সব ধরনের কর অব্যাহতি বন্ধ করার পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাত ১৪ শতাংশে উন্নীত করার তাগিদ দিয়ে আসছে আইএমএফ।
Published : 02 Jun 2023, 12:18 AM
প্রজ্ঞাপন জারি করে কর অব্যাহতি দেওয়ার পরিবর্তে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বাজেটে রাখার নীতিতে যাচ্ছে সরকার।
বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপনকালে নতুন এই নীতি গ্রহণের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে। ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে।
“এমন এক লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের চলমান উন্নয়নকে টেকসই করতে হবে। এ জন্য কর জিডিপির অনুপাতের উন্নতি করতে হবে।”
বর্তমানে বাংলাদেশে জিডিপির অনুপাতে করের হার ৮ শতাংশেরও কম। এই হিসাবে সারা বিশ্বে সবচেয়ে কম রাজস্ব আহরণকারী দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। এমনকি বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও সবচেয়ে কম রাজস্ব আহরণকারী দেশ।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “এমন এক পরিস্থিতিতে কর জিডিপির উন্নতির ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি অন্যতম প্রতিবন্ধকতা।”
বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত আইএমএফ দিয়েছে, তার ভেতরে কর ব্যবস্থাপনার সংস্কারের বিষয়টিও রয়েছে। সব ধরনের কর অব্যাহতি বন্ধ করার পাশাপাশি কর-জিডিপি অনুপাত ১৪ শতাংশে উন্নীত করার তাগিদ দিয়ে আসছে।
অর্থমন্ত্রী এখন বলছেন, ব্যাপকভাবে কর আহরণ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর জিডিপির অনুপাত বাড়ানোর জন্য সরকার এখন প্রজ্ঞাপন (এসআরও) জারি করে কর রেয়াত দেওয়ার নীতি থেকে সরে আসতে চায়।
তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, মেরামত, সংরক্ষণ বা পরিচালনার জন্য যেসব পণ্য বা উপাদান সংগ্রহ বা ক্রয় করা হবে সেগুলোর কর অব্যাহতি বা রেয়াতি হারের জন্য আবেদন করার পরিবর্তে বাজেটে খাতভিত্তিক একটা সম্ভাব্য বরাদ্দ রাখা যেতে পারে। কোনো খাতে কর রেয়াতের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
বাজেট বক্তৃতায় কামাল বলেন, “অপরিহার্য কোনো কারণ ব্যতীত আমরা কর অব্যাহতির এসআরও জারি করা পরিহার করব।
”এর ফলে, বাজেট ঘাটতি আশানুরূপভাবে কমে যাবে এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আসবে। অব্যাহতি প্রাপ্ত কর আদায় করা হলে, প্রকৃত কর-জিডিপি অনুপাত অনেকাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নকে অধিক মাত্রায় ত্বরান্বিত করা সম্ভব বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”