নবনির্মিত এ রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 07 Nov 2023, 06:52 PM
কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনে যে ট্রেনের মাধ্যমে নতুন এ রেলপথে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন হবে, সেই ট্রেনটিকে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন নগরীতে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নতুন ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায়, যেটি কক্সবাজারে পৌঁছায় সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা অত্যাধুনিক কোচ দিয়ে সাজানো হয়েছে ট্রেনটি।
পূর্ব রেলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ১৯টি বগি নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছি। এর মধ্যে ১৫টি বগি নিয়ে উদ্বোধনের দিন ট্রেন চলবে। বাকি চারটি বগি ব্যাকআপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
“সকালে একটি ইঞ্জিন ছেড়ে গেছে। এখন আমরা যাচ্ছি। বিকালে আরেকটি ইঞ্জিন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।”
বিকাল পৌনে ৫ টার দিকে উদ্বোধনী ট্রেনটি দোহাজারী স্টেশন অতিক্রম করে জানিয়ে সাইফুল বলেন, “আমরা ধীর গতিতে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই এসেছি। লাইন ভালো আছে। অপারেশনাল কার্যক্রম চেক করেছি। সুন্দরভাবে হচ্ছে।”
১১ নভেম্বর কক্সবাজার থেকে নবনির্মিত এই রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সেদিন লাল-সবুজ রঙে সজ্জিত এ ট্রেন কক্সবাজার স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।
এর আগে রোববার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যায় পরিদর্শন ট্রেন। তারমধ্যে নতুন হওয়া দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০২ কিলোমিটার এ রেলপথের দু’পাশের হাজার হাজার মানুষ পরিদর্শন ট্রেন দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
ওই দিন যাওয়া ওই ট্রেনটিই ছিল কক্সবাজারে পৌঁছা প্রথম কোনো ট্রেন। সেদিন সন্ধ্যায় কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক রেল স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে ট্রেনটিকে স্বাগত জানায়।
এ রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোনো রেল যোগাযোগ ছিল না। শুরুতে এটি ছিল ‘দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে মোট ১২৯ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের কথা ছিল।
পরে রামু থেকে ঘুমধুম অংশের কাজ স্থগিত করা হয়। এখন চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
মোট ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।
প্রকল্পের জন্য কক্সবাজার জেলায় ১ হাজার ৩৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে নয়টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।