বিদেশি ঋণ ছাড় প্রথমবারের মত ৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ের উল্লম্ফনের ধারা মে মাসেও অব্যাহত ছিল; এতে প্রথমবারের মত বিদেশি অর্থায়নের পরিমাণ আট বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 05:05 PM
Updated : 23 June 2022, 05:05 PM

অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে উন্নয়ন সহযোগী ও দাতা দেশগুলো আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪৭ শতাংশ বেশি অর্থছাড় করেছে।

এ সময়ে ঋণ ও অনুদান মিলে মোট ৮৪১ কোটি ৩৪ লাখ ডলার পাওয়া গেছে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসে বৈদেশিক ঋণ ছাড় হয়েছিল ৫৭১ কোটি ৩১ লাখ ডলার।

এর আগে এক অর্থবছরে এতটা বিদেশি অর্থায়ন পাওয়া যায়নি। আর ১১ মাসেই পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার বেশি অর্থছাড় যেমন হয়েছে, তেমনি এ সময়ে আগের পুরো অর্থবছরের চেয়ে ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে।

এর আগে বিদেশি অর্থছাড়ের সর্বোচ্চ পরিমাণ ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে; ঋণ পাওয়া গিয়েছিল ৭৩৮ কোটি ডলার। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭১০ কোটি ডলার ঋণ এসেছিল, যা এতদিন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ।

বিদেশি ঋণ ছাড় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ছাড় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার আসলে সরকার কোভিড ১৯ এর কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাজেট সহায়তা পেয়েছে। ওই অর্থ ছাড় হওয়ার কারণে এবার বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের পরিমাণও বেড়ে গেছে।

“তবে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ছাড় করার যে লক্ষ্য তা ঠিক থাকবে বলে আমি মনে করি।”

চলতি অর্থবছরে এডিপির আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নের খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ৭০ হাজার ২৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার। সে হিসাবে এবার পুরো অর্থবছরে ৮১৬ কোটি ৮৬ লাখ ডলার ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। আর ১১ মাসেই এসেছে ৮৪১ কোটি ডলার।

এ বিভাগের ফরেন এইড বাজেট অ্যাকাউন্ট (ফাবা) অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ছাড় হতেই পারে। এক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নই বড় কথা। তাই যত বেশি ছাড় করা যায় ততই ভালো।

বিদেশি অর্থায়ন ছাড়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকার বিষয়ে ইআরডির এডিবি অনুবিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত সচিব পিয়ার জানান, চলতি অর্থবছর কোভিড পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ায় বৈদেশিক ঋণের ছাড় বেড়েছে।

এদিকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে আরও প্রায় ১০ শতাংশ বেশি বিদেশি অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এ সময়ে নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৫৯১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় এর পরিমাণ ছিল ৫৩৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার।

বিদেশি অর্থায়নে রেকর্ডের এ সময়ে চলতি অর্থব্ছরের মে পর্যন্ত পুঞ্জিভূত পাওনা থেকে সুদ ও আসল হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি।

মে পর্যন্ত মোট ১৮৮ কোটি ৬৭ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার।