Published : 28 Apr 2025, 04:21 PM
ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমের সাদায় আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রাখা একটি আটক কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ৬৮টি মৃতদেহ উদ্ধারের খবর দিয়েছে হুতি পরিচালিত আল মাসিরাহ টিভি।
সোমবার এক প্রতিবেদনে মার্কিন হামলায় ৪৭ জন আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
সাদা হুতিদের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি, এর আগেও সেখানে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়েছিল।
রোববার রাতে হামলার সময় আটক কেন্দ্রটিতে ১১৫ আফ্রিকান অভিবাসী ছিলেন বলে ইয়েমেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছে মাসিরাহ টিভি। তাদের দেওয়া এক ভিডিও ফুটেজে বিধ্বস্ত একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপে একাধিক মৃতদেহ ঢাকা দেখা গেছে, জানিয়েছে বিবিসি।
এ হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মার্কিন বাহিনীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
হুতিরা সাদায় হামলায় প্রাণহানির কথা জানানোর আগেই মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে অভিযান বিষয়ে এখন থেকে স্বল্প তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল।
‘অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার’ জন্য এমনটা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছিল তারা।
১৫ মার্চ হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮০০-র বেশি নিশানায় হামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড।
“এসব হামলায় শত শত হুতি যোদ্ধা ও অসংখ্য হুতি নেতা নিহত হয়েছে, এদের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচি দেখভাল করা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন,” বলেছে তারা।
হুতি পরিচালিত বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের গত দেড় মাসের হামলায় কয়েক ডজন বেসামরিকের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। তারা অবশ্য আগে থেকেই হুতি সদস্যদের মৃত্যুর খবর খুব একটা দিতো না।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা সম্প্রতি ইরানসমর্থিত হুতি বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। এ মাসের শুরুতে লোহিত সাগর উপকূলে অবস্থিত ইয়েমেনের এক জ্বালানি টার্মিনালে তাদের হামলায় অন্তত ৭৪ জনের মৃত্যুও হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট একাধিক জাহাজের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এ হামলা বন্ধের লক্ষ্যে ট্রাম্প মার্কিন বাহিনীকে হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে বলেন। ওয়াশিংটন বলেছে, যতক্ষণ হুতিরা লোহিত সাগরে হামলা বন্ধ না করছে ততক্ষণ ইরানসমর্থিত বাহিনীটির বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চলবে।
ইয়েমেনে ১১ বছর ধরে চলা সংঘাতে সৃষ্ট মানবিক সঙ্কট সত্ত্বেও আফ্রিকা থেকে নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এখনো দেশটিতে যাচ্ছেন। তাদের অধিকাংশের লক্ষ্য, পার্শ্ববর্তী সৌদি আরবে পাড়ি দিয়ে কাজ খুঁজে নেওয়া।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) হিসাব অনুযায়ী, কেবল গত বছরই প্রায় ৬০ হাজার ৯০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইয়েমেনে নেমেছেন।