সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, “শিল্পকলা সব সময় জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান, গণমুখী প্রতিষ্ঠান। জনগণ যেভাবে চাইবে শিল্পকলা তেমনই থাকবে।“
Published : 16 Dec 2024, 10:58 AM
শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ডিসেম্বরের উৎসব’ শিরোনামে মাসব্যাপী যে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, বদলে গেছে সেই শিরোনাম।
অবশেষে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘বিজয়ের উৎসব’।
১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে শিল্পকলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো একটি প্রমোশনাল ভিডিওতে নতুন নাম দেখা গেছে।
এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিল্পকলা সব সময় জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান, গণমুখী প্রতিষ্ঠান। জনগণ যেভাবে চাইবে শিল্পকলা তেমনই থাকবে। জনমানুষের হয়ে থাকবে। আমরা এভাবেই কাজ করছি।”
তিনি বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে যে ন্যারেটিভ তৈরি করেছেন এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছেন, তা থেকে সরে আসতে চাই।“
গত ৫ ডিসেম্বর থেকে শিল্পকলা একাডেমি মাসব্যাপী নানা কর্মসূচি উদযাপন করছে, যার বেশিরভাগ আয়োজিত হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। বৈচিত্র্যপূর্ণ এই আয়োজন প্রশংসা পেলেও শিরোনাম নিয়ে আপত্তি তুলেন অনেকে।
বিজয়ের মাসে কেন শিল্পকলায় ‘ডিসেম্বরের উৎসব’? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট লিখে প্রতিক্রিয়া জানান কেউ কেউ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ সম্পর্কে আমার যে ধারণা, তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো কিছু করবেন বলে মনে করি না। তবে শিল্পকলার মাসব্যাপী এই আয়োজনের শিরোনামে কেন ‘বিজয়’ শব্দটা নাই, তা আমারও প্রশ্ন”
শিল্পকলার অনুষ্ঠানমালায় যে বৈচিত্র্য তুলে ধরা হচ্ছে, তার প্রশংসাও করেন আনু মুহাম্মদ।
তিনি বলেন, “মাসব্যাপী যে অনুষ্ঠানমালা, তাতে বাংলাদেশের সংস্কৃতির নানা ধারার বিষয়টি এসেছে, এটি ভালো। এমন অনেক বিষয় এসেছে, যা আগে তেমন গুরুত্ব পায়নি। ঢাকার বাইরে উৎসবের নানা কর্মসূচি সাজানো হয়েছে, এটাও খুব ভালো।
“তবে এই উৎসবের যে নামকরণ করা হয়েছে, তা প্রশ্ন তৈরি করে। এটা কি ডিসেম্বর মাসের উৎসব? নাকি এর সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ও আছে। এটা স্পষ্ট হয় না। শিল্পকলার উচিত, এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা।”
মহাপরিচালক বলেন, “ডিসেম্বর মাসে মানুষ বিজয়ের উৎসব দেখতে চায়, আমরা এই ধারণাকে স্বাগত জানাই। কোনো দলীয় স্বার্থ, কোনো ব্যক্তির স্বার্থ নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি কাজ করবে না। সামষ্টিক জনগণের ভাষ্যই আমাদের ভাষ্য। জনগণ যেভাবে চাইবে, শিল্পকলা তেমনই থাকবে।”
কোনো একক ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের স্বার্থে শিল্পকলায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না জানিয়ে জামিল আহমেদ বলেন, “শিল্পকলা একাডেমি আমার একক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এখানে আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করি। আমাদের উদ্দেশ্য জন-আকাঙ্খার প্রতিফলন। জনবান্ধব শিল্পকলা গড়ে তোলা আমাদের উদ্দেশ্য। কোনো ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের শিল্পকলা একাডেমি নয়।“
জনবান্ধব শিল্পকলা একাডেমি গড়ার কাজে সবাইকে ‘পাশে থেকে সহযোগিতার আহ্বান’ জানিয়েছেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।
পুরনো খবর