রাশিয়া থেকে সার কেনার প্রস্তাব মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধা্জ্ঞা যখন রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কঠিন করে তুলেছে, তখন দেশটি থেকে ৩০ হাজার টন সার কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2022, 12:42 PM
Updated : 3 March 2022, 12:42 PM

বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাব অনুমোদনের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ইউক্রেইনে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে না বলে তিনি আশাবাদী, আর তখন রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানির সঙ্কটও কেটে যাবে।

রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাশের দেশ ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মস্কোর উপর। ‍

রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে বিশ্বের প্রধান আর্থিক লেনদেন পরিষেবা সুইফট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তাদের মিত্ররা।

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের প্রস্তাবে রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকনোমিক করপোরেশনের (প্রোডিনটর্গ) কাছ থেকে তৃতীয় লটে ৩০ হাজার টন এমওপি সার ১৫০ কোটি ২১ লাখ ২৩ হাজার ২২০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সারের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি করে মেটায়। আর রাশিয়া থেকে আগেও সার আমদানি করা হত।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “রাশিয়ার সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বরাবরই তাদের কাছ থেকে সার নিয়ে আসছি। এজন্য এবারও চেষ্টা করছি তাদের কাছ থেকে আনার জন্য।”

রাশিয়া যদি কোনো কারণে সার না দেয়, তাহলে বিকল্প পথ খোঁজা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু তার আগ পর্যন্ত আমরা তাদের কাছ থেকেই আনার চেষ্টা করব।”

বর্তমান পরিস্থিতি রাশিয়ার কাছ থেকে সার আমদানি সম্ভবপর হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “রাশিয়ার কাছ থেকে সুইফট সিস্টেম কেটে নেওয়া হয়েছে।

“তবে আমরা আশা করি, যুদ্ধ থেমে যাবে, খুব লম্বা সময় চলবে না। সেই হিসাবেই সেখান থেকে সার কেনার চেষ্টা করছি।

“সুইফটের কারণে যদি আমরা পেমেন্ট করতে না পারি, ইন দ্যাট কেইস, আমাদেরকে কারেন্সি সোয়াপ করে অন্য রকম ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো না কোনো একটা ব্যবস্থা বেরিয়ে আসবে।”

আর তা হলে বিকল্প উৎসের কথাও বলেন তিনি।

“তবে আমরা চাই, মানবতার স্বার্থে এই যুদ্ধ বন্ধ হোক। বিশ্বের মানুষ যেন শান্তি পায়, সেটাই আমার প্রত্যাশা,” বলেন অর্থমন্ত্রী।

বৈঠকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শুমারি কাজের জন্য ওয়ালটন ডিজিটেক ইনডাস্ট্রিজের কাছ থেকে ৪৪৭ কোটি ৭৭ লাখ ৭৭ হাজার ৬৭০ টাকায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) কাফকো বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৪৪ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কিনছে। বৈঠকে এসংক্রান্ত প্রস্তাবটিও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামে গম সংরক্ষণের জন্য একটি স্টিল সাইলো নির্মাণে ৫৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৪ টাকায় কাজ দেওয়া হয়েছে কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্য জিএসআই গ্রুপকে।