Published : 28 Apr 2025, 11:50 PM
আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী কোম্পানি ফিচ রেটিংস বছর দুই ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের রেটিং যা কমিয়েছে তা আবার পুনর্বিবেচনা করতে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেডিট রেটিংস কোম্পানিটির দুই প্রতিনিধির সঙ্গে ঢাকায় বৈঠকে এ আহ্বান জানানোর কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান।
এদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী ও কয়েকটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফিচের ওই দুই কর্মকর্তার বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে বিফ্রিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, “সামগ্রিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও সকল বিষয়কে বিবেচনা করে বাংলাদেশকে নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে তাদের।
“আমাদের পক্ষ থেকে ফিচ রেটিংসকে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে। তখন বৈদেশিক ঋণ বা সহায়তা পাব না। যেটুকু সময় আছে তার থেকে যাতে বঞ্চিত না হয়, তাই রেটিং ফিচকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করার কথাও বলা হয়েছে।”
২০২৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশের ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ করেছিল ফিচ রেটিংস। দেশের অর্থনীতি-সম্পর্কিত পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখা হয়েছিল।
দীর্ঘমেয়াদি ঋণমানে সেসময় অবনমন করা হলেও বাংলাদেশের স্বল্পমেয়াদী ঋণমান ‘বি’ অপরিবর্তিত রাখা হয়।
এছাড়া স্থানীয় মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদী আইডিআর অবনমন করে ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’; স্থানীয় মুদ্রায় স্বল্পমেয়াদী আইডিআর বি-তে অপরিবর্তিত এবং দেশের সীমা বা কান্ট্রি সিলিং বিবি মাইনাস থেকে অবনমন করে বি প্লাস করা হয়।
একটি দেশের দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদী ঋণমান নির্ধারণের ক্ষেত্রে ফিচ এ কাঠামো ব্যবহার করে।
এর ছয় মাস আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক (বিবি মাইনাস) করেছিল ফিচ।
সাধারণত মূল্যস্ফীতি, ডলার দর ও সামগ্রিক অর্থনীতির অবস্থা বিবেচনা নিয়ে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলো ঋণমান দেয়।
বিফ্রিংয়ে মূল্যস্ফীতি, ডলারদর, নতুন নোট ও দুর্বল ব্যাংকগুলো নিয়েও কথা বলেন মুখপাত্র।
তিনি বলেন, মানুষের আবেগের কথা বিবেচনায় নিয়ে পুরনো নোট বন্ধ রেখে নতুন ছাপানোর কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
“অন্তর্বর্তী সরকার ও গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো নতুন নোট ছাপানো হয়নি। একটি ডিজাইনের নোট ছাপাতে ন্যূনতম ১৮ মাস সময় লাগে। বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগ নিয়েছে একসঙ্গে ৯ ধরনের নোট ছাপানোর।
“তবে এত পরিমাণ নোট ছাপানোর সময় ও সক্ষমতা লাগে, যেটা আমাদের নেই। তবুও মানুষের আবেগ বিবেচনা নিয়ে পুরনো নোট বন্ধ রেখে নতুন ছাপানোর কার্যক্রম শুরু করেছে।”
মে মাসে বাজারে নতুন এসব নোট আসবে বলে তুলে ধরেন তিনি।
বিফ্রিংয়ে দুর্বল ব্যাংকের অনিয়মের কারণে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মুখপাত্র। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হয়। এসব ব্যাংকের প্রকৃত চিত্র দেখার জন্য টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।