শাবকটিকে দেখতে সেখানে হাজার হাজার লোক জড়ো হচ্ছিল। সেখানে হাতির দলের হানা হলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল বলে মনে করছে বন বিভাগ
Published : 20 Oct 2023, 08:20 PM
শেষমেশ দলে ফেরানো গেল না হাতির শাবকটিকে। বাঁচিয়ে রাখতে তার ঠাঁই হলো কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে।
বৃহস্পতিবার রাতেই ১৫ থেকে ২০ দিন বয়সী হাতির বাচ্চাটিকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পাইরাং বন সংলগ্ন লোকালয় থেকে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়। তা জানাজানি হয় শুক্রবার।
পাহাড় থেকে পড়ে আহত বাচ্চাটি মানুষের সেবায় মোটামুটি সুস্থ হওয়ার পরও ফিরিয়ে নিচ্ছিল না হাতির পাল। দুইবার তাকে দলে ফেরাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বন বিভাগ।
এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে লোকালয়ে হাতির পালের হানার শঙ্কাকে তুলে ধরেছে বন বিভাগ। তাদের শঙ্কা, লোকালয়ে বাচ্চাটির কারণে হাতির দল ‘সেখানে হামলা করতে পারত।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বলেন, “শাবকটিকে দেখতে সেখানে দিনে রাতে হাজার হাজার লোক জড়ো হচ্ছিল।
“হাতির দল আশেপাশে মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে যে কোনো সময় উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে। তখন মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। সে সময় বড় বিপদ ঘটার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই সবদিক বিবেচনা করে আমরা হাতি শাবকটিকে সাফারি পার্কে নিয়েছি।”
চট্টগ্রামের বাঁশখালী সরল ইউনিয়নের পাহাড়ি পাইরাং বনে পাঁচদিন আগে পাহাড় থেকে নিচে পড়ে যায় শাবকটি। নিচে কাদা পানিতে আটকে ছিল সেটি।
যেদিন তাকে উদ্ধারের চেষ্টাও করেছিল পালের অন্য হাতিরা। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাওয়ার পর খবর পেয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে আসে বন বিভাগ।
বাচ্চাটির ১০৩ ডিগ্রি জ্বর ছিল। পরে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর দুই দফা রাতে হাতির পালের কাছাকাছি দিয়ে এলেও সকালে দেখা যায় তাকে ফেলে রেখেই চলে গেছে অন্যরা।
বন বিভাগের ধারণা, ‘মানুষের সংস্পর্শে আসায়’ অন্য হাতিরা বাচ্চাটিকে নিতে চায়নি।
তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অধ্যাপক মোহাম্মদ আল-আমীনের ভিন্ন মত আছে। তিনি মনে করেন, হাতির মা যে পালের মধ্যে আছে, সেই পালটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি এও মনে করেন, হাতিটি মনে করেছে বাচ্চাটি পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তাই তারা তাকে নেয়নি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাচ্চাটির শারীরিক অবস্থা এখন ভালো।”
প্রায় দুই বছর আগে টেকনাফ থেকে উদ্ধার হওয়া তিন মাস বয়সী একটি হাতি শাবককেও এভাবে সাফারি পার্কে নেওয়া হয়। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘যমুনা’। সেখানেই বড় হচ্ছে সে।