Published : 27 Jul 2022, 11:53 PM
দেশে প্রথমবারের মত এক অর্থবছরে এক হাজার কোটি বা ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি ঋণ ও সহায়তার অর্থছাড় করেছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দাতা দেশ।
বিদেশি অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ ও অনুদান মিলিয়ে এসেছে মোট ১ হাজার কোটি ৮৩ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করেছে এডিবি। এরপর রয়েছে জাপান ও বিশ্ব ব্যাংক।
২০২০-২১ অর্থবছর উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশ বাংলাদেশের অনুকূলে মোট ৭৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার অর্থছাড় করেছিল।
বুধবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইআরডিতে সদ্য যোগদানকারী সচিব শরীফা খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোভিড মহামারীর অভিঘাত কমে আসার পর গত অর্থবছরে দেশে চলমান বিশেষ করে বিদেশি অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
“এর ফলে সেসব প্রকল্পের বিপরীতে প্রতিশ্রুত বিদেশি অর্থায়নের গতিও বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করা সম্ভব হয়েছে।“
গত অর্থবছরে সরকারের মোট বৈদেশিক অর্থায়ন পাওয়ার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০ হাজার ২৫০ কোটি টাকা; ডলারের হিসাবে যা ৮২০ কোটি ডলার। এ হিসাবে বছর শেষে এর চেয়ে প্রায় ১৭৯ কোটি ডলার বেশি ছাড় হয়েছে।
ইআরডির সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, গত অর্থবছরে ছাড় হওয়া বৈদেশিক অর্থায়নের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ ছিল বাজেট সাপোর্ট হিসেবে।
কোভিড ১৯ মহামারী থেকে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখার জন্য বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে বাজেট সাপোর্টের চুক্তি ছিল।
এ দুই সংস্থা প্রতিশ্রুত বাজেট সাপোর্ট ছাড় করেছে। এ কারণে এত বিপুল বৈদেশিক অর্থায়নের অর্থ ছাড় হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইআরডির প্রতিবেদন অুনযায়ী, গত অর্থবছর এককভাবে সর্বোচ্চ ২৫৬ কোটি ৮৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে এডিবি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২০ কোটি ৭৮ লাখ ডলার ছাড় করেছে জাপান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক।
এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ একটি প্রকল্পের জন্যই রাশিয়া ছাড় করেছে প্রায় ১২২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
এছাড়া চীন সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে ছাড় করেছে ১০০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
অন্যদের মধ্যে চীনভিত্তিক এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) ছাড় করেছে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।
শীর্ষ সাত অর্থছাড়কারী সংস্থা ও দেশের মধ্যে ভারত ছাড় করেছে ৩২ কোটি ৪১ লাখ ডলার, তালিকায় অবস্থান সপ্তম।
অন্যান্য সংস্থা ও দেশ মিলে অর্থায়ন করেছে ৭০ কোটি ৯১ লাখ ডলার।
এদিকে আলোচ্য অর্থবছরে রেকর্ড ছাড় করলেও নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় আগের অর্থবছরের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।
গত অর্থবছরে সরকার নতুন করে ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় করেছে। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় তা ১৩ শতাংশ কম। আগের অর্থবছরে আরও ৯৪৪ কোটি ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল বাংলাদেশ।
এদিকে গত অর্থবছরে সরকার পুঞ্জিভূত পাওনা হিসেবে পরিশোধ করেছে ২০১ কোটি ৪১ লাখ ডলার। এর পরিমাণ আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১০ কোটি ডলার বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯১ কোটি ৪৮ লাখ ডলার পরিশোধ করেছিল সরকার।