ঢাকায় আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে রমনায় অফিসার্স ক্লাবে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে ব্যক্তি শ্রেণির বিভিন্ন করদাতার সঙ্গে কথা বলে তাদের এই মত পাওয়া যায়।
দুপুরে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার করদাতা সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে আয়কর দিচ্ছেন, আয়কর বিবরণি দাখিল করছেন; হাসিমুখ তাদের সেবা দিচ্ছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা।
আয়কর বিবরণি দাখিলের পর বেঙ্গল গ্রুপের কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি সবসময় মেলায় এসে রিটার্ন দাখিল করি। কারণ মেলায় এসে কর দিলে সাথে সাথে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পাওয়া যায়। কিন্তু কর অঞ্চলে গেলে অনেক রকমের প্রশ্ন ও বিড়ম্বনার পাশাপাশি প্রাপ্তিস্বীকারপত্র পেতে অনেক দেরি হয়।”
জিমএই গ্রুপের কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেলায় কর কর্মকর্তাদের কাছে যে আচরণ পাওয়া যায়, কর অফিসে গেলে সেটা পাওয়া যায় না। অথচ একই ব্যক্তি।”
কর অঞ্চল বা রাজস্ব বোর্ডে যদি করদাতারা একই রকম আচরণ পেত, তাহলে দেশের আরও অনেক মানুষ কর দিতে আগ্রহী হত, বলেন তিনি।
এবার ৯ হাজার টাকা আয়কর দিয়েছেন জানিয়ে বেসরকারি এই কর্মকর্তা বলেন, “আমি খুশি মনে নিজের গাঁটের টাকা দিয়ে যাচ্ছি। ওই টাকা দিতে এসে যদি আবার ঝামেলায় পড়তে হয়, তাহলে আমি কেন আসব?”
ট্রান্সকম গ্রুপের কর্মকর্তা মিহির বিশ্বাসও বলেন, মেলায় ঝামেলামুক্তভাবে কর দেওয়া যায় বলে তিনি কয়েক বছর ধরে মেলায়ই আসছেন।
“সরকার যদি এভাবে ঝামেলামুক্ত উপায়ে কর আহরণের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে আয়কর রিটার্ন দাখিল কয়েকগুণ বাড়বে,” বলেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৫ লাখ মানুষের আয়কর সনাক্তকারী নম্বর (টিআইএন) রয়েছে। তাদের মধ্যে আয়কর বিবরণী দাখিল করেন ২০ লাখ।
দেশের মানুষের সংখ্যা অনুপাতে করদাতার সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
আয়কর মেলাসহ নানা উদ্যোগে করদাতার সংখ্যা বাড়লেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের আচরণ নিয়ে করদাতার অভিযোগ ফুরোচ্ছে না।
রাজস্ব কর্মকর্তারা আশ্বাস দিচ্ছেন, কর দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি অটোমেটেডের কাজ চলছে, তা হয়ে গেলে করদাতাদের হয়রানি আর থাকবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (ফার্স্ট সেক্রেটারি) খন্দকার খুরশিদ কামাল মেলায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, “আমাদের গ্রাহক সেবা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ সেবা আরও বাড়ানোর জন্য আমরা এনবিআরের সকল কার্যক্রম অটোমেশন করা শুরু করছি। এ কার্যক্রম শেষ হলে সবাই একই রকম সেবা ও সুবিধা পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
গত কয়েক বছরে রাজস্ব বোর্ডের কাজের ধরনে অনেক পরিবর্তনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেখুন এখন মেলায় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।”