মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার এক মাস পর ওই অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোতে থাকা অক্ষত আমদানি-রপ্তানি পণ্যের চালানের মধ্যে রোববার পর্যন্ত আমদানি করা পণ্যবাহী ১২টি কন্টেইনার ডিপো থেকে বেরিয়েছে। আর ওই দিন পর্যন্ত ১৬টি কন্টেইনার ছাড় করার অনুমোদন পেয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ।
তবে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন বিএম কন্টেইনার ডিপো পুরোপুরিভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরুর সরকারি অনুমতি এখনও পায়নি।
সোমবার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক মায়নুল আহসান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন পণ্যের কন্টেইনার ছাড় করছি। তবে নতুন কোন পণ্যবাহী কন্টেইনার সেখানে আসছে না।
ইতোমধ্যে ৫০টি কন্টেইনার ছাড় করানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব অক্ষত কন্টেইনার রয়েছে সেখান থেকে রিলিজ করা হচ্ছে। প্রতিদিনই ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়ছে।
গত ৪ জুন রাতে ডিপোটিতে আগুন লাগার পর তা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে গেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়; এতে ৪৯ জনের মৃত্যু এবং শতাধিক মারাত্মকভাবে আহত হয়।
ওই দুর্ঘটনার পর দীর্ঘদিন ডিপোতে কন্টেইনার পড়ে ছিল। পরে মালিকপক্ষ ডিপো এলাকা পরিষ্কার শুরু করে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন স্থাপনা গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখনও ডিপোতে দুর্ঘটনাস্থল এলাকায় সতর্কতার জন্য বেড়া দিয়ে রাখা হয়েছে।
মহাব্যবস্থাপক মায়নুল বলেন, দুর্ঘটনার সময় ডিপোতে আমদানি-রপ্তানি ও খালি মিলিয়ে চার হাজার ৪০০ কন্টেইনার (বিশ ফুট দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে) ছিল। এর মধ্যে আগুনে ১৭৫টি কন্টেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে এখানে পণ্যবাহী ১২৫০টি এবং আড়াই হাজার খালি কন্টেইনার রয়েছে।
ওই ডিপোতে আটকে থাকা পণ্যবাহী কন্টেইনারের বেশিরভাগই তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের বলে জানা গেছে।
সাধারণত চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজ থেকে ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার খালাস করে প্রথমে বেরসকারি ডিপোগুলোতে এনে সংশ্লিষ্ট পণ্য মালিকেরা সেখানে ছাড় করিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়ে যায়।
অপরদিকে রপ্তানি পণ্য ডিপোতে এনে কন্টেইনারে ঢুকিয়ে বিদেশে পাঠানোর জন্য বন্দরে নেওয়া হয়ে থাকে। চট্টগ্রামে মোট ১৯টি বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিএম ডিপো এখন নতুন কোনো পণ্য চালান গ্রহণ করতে পারছে না। কিন্তু সেখানে আটকে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য চালান খালাস দিতে পারছে।
রোববার পর্যন্ত ডিপো থেকে ১৬টি পণ্য চালান ছাড়ের অনুমতি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে আরও দেয়া হচ্ছে।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর প্রথম সহ সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডিপোটিতে তৈরি পোশাক খাতের শত কোটি টাকার মতো পণ্য আটকে আছে। দুর্ঘটনার পর সেখানে রপ্তানির জন্য আটকে থাকা কন্টেইনার ছাড়ের জন্য ক্রেতাদের চাপ ছিল। শুরুতে ডিপো থেকে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ছাড় হয়েছে।
ইতিমধ্যে রপ্তানিপণ্যের একটি চালানও সেখান থেকে ছাড়ের অনুমতি সোমবার মিলেছে দাবি করে তিনি বলেন, এ উদ্যোগ তৈরি পোশাক খাতের জন্য ভালো খবর।
আরও পড়ুন: