মহামারীর মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ৪২ বিলিয়ন (৪ হাজার ২০০ কোটি) ডলারের মাইলফলক ছুঁতে চলেছে।
Published : 11 Dec 2020, 12:13 AM
বৃহস্পতিবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
আগামী সপ্তাহেই অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি।
মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভর করেই রিজার্ভ স্ফীত হচ্ছে বলে জানান সিরাজুল।
“এই যে স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ পূর্ণ অবয়ব পেল, তাতেও অবদান রেখেছে এই রিজার্ভ। রিজার্ভ বেশি ছিল বলেই এখান থেকে বিদেশি কেনাকাটায় বিল সহজেই শোধ করা গেছে। রিজার্ভ কম থাকলে হয়ত সেই স্বপ্ন পূরণ হত না।”
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে উল্লম্ফন ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানিতে ধীরগতি ও বিদেশি ঋণ বৃদ্ধির কারণে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক জায়েদ বখত।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রিজার্ভে একটার পর একটা রেকর্ড কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় সরকারকে সাহস জোগাচ্ছে।”
৫ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ২৭ নভেম্বর ফের তা ৪১ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে প্রায় সাড়ে দশ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, আগামী জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের বিল পরিশোধ করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ১০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪১ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।
এই পাঁচ মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ১৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের ১ শতাংশ বেশি।
অর্থবছরের চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) বিদেশি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, এই চার মাসে ১৬৫ কোটি ১০ ডলার বিদেশি ঋণ এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে এই চার মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ১৩ শতাংশ।