‘আচরণ বিধি ভঙের’ বিষয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের দিকে তেড়ে যান মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী; তার অনুসারীরা চড়াও হন সাংবাদিকদের ওপর।
Published : 30 Nov 2023, 07:49 PM
আচরণবিধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের দিকে তেড়ে যাওয়ায় এবং অনুসারীদের চড়াও হওয়ার ঘটনায় বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীকে তলব করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান তাকে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।
এ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ শাহবুদ্দিন বলেন, “সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ইনডিপেনডেন্ট টিভির ব্যুরো প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির প্রধানের কাছে পাঠানো হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানকে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে হাজির হতে বলা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোনয়ন ফরম জমা দিতে এসে ‘আচরণ বিধি ভঙের’ বিষয়ে প্রশ্ন করা মাত্র সাংবাদিকের দিকে তেড়ে যান এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। আর তার অনুসারীরা চড়াও হন সাংবাদিকদের উপর।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনায় সংসদ সদস্য ও তার অনুসারীদের মারমুখী আচরণে পড়ে গিয়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছেন কয়েকজন সংবাদকর্মী। ধস্তাধস্তিতে কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা ও ট্রাইপড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান পরে গাড়িতে উঠে গেলে তাকে থেমে কথা বলার অনুরোধ করেছিলেন সাংবাদিকরা। তখন তাদের ধাক্কা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান ক্ষমতাসীন দলের এই এমপি।
আচরণবিধি নিয়ে প্রশ্ন শুনে তেড়ে গেলেন প্রার্থী, চড়াও হল অনুসারীরা
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী যখন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হচ্ছিলেন, ইনডিপেনডেন্ট টিভির সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন?”
প্রশ্ন শুনে সঙ্গে সঙ্গে রেগে যান মোস্তাফিজুর রহমান, গালি দিয়ে ওই সাংবাদিককে হাত দিয়ে ধাক্কা দেন এবং হুমকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা এসময় অন্য সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন।
সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোস্তাফিজুর রহমান ৫ জনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। মারতে উদ্যত হন। হুমকিও দেন। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওঠার পর পেছন থেকে আবার উনার কর্মীরা ধাক্কা দিতে থাকে।"
এরপর সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে তাদের ধাক্কা দিতে দিতে দোতলা থেকে নিচে নামিয়ে আনেন এমপির অনুসারীরা। সাংবাদিকরা তখন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুরের গাড়ি থামিয়ে তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি গাড়ি চালিয়ে চলে যান। তার অনুসারীরা সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তারপর স্লোগান দিয়ে গাড়ির চারপাশে অবস্থান নিয়ে সেটিকে আদালত ভবন এলাকা পার করিয়ে দেয়।
সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
ঘটনার পর জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “এ ধরনের একটা ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আপনারা লিখিত আবেদন করুন। নির্বাচন বিধিমালা অনুসারে ব্যবস্থা নেব। বিষয়টি আমরা এখনই নির্বাচন কমিশনকে জানাচ্ছি।”