ইংলিশ ফুটবল
বিদায় বেলায় কোনো আক্ষেপ নেই লিভারপুলের অনেক সাফল্যের কারিগর এই জার্মান কোচের।
Published : 17 May 2024, 07:52 PM
লিভারপুলে ইয়ুর্গেন ক্লপের সাফল্যমণ্ডিত অধ্যায় শেষ হয়ে যাচ্ছে এক ম্যাচ পরই। জীবনের প্রায় ৯টি বছর অ্যানফিল্ডের ক্লাবটিতে কেটেছে তার। একটা সময় খাদের কিনারে থাকা দলটিকে টেনে তুলে জিতিয়েছেন তিনি একের পর এক ট্রফি। কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে ক্লাব, খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের সঙ্গে। বিদায় বেলায় তাই আবেগ ছুঁয়ে যাচ্ছে এই জার্মান কোচকে। বলছেন, এখানে কাটানো একটি দিনও ভুলবেন না তিনি।
প্রিমিয়ার লিগের শেষ রাউন্ডে আগামী রোববার ঘরের মাঠে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মৌসুম শেষ করবে লিভারপুল। এই ম্যাচ দিয়ে অ্যানফিল্ডকে বিদায় জানাবেন ক্লপ।
দলটির কোচ হিসেবে এটি হবে ক্লপের ৪৯১তম ম্যাচ। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ৫৬ বছর বয়সী কোচ বললেন, লিভারপুল সবসময় তার হৃদয়ে থাকবে।
“জীবনের এক দশক অনেক লম্বা একটা সময়, কিন্তু সেই সময়ের একটি দিনও আমি ভুলব না। কারণ আমার দেখা সেরা মানুষদের এখানে খুঁজে পেয়েছি এবং আমার কল্পনা করা সেরা ক্লাবের জন্য কাজ করেছি।”
২০১৫ সালে লিভারপুলে ব্রেন্ডন রজার্সের স্থলাভিষিক্ত হন ক্লপ। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দলটি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে তারা জেতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ৩০ বছরের মধ্যে প্রথমবার লিগ শিরোপা ঘরে তুলে তারা ২০১৯-২০ মৌসুমে।
সব মিলিয়ে ক্লপের কোচিংয়ে ৭টি বড় ট্রফি জিতেছে লিভারপুল। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ইংলিশ ক্লাবগুলোর মধ্যে লিভারপুলের চেয়ে বেশি বড় শিরোপা জিতেছে কেবল ম্যানচেস্টার সিটি, ১৫টি।
গত জানুয়ারিতে হুট করেই মৌসুম শেষে লিভারপুল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া ক্লপ বললেন, বিদায়ের কথা ভাবতেই ভীষণ খারাপ লাগছে তার।
“আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগঘন সপ্তাহ ছিল এটি, অনেক লোককে বিদায় জানাচ্ছি। এটিকে একটি সাধারণ সপ্তাহ বললে মিথ্যা বলা হবে। বিদায় বলা কখনোই চমৎকার কিছু নয়। এই সময়ে কষ্ট না পাওয়া কিংবা খারাপ না লাগার অর্থ একসঙ্গে সময়টা ভালো কাটেনি। আমি বলব, এখানে আমার সময়টা খুব ভালো কেটেছে।”
ক্লপের সময়ে দুবার সিটির চেয়ে স্রেফ ১ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকায় প্রিমিয়ার লিগ জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি লিভারপুলের। তবে এসব নিয়ে আক্ষেপ নেই সাবেক বরুশিয়া ডর্টমুন্ড কোচের।
“আমি একদম ঠিক আছি। জানি আমরা আরও জিততে পারতাম, কিন্তু এখন এটা পরিবর্তন করতে পারব না। এক পয়েন্টে শিরোপা না পাওয়া ভালো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে এটা প্রমাণ করে, আমরা সত্যিই ভালো দল।”
“তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলা অসামান্য অর্জন। যদি ভাবি, আমি আরও কিছু করতে পারতাম, তাহলে খুশি হতে পারব না। আমি এর চেয়ে বেশি করতে পারতাম না। অন্য কেউ কি আরও ভালো করতে পারত? হয়তো পারত। কিন্তু আমি পারিনি। বাকিটা মানুষ বিচার করবে। আমি নিশ্চিত, অধিকাংশ মানুষই মনে করে দল হিসেবে আমরা খুব ভালো ছিলাম।”
বিদায়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে লিভারপুল সমর্থকদের বার্তা পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানালেন ক্লপ।
“গত কয়েক মাস ধরে অনেকগুলো ই-মেইল ও চিঠি পেয়েছি৷ যদি সবগুলোর উত্তর দিতে যাই তাহলে এখানে আমাকে ২০২৮ সাল পর্যন্ত থাকতে হবে। তাই সবগুলোর উত্তর না দিতে পারার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী৷ এই চিঠিগুলির মধ্যে কিছু পড়ে আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম, এগুলোই বলে দেয় কিছু লোকের কাছে এই ক্লাবের অর্থ কী।”