তারেক-জোবায়দার রায়ের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিএনপির ৩ সংগঠনের বিক্ষোভ

“মানুষ বিশ্বাস করে, দুর্নীত দমন কমিশন হচ্ছে বিএনপি দমন কমিশন,” বলেন বিএনপি নেতা মাহাবুবুর রহমান শামীম।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে সাজার রায়ের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে নগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিএনপির কার্যালয় সংলগ্ন নূর আহমদ সড়কে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

দুর্নীতি মামলার ওই রায়কে ‘ফরমায়েশি’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে যে কর্মসূচি দিয়েছে, তার অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, “এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে নজিরবিহীন দ্রুততম সময়ে। রাতের অন্ধকারে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এবং রায়ের দিনও আমাদের আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী আদালত ফরমায়েশি রায় দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “দুর্নীত দমন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরাসরি নিয়ন্ত্রিত। যে কারণে মানুষ বিশ্বাস করে, দুর্নীত দমন কমিশন হচ্ছে বিএনপি দমন কমিশন।

“বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারা দেশে লাখো-কোটি মানুষ এক এবং ঐক্যবদ্ধ, আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে যখন আমরা উপনীত, ঠিক তখনই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ মামলাটির ফরমায়েশি রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের নীলনকশার এই আজ্ঞাবহ রায় জনগণ মেনে নেবে না।”

ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে জরুরি অবস্থার সময় দুদকের দায়ের করা এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো.আছাদুজ্জামান।

বুধবার এ রায়ে তারেক ও জোবায়দাকে জরিমানাও করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের অপ্রদর্শিত পৌনে তিন কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক পরিবার নিয়ে গত ১৫ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলায় সাজার রায় হল।

চট্টগ্রামে বিএনপির তিন সংগঠনের সমাবেশের প্রধান বক্তা নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দিতেই তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের নীলনকশার ফরমায়েশি রায় দেওয়া হয়েছে।

“আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আইনের শাসন কায়েম হবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে, এই ফ্যাসিজমের পতন না ঘটিয়ে আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”

চট্টগ্রাম নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তির সভাপতিত্বে ও নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খানের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

অন্যদের মধ্যে নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন বক্তব্য দেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নূর আহমদ সড়ক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তিন পোলের মাথায় শেষ হয়।