বাল্য বিয়ে ঠেকাতে সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ এসেছে চট্টগ্রামের এক মতবিনিময় সভায়।
শনিবার নগরীর মোটেল সৈকতে বাল্য বিবাহ কমাতে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণে বিবাহ রেজিস্ট্রার ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ সভা আয়োজন করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) চট্টগ্রাম কেন্দ্র।
সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, “চট্টগ্রাম শহরে সারাদেশের নানা অঞ্চল থেকে মানুষ আসে। এখানে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে তাই জনপ্রতিনিধি, সমাজ সেবক, সমাজের সর্দারদের ভূমিকা খুব জরুরি। শুধু আইন আর বিধিমালা নিয়ে কাজ হবে না।
“আজ কর্মক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি অনেক বেশি। শিক্ষায় মেয়ে শিশুদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। সব অভিভাবক নিজের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চান। শিক্ষায় যেমন সচেতনতা এসেছে, এক্ষেত্রেও আসবে।”
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়া বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চাইলে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে হবে। চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার সকল ইউনিয়নে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটি আছে। নগরীতেও ৪১ টি ওয়ার্ড কমিটি থাকা উচিত।
“একটু আগেও ফোন এসেছে। বাকলিয়াতে একটি বাল্য বিয়ের ঘটনা নিয়ে। সাথে সাথে স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলরকে জানিয়েছি। শুক্র-শনিবার বেশি বিয়ে হয়। আমাদের কানে আসলে অবশ্যই বাল্য বিয়ে বন্ধ হবে। পরিবারকে কাউন্সিলিং করতে হবে। মূলত পরিবারই এক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রাখে।”
শহর সমাজসেবা কার্যালয়-৩ এর সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, “বাল্য বিবাহ ঠেকাতে গেলে কাউন্সিলিং এর বিকল্প নেই। কারণ তারা শিশু। একমাত্র কাজী সাহেব ও ইমাম সাহেবরা বাল্য বিবাহকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন।”
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাজী সমিতির সভাপতি কাজী ইউসুফ চৌধুরী বলেন, “বিয়ের কার্যক্রম এখন বেশি সম্প্রসারিত হয়ে গেছে। কাজীদের অফিসের পাশাপাশি কমিউনিটি সেন্টারে, মসজিদে, নিজ বাড়িতেও বিয়ে হয়। কিছু ক্ষেত্রে পাত্রী উপস্থিত থাকে না। পাত্রী দেখার সুযোগও থাকে না। অনুষ্ঠানের মধ্যে কখনও কখনও সব কাগজপত্র যাচাই করা সম্ভব হয় না। আমাদের কাজ সুষ্ঠুভাবে করার সুযোগ দিতে হবে। যদি শুধু অফিস কেন্দ্রিক বিবাহ বাধ্যবাধতামূলক করে দিত সরকার তাহলে বাল্য বিবাহ হত না। এজন্য আইন করা উচিত।”
সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফেরদৈস আহমদ।