিতি ছিলেন পরিচালনায়। এবারও সিনেমার প্রযোজক কেভিন ফেইগ, আর চিত্রনাট্য লিখেছেন জেনিফার কেইভিন রবিনসন।
মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স এ পর্যন্ত ‘থর’ নিয়ে চারটি সিনেমা পর্দায় এনেছে। ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো থর পৃথিবীতে আসে। এর দুই বছর পর ২০১৩ সালে আসে ‘থর: দ্য ডার্ক ওয়ার্ল্ড’, সর্বশেষ ‘থর: র্যাগনায়ক’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৭ সালে।
মুক্তির পর সিনেমা নিয়ে দর্শক ও সমালোচক– দুই পক্ষ থেকেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। তবে গুগলে এই সিনেমাটির নাম দিয়ে সবেচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে।
গেল নভেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে ক্রিস হেমসওয়ার্থ বলেছিলেন তিনি ‘অ্যালঝেইমার’ রোগে আক্রান্ত। তাই অভিনয় থেকে সাময়িক বিরতিতে যাচ্ছে তিনিভ। আগামীতে খুব বেশি হলে আরেকটি ‘থর’ সিরিজে তাকে দেখা যেতে পারে।
‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’
হলিউডি সিনেমা ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’ নিয়ে মানুষের আগ্রহ যে নতুন নয়, সেটি আবারও প্রমাণিত হল গুগলে আগ্রহীদের অনুসন্ধান দিয়ে। গত ২১ অক্টোবর নিউ ইয়র্কে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডোয়াইন জনসন। এ সিনেমা দিয়ে প্রথমবারের মতো ‘ডিসি কমিকস’ এর সিরিজে অভিনয়ে আসেন ‘দ্য রক’ খ্যাত এই অভিনেতা।
এছাড়াও নোয়া সেন্টিনিও, সারা শাহি, অ্যালডিস হজ অভিনয় করেছেন এ সিনেমায়। বড় চমক হয়ে এসেছেন জেমস বন্ড তারকা পিয়ার্স ব্রসনান।
বছরের পর বছর ধরে ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’ নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাসের কারণ হল, পৃথিবীর সবেচেয়ে সবচেয়ে শক্তিশালী ও অপ্রতিরোধ্য শক্তি হিসাবে ‘ব্ল্যাক অ্যাডাম’কে তুলে ধরা হয়।
এবারে মিশরীয় দেবতাদের ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী হতে দেখা গেছে ব্ল্যাক অ্যাডামকে। দুনিয়ায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও প্রতিশোধের এক লড়াইয়ের কাহিনী এটা। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পর সমাধি থেকে মুক্ত হয়েই আবারও কারাবন্দি হতে হয় ব্ল্যাক অ্যাডামকে। এই গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাটি গুগুল সার্চে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
‘টপ গান: দ্যা মাভেরিক’
টম ক্রুজ ও ভ্যাল কিলমার অভিনীত যুদ্ধ ও প্রেমের সিনেমা ‘টপ গান’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৬ সালে; মুক্তির পরপরই আলোড়ন তোলে সেটি, ক্যারিয়ারও শক্তপোক্ত হয় ক্রুজের। এর ৩৬ বছর পর সিনেমাটির সিক্যুয়েল নিয়ে চলতি বছর ফেরেন হলিউড অ্যাকশন তারকা ক্রুজ। এবারের পর্বের নাম ‘টপ গান: ম্যাভেরিক’।
এখানেও হাড় হিম করা নানা অ্যাকশনে দর্শকদের দম বন্ধ করা পরিস্থিতিতে ফেলেছেন হলিউডের এই নায়ক। ৭ মে মুক্তির পরের মাসেই রেকর্ড আয় করে সিনেমাটি।
‘টপ গান: ম্যাভেরিকে’ নৌবাহিনীর বৈমানিক পিট ম্যাভেরিক মিচেল চরিত্রে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ। গুগুলের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে জোসেফ কেসিনাস্কি পরিচালিত সিনেমাটি। অভিনয়ের সঙ্গে প্রযোজনাও করেছেন টম ক্রুজ; সঙ্গে আছেন প্রথম কিস্তির প্রযোজক জেরি ব্রাকহেইমার।
‘দ্য ব্যাটম্যান’
বছরের আলোচিত সিনেমাগুলোর মধ্যে ‘দ্য ব্যাটমান’ অন্যতম। এর কারণ শুধু ব্যাটম্যানের জনপ্রিয়তা নয়, এ সিনেমার মাধ্যমে হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা রবার্ট প্যাটিনসন প্রথমবারের মতো ‘ব্যাটম্যান’ হয়ে পর্দায় এসেছেন।
ডিসি কমিকসের জনপ্রিয় এই চরিত্রে প্যাটিনসনের অভিনয় নজর কেড়েছে সিনেমাপ্রেমীদের। আরও অভিনয় করেছে জোয়ি ক্রাভিটজ, জেটরি রাইট, পল ড্যানোসহ অনেকে।
২০২১ সালের জুনে ‘দ্য ব্যাটম্যান’ ছবিটি মুক্তির কথা থাকলেও দুইবার পিছিয়ে যায় মহামারীর কারণে। শেষমেশ চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে প্রিমিয়ার হয়ে হলে আসে ৪ মার্চ।
তবে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে সিনেমাটি রাশিয়ার মুক্তি দেয়নি এর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্নার ব্রাদার্স। বছরজুড়ে আলোচিত এ সিনেমাটির নাম গুগলের খোঁজার তালিকায় পাওয়া গেছে চার নম্বরে।
‘এনকান্তো’
অ্যানিমেডেট সিনেমা ‘এনকান্তো মুক্তি পায় গত বছরের নভেম্বরে। মূলত শিশুদের জন্য হলেও যে কোন বয়সের দর্শকের উপভোগ্য করেই নির্মাণ করা হয়েছে সিনেমাটি।
পারিবারিক সম্প্রীতির কাহিনীতে নির্মিত এ সিনেমার চরিত্রায়ন, সংগীত, অ্যানিমেশন আর কণ্ঠ অভিনয়ও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে।
এখানে দেখানো হয়েছে, সবার উপরে পরিবার। এবং পরিবারে কেউ যে কারও পর নয় এবং যে যার জায়গা থেকে চেষ্টা করে পরিবারকে সংকটের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। এই সম্মিলিত চেষ্টাই ফুটে উঠেছে সিনেমায়। এই সিনেমাটি গুগলো খোঁজার তালিকায় আছে পঞ্চমে।