দেশে-বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে যাত্রীপ্রতি যে করারোপ করা হত, নতুন অর্থবছরের বাজেটে তা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
২০০৩ সালের ভ্রমণ কর আইনের সংশোধনী প্রস্তাবে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ করের নতুন হার নির্ধারণ করেছেন তিনি। নতুন প্রস্তাব ভ্রমণ কর দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে।
আকাশ পথে উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড, চীন, জাপান, হংকং, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া ও তাইওয়ান যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীপ্রতি ছয় হাজার টাকা কর দিতে হবে।
বর্তমানে এই করের পরিমাণ ২ হাজার ৫০০ টাকা।
আকাশ পথে সার্কভুক্ত কোনো দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা কর দিতে হবে। এক্ষেত্রে বর্তমান কর ৮০০ টাকা।
উল্লিখিত দেশগুলোর বাইরে আকাশ পথে অন্য কোনো দেশে গেলে ৪ হাজার টাকা কর আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা এখন ১ হাজার ৮০০ টাকা।
আকাশ পথে দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও যাত্রী প্রতি ২০০ টাকা কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আগে কোনো ভ্রমণ কর ছিল না।
স্থল পথে যে কোনো দেশে গেলে কর দিতে হবে ১ হাজার টাকা, জলপথে অন্য দেশে গেলেও একই কর দিতে হবে।
অন্য দেশে স্থলপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন ৫০০ টাকা এবং জলপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ৮০০ টাকা কর দিতে হচ্ছে।
অর্থাৎ স্থল পথে ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন কর দ্বিগুণ হল।
তবে ১২ বছর পর্যন্ত যাত্রীদের ক্ষেত্রে উল্লিখিত হারের অর্ধেক হারে কর আদায়ের প্রস্তাব করা হয়।
যাদের দিতে হবে না ভ্রমণ কর
সংশোধন প্রস্তাবে আগের মতোই কিছু ভ্রমণকারীর ক্ষেত্রে ভ্রমণ কর রেয়াত দেওয়া হয়েছে।
পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী যাত্রীরা।
হজ্ব পালনের জন্য সৌদি আরবে গমনকারী ব্যক্তি।
অন্ধ ব্যক্তি বা ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী বা স্ট্রেচার ব্যবহারকারী পঙ্গু ব্যক্তিরা।
জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনীতিক মিশনের কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বাংলাদেশে কর্মরত বিশ্ব ব্যাংক, জার্মান কারিগরি সংস্থা এবং জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বিমানে কর্তব্যরত ক্রু সদস্যরা।
বাংলাদেশের ভিসাবিহীন ট্রানজিট যাত্রী যারা ৭২ ঘণ্টার বেশি বাংলাদেশে অবস্থান করবেন না।
যে কোনো বিমান সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি বিনা ভাড়ায় অথবা হ্রাসকৃত ভাড়ায় বিদেশ যাবেন।
এর বাইরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি শ্রেণিকে এই ভ্রমণ কর থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে।
ভ্রমণ কর আদায়ের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা সংস্থা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি কোষাগারে করের টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হলে যে মূল আদায়কৃত অর্থ এবং এর ওপর মাসিক শতকরা দুই শতাংশ হারে জরিমানা আদায় করা হবে।