Published : 30 Apr 2025, 06:47 PM
কর্ণফুলী নদীতে যে কিশোর ক্রিকেটারের লাশ পাওয়া গেছে তাকে সহপাঠীরা খুন করেছে বলে সন্দেহ তার বাবার।
এ ঘটনায় পুলিশ তার চার সহপাঠীকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার সকালে চান্দগাঁও থানার হামিদচর এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে আনুমানিক ১২ বছর বয়েসী রাহাত খানের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
সানোয়ারা বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাহাত চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন জুনিয়র ক্রিকেট দলে খেলত।
রাহাতের বাবা লিয়াকত আলীর অভিযোগ, প্রায় দুই মাস আগে এক সহপাঠীর সঙ্গে রাহাতের ক্লাস রুমে ‘ঝগড়া’ হয়েছিল। এর জের ধরে তাকে খুন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার স্কুলে গিয়ে বাসায় ফিরে না আসায় তারা খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন স্কুলে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে তারা হামিদচর এলাকায় রাহাতের ব্যাগের সন্ধান পান। মঙ্গলবার সারাদিন খোঁজাখুঁজির পর বুধবার সকালে নদীর চর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
সানোয়ারা বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল ৮টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত স্কুলের ক্লাস হয়। রাহাত এবং আটক তার সহপাঠীরা মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত টিফিন ছুটির আগে ক্লাসে ছিল। টিফিন ছুটিতে স্কুল থেকে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল।”
প্রধান শিক্ষক বলেন, “গতকাল দুপুর ২টার দিকে রাহাতের বাবা-মা স্কুলে এসেছিলেন ছেলের সন্ধানে। আমরা প্রথমে মনে করেছিলাম সে স্কুল মাঠে খেলছিল। কিন্তু সেখানেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাদের আমি বাসায় গিয়ে ভালো করে খুঁজতে বলেছিলাম।
“বিকাল ৩টার দিকে আমার এক সহকর্মীর কাছে অজ্ঞাত নম্বর থেকে টেলিফোন আসে। অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, স্কুলের এক ছাত্রের ব্যাগ ও জুতা হামিদচর শাহাজী মাজার সড়কে পাওয়া গেছে। স্কুল ব্যাগে থাকা বেতন রশিদ থেকে মোবাইল নম্বর পেয়ে তিনি ফোন করেছেন।”
এ খবর পরিবারকে জানানোর পর তারা সে নম্বরটিতে ফোন করে এবং সেখানে গিয়ে স্কুল ব্যাগ ও জুতা নিয়ে আসেন। পরে সিসি ক্যামেরায় তার এক সহপাঠীর সাথে বের হওয়ার দৃশ্য দেখা যায়। পুলিশ সে সহপাঠীকে থানায় নিয়ে যায়।
প্রধান শিক্ষক মনসুর বলেন, “জানতে পেরেছি ওই সহপাঠী আরও তিনজনের নাম বলেছে। তারাও স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রাতে স্কুলে পুলিশ এসে তাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে আমাদের দুই শিক্ষককেও থানায় নিয়ে যায়। পরে ওই তিন শিক্ষার্থীকেও বাসা থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
রাহাতের বাবার অভিযোগ, “যে সহপাঠীর সাথে তার ছেলে স্কুল থেকে বের হয়েছিল, তার সঙ্গেই রাহাতের ঝগড়া হয়েছিল এবং সেই পরিকল্পিতভাবে রাহাতকে খুন করে।”
চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তানভীর আহমেদ বলেছেন, “এ ঘটনায় রাহাতের বাবা মামলা করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এ ঘটনায় রাহাতের চার সহপাঠীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”