সুষম সার ব্যবহারে বছরে বিশ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব: গবেষণা

সারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ।

ফসল উৎপাদনে জমিতে পরিমিত ও লাভজনক মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা।

মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘সার নীতি সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, সুষম সার ব্যবহারে শতকরা ৮ থেকে ১৪ ভাগ ফসল উৎপাদন বাড়ে এবং এতে বছরে বিশ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।

বিগত বছরগুলোতে প্রতি বছর সার বাবদ সরকার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। সারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বৃদ্ধিতে বর্তমানে এ খাতে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার।

তিনি বলেন, সরকার ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ইউরিয়ার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। আবার ডিএপির ব্যবহারও বাড়ছে। এতে করে সারের অপচয় হচ্ছে এবং সার আমাদনির খরচও বাড়ছে।

কৃষিসচিব বলেন, জমিতে এক কেজি ডিএপি সার ব্যবহার বাড়ালে ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া সার কম ব্যবহার করলে হয়। এক্ষেত্রে টিএসপি সার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। এ বার্তাটি মাঠ পর্যায়ে না পৌঁছানোর কারণে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে।

“এজন্য মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে অঞ্চল ভিত্তিক সার সুপারিশমালা ব্যবহার করে ফসল আবাদে সুষম সার ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহী করে তুলতে হবে।”

পরিমিত মাত্রায় সুষম সার ব্যবহারে গবেষণা ও ব্যবস্থাপনার উপর ‘নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ফর ডাইভারসিফাইড ক্রপিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প সরকার বাস্তবায়ন করছে বলে জানান তিনি।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অস্ট্রেলিয়ার মারডক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং প্রকল্পের প্রধান রিচার্ড ডব্লিউ বেল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সুপারিশসহ সুষম সার ব্যবহারে কৃষক কতটুকু সুফল পেতে পারে, তার একটি চিত্র তিনি তুলে ধরেন।

তার উপস্থাপনায় উঠে আসে, কৃষকরা সুষম সার ব্যবহার করলে বছরে ধান উৎপাদন বেশি হবে ৭৫ লাখ টন। সার্বিকভাবে বছরে লাভ হবে ২০ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারের সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর লুৎফুল হাসান, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিফ) এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার এবং চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।