গত বছরে ভারতে স্বাধীনতা দিবসের দিন খবর আসে ‘কানাডা কুমার’ নাম থেকে থেকে মুক্তি মেলে অক্ষয়ের।
Published : 20 May 2024, 07:31 PM
কানাডার পাসপোর্ট প্রত্যাহার করে ফের জন্মভূমি ভারতের নাগরিকত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মত ভোট দিয়েছেন বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার।
নাগরিক আধিকার প্রয়োগে সোমবার সকাল ৭টায় মুম্বাইয়ে নিজের কেন্দ্রের সামনে পৌঁছে যান এ অভিনেতা। লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়ে কেন্দ্রের বাইরে এসে মুখোমুখি হন ক্যামেরার।
তিনি বলেন, “ভারতের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে আমি ভোট দিয়েছি এবং সমস্ত ভোটারের এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত এবং তাদেরও সঠিক প্রার্থীকে ভোট দেওয়া উচিত। ভোট দিতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে।”
মুম্বাইতে ভোটারের সংখ্যা কম হওয়া নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল অক্ষয়কে। জবাবে ‘খিলাড়ি’ তারকা বলেন, তিনি যখন তার পোলিং বুথে পৌঁছান, তখনও বুথে পাঁচশ থেকে ছয়শ লোক ছিল।
“আমি আত্মবিশ্বাসী জনগণ লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবে।”
#WATCH | Actor Akshay Kumar shows the indelible ink mark on his finger after casting his vote at a polling booth in Mumbai.
He says, "...I want my India to be developed and strong. I voted keeping that in mind. India should vote for what they deem is right...I think voter… pic.twitter.com/mN9C9dlvRD
— ANI (@ANI) May 20, 2024
রীতিমতো লাইন দিয়ে ভোট দিতে দেখা যায় অক্ষয় কুমারকে।
তারকা হয়েও তিনি লাইনে কেন– এ প্রশ্নে অক্ষয় হেসে বলেন, “কী আর করার ছিল আমার? লাইন ভেঙে আগে চলে যেতাম? সেটা তো ভালো হত না।”
গত বছর ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন খবর আসে, ‘কানাডা কুমার’ নাম থেকে মুক্তি মিলেছে অক্ষয়ের, অর্থাৎ তিনি ভারতীয় নাগরিক হয়েছেন।
নাগরিকত্ব নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সমালোচনায় বিদ্ধ অক্ষয় কানাডায় পাসপোর্ট পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছিলেন অনেক আগেই। এরপর ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন ২০১৯ সালে। কিন্তু মাঝে বাদ সাধে মহামারী।
গত বছর ১৫ অগাস্ট সোশাল মিডিয়ায় অক্ষয় বলেন, “মন এবং নাগরিকত্ব, দুটোই ভারতীয়। স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। জয় হিন্দ।”
অক্ষয় থাকেনও ভারতে, করও দেন জন্মভূমির দেশেই। সেখানে তিনি একের পর এক সিনেমাও করে যাচ্ছেন। তবুও কানাডিয়ান নাগরিকত্ব নেওয়ায় তাকে দীর্ঘদিন নানা সমালোচনা-বিদ্রুপ শুনতে হয়েছে।
গত বছরের শুরুতে অক্ষয় টুইটে বলেছিলেন, “আমি আমার কানাডিয়ান পাসপোর্ট পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেছি এবং সেখানকার নাগরিকত্ব পরিবর্তন হলেই...।
নির্মাতা প্রযোজক করণ জোহর একবার তার শোতে অক্ষয়কে বলেছিলেন, “তুমি কি জানো, লোকে তোমাকে কানাডা কুমার ডাকে?
অক্ষয়ের জবাব ছিল, “ভারতই আমার কাছে সবকিছু। আমি যা কিছু অর্জন করেছি, যা কিছু পেয়েছি তা এখান থেকেই। কানাডার নাগরিকত্ব নেওয়ার কারণ না জেনে মানুষ যখন কিছু বলে, তখন খারাপ লাগে।”
অক্ষয় কুমারের জন্ম পাঞ্জাবের অমৃতসরে, বেড়ে ওঠা দিল্লিতে। তার কানাডার পাসপোর্ট নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময়।
ওই নির্বাচনে বলিউডের এক সময়ের নায়িকা টুইঙ্কেল খান্না ভোট দিলেও তার স্বামী অক্ষয় কুমার ভোট দেননি। কারণ কানাডার নাগরিকত্ব নেওয়ার পর ভারতে তিনি ভোটাধিকার হারান।
কেন কানাডাকে বিকল্প দেশ হিসেবে বেছে নিতে হয়েছিল সে ব্যাখ্যায় ‘হেরা ফিরি’, ‘নমস্তে লন্ডন’, ‘টয়লেট: এক প্রেম কথা’, ‘প্যাডম্যান’ এর মত হিট সিনেমার নায়ক অক্ষয় জানান, নব্বইয়ের দশকের শুরুতে দিন এমনও গেছে যে পরপর ১৪টি সিনেমা তার ফ্লপ হয়েছে।
“তখন হতাশায় একেবারে মুষড়ে পড়েছিলাম। তখন কানাডাপ্রবাসী এক বন্ধুকে ফোন করি। বন্ধু বলল, ‘চিন্তা করিস না দোস্ত, আমি আছি। দুজনে মিলে কিছু একটা করবই’।”
অক্ষয় জানান, সেই বন্ধুই তাকে কানাডার পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে দেন। কানাডায় গিয়ে কিছুদিন কাজও করেছেন অক্ষয়। তবে কী মনে করে ফের ভারতে ফিরে ১৫ নম্বর সিনেমাটিও শেষ করেন তিনি।
“কোনো আশা ছিল না। কিন্তু সেই সিনেমাই জীবন বদলে দেয়। সুপারহিট হয়।”
ওই সিনেমার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি অক্ষয় কুমারকে। কিন্তু কানাডার সেই পাসপোর্টও তিনি হারাতে চাননি। এদিকে ভারত আবার দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয় না।
সেজন্য কম কটূ কথা শুনতে হয়নি অক্ষয়কে। সেবার লোকসভা নির্বাচনের সময় তাকে নিয়ে রীতিমতো ট্রল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেশ বা সংস্কৃতি নিয়ে কোনো কথা বললেই মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ত তার ওপর।
তবে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত অক্ষয় কুমার। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন তিনি। এই নিয়েও সমালোচনার শিকার হয়েছেন এই অভিনেতা।
পুরনো খবর
কানাডার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেবেন অক্ষয়
অক্ষয়কে আর ডাকা যাবে না 'কানাডা কুমার