চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণের দাবিতে আগামী মাসে পূর্ব রেলের সদর দপ্তর ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
Published : 14 Sep 2019, 07:03 PM
শনিবার বিকালে কালুরঘাট এলাকায় নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মৃণাল চৌধুরী।
সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটি আয়োজিত সমাবেশে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের প্রতি সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করছে, কালুরঘাটে মরণযন্ত্রণা শুরু হয়েছে কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ব্রিজের মাঝখানে কোনো যান বিকল হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
“এরপরও সরকারের কোন হেলদোল নেই। ব্রিজ মেরামত করা হয় না, কিন্তু টোল নেওয়া হচ্ছে। উল্টো বিভিন্ন সময়ে টোলের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।”
অবিলম্বে কালুরঘাট রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা না হলে বোয়ালখালী-পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এরপরও নির্মাণ কাজ শুরু না হলে সেতু অবরোধের ঘোষণাও আসবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।
সমাবেশে সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ডেঙ্গুতে মানুষ মরছে তাই সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। কালুরঘাট সেতুতে মানুষ না মরলে সরকারের টনক নড়বে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিপিবি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুন নবী, সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মছিউদ্দৌলা, অধ্যাপক কানাই লাল দাশ, বোয়ালখালী শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক শেহাবুদ্দিন সাইফু, অনুপম বড়ুয়া পারু প্রমুখ।
চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের মাধ্যম এই সেতু বন্দর নগরীর সঙ্গে কক্সবাজারের রেল যোগাযোগেরও অন্যতম সংযোগ।
১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেল সেতু। ১৯৫৮ সালে এ সেতুটি সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। সেতুটি নগরী লাগোয়া বোয়ালখালী উপজেলার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা।
দোহাজারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস ওয়েল আনা-নেওয়ার জন্যও ট্রেন চলে এই সেতু দিয়ে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ চালু হলে তারও পথ হবে এই সেতু। ৯০’র দশকে চট্টগ্রাম দোহাজারী রুটে ট্রেন চলাচল সীমিত হয়ে পড়লে কালুরঘাট সেতুতে যান চলাচলে চাপ বাড়ে।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু ভেঙে গেলে কালুরঘাট সেতু হয়ে পড়ে নগরীর সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলা ও কক্সবাজার, বান্দরবান জেলার যোগাযোগের অন্যতম রাস্তা।
স্থানীয়দের দাবি, ২০১০ সালে তৃতীয় শাহ আমানত সেতুর উদ্বোধনের আগ পর্যন্ত কালুরঘাট সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচলের কারণ সেতুটি আরও নাজুক হয়ে পড়ে। ২০০১ সালে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পর ২০০৪ ও ২০১২ সালে দুই দফায় এ সেতুটি বন্ধ রেখে সংস্কার কাজ করেছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সেতুটিতে ছোটখাট সংস্কার কাজ করে যান চলাচলের উপযোগী করে রাখা হয়।