“অন্তর্বর্তী সরকার তাদের রুটিন কাজ করবে। বন্দর কীভাবে পরিচালিত হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার।”
Published : 07 Dec 2024, 09:35 PM
চট্টগ্রাম বন্দরকে বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ‘চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন’ নামে বিএনপি সমর্থক একটি সংগঠন।
শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের নেতারা নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বেসরকারি পরিচালনায় দেওয়ার প্রক্রিয়া যে কোনো মূল্যে রুখে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
বন্দরে বিএনপি সমর্থক শ্রমিক সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ হারুন বলেন, “সিসিটি ও এনসিটিকে দুবাইভিত্তিক একটি বেসরকারি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ‘স্বৈরাচার’ শেখ হাসিনা ও তার ‘দোসর’ সালমান এফ রহমান যে রূপরেখা প্রণয়ন করেছিল সেটি বাস্তবায়নের জন্য তার ‘দোসরেরা’ তোড়জোর চালাচ্ছে। আমরা কিছুতে এ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হতে দেব না।”
এই উদ্যোগকে ‘দেশবিরোধী আত্মঘাতী’ দাবি করে তিনি বলেন, “এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য একটি গোষ্ঠী অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে। দেশের স্বার্থে চট্টগ্রাম বন্দরকে রক্ষার জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত চিরতরে পরিহার করা প্রয়োজন।
“কিছুদিন আগে বন্দর চেয়ারম্যান এক বছরের মধ্যে বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। আমরা এরও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি বাতিলের দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শ্রমিকনেতা হারুন বলেন, “বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ব্যবহার করে মুনাফা করছে। বন্দরের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন তারা নিজস্ব জনবল ব্যবহার করে রাজস্বকে আরও গতিশীল করছে না?”
বন্দরকে বেসরকারিকরণ করা অন্তর্বর্তী সরকারের ‘কাজ নয়’ মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “অন্তর্বর্তী সরকার তাদের রুটিন কাজ করবে। বন্দর কীভাবে পরিচালিত হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার। এর বাইরে বন্দরকে বেসরকারিকরণের যে কোনো প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সুষ্পষ্ট।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা, পরের অর্থবছরে ৪ হাজার ৪৭৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। চলতি অর্থবছরের প্রথম চারমাসে (অক্টোবর পর্যন্ত) আয় ১ হাজার ৬৪৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি।
মোহাম্মদ হারুন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক প্রতিষ্ঠান। দেশি-বিদেশি মাফিয়ারা চক্রান্তের মাধ্যমে বন্দরকে ‘লুটেপুটে’ খাওয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করে চলছে। এ ষড়যন্ত্রে দেশের ‘অর্থনীতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব’ জড়িত। এর বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সাড়ে ৪ হাজার শূন্য পদে লোক নিয়োগ শুরু, আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ বন্ধ, এনসিটি ও সিসিটিতে তিন শিফট ভিত্তিতে ল্যাসিং শ্রমিক বুকিং করার দাবিও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে আগামী ২২ ডিসেম্বর বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বক্তব্য রাখেন।