চট্টগ্রামে প্রহরী খুনের ঘটনায় আরো দুইজন গ্রেপ্তার

মৃত্যুর আগের এক ভিডিওতে আজাদকে কথা বলতে দেখা যায়, যেখানে তিনি জানান, ওসমান ও রাজু নামের দুজনসহ ৭/৮ জন মিলে তার ওপর হামলা করেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 09:18 AM
Updated : 5 June 2023, 09:18 AM

চট্টগ্রামে ‘তুচ্ছ ঘটনায় বিতণ্ডার জেরে’ ছুরিকাঘাতে নিরাপত্তা প্রহরীকে খুনের ঘটনায় আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

খুলনার পাইকগাছা থেকে রোববার তাদের গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আবুল হাসনাত রাজু (৩৪) ও মো. ওসমান (৩৫)।

সোমবার নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (ডিবি- পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, হামলার পর রাজু ও ওসমানকে তার ওপর হামলার জন্য দায়ি করেছিলেন আজাদুর রহমান, যার ভিডিও তার এক পরিচিতজন মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন।

“ওসমান ও রাজু হত্যাকাণ্ডের পর খুলনা পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে সাতক্ষীরা হয়ে তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তার আগেই রোববার তাদের খুলনার পাইকগাছা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

বন্দর নগরীর হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় গত ২৮ মে ভোরে ছুরিকাঘাতে খুন হয় আজাদুর রহমান (৩৫) ।

ঘটনার পর পাহাড়তলী থানার ওসি মোস্তাফিজুর জানান, আজাদ ও তার ভাই নয়াবাজার এলাকায় নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন। রাতে খোলা জায়গায় এক যুবককে প্রস্রাব করতে নিষেধ করায় আজাদের ভাইয়ের সঙ্গে ওই যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। তাতে যোগ দেন আজাদও। ভোরে বাসায় ফেরার পথে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয় এবং হাসপাতাল নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।”

Also Read: রাতে বিতণ্ডা, ভোরে ছুরি মেরে প্রহরীকে খুন

Also Read: চট্টগ্রামে নিরাপত্তা প্রহরীকে খুনের ঘটনায় ‘জড়িত’ ৪ জন গ্রেপ্তার

এদিকে মৃত্যুর আগের এক ভিডিওতে আজাদকে কথা বলতে দেখা যায়, যেখানে তিনি জানান, ওসমান ও রাজু নামের দুজনসহ ৭/৮ জন মিলে তার ওপর হামলা করেন।

আজাদ খুনের ঘটনায় তার স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদি হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে পাহাড়তলী থানায় মামলা করেন। মামলায় ওসমান, রাজু, ফয়সাল ও রাজুর ছোট ভাই আবু তাহের মোহাম্মদ রাজীবকে আসামি করা হয়।

পরদিন রাঙামাটি থেকে রাজুর ছোট ভাই আবু তাহের রাজীবসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার আলী হোসেন জানান, প্রস্রাব করা নিয়ে আজাদের ভাইয়ের সাথে যে যুবকের কথাকাটাকাটি হয় তার নাম টমি। ভোররাতে টমি, ফাহিম, ওসমান ও রাজু মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজাদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান।

“এরপর মোটরসাইকেল থেকে নেমে টমি প্রথম ছুরিকাঘাত করে আজাদকে, পরে ফাহিমসহ অন্যরা তাকে আঘাত করে।”

তবে মামলায় টমি ও ফাহিমের নাম নেই।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলী হোসেনের ভাষ্য, গ্রেপ্তারের পর রাজু ও ওসমান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্যটি জানিয়েছে।

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের পর তারা টমির বাসায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি দুইটি রেখে আসেন এবং পরনের কাপড় পাল্টে সেগুলো ভিজিয়ে রাখেন।

রাজু ও ওসমানকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করে আনার পর তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী টমির বাসা থেকে ছুরি দুইটি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর খোকন নামের এক ব্যক্তির নাম আসে। যিনি স্থানীয় এক কাউন্সিলরের ছোট ভাই। অভিযুক্ত রাজু ও ওসমান তার অনুসারী বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, আজাদ ও তার ভাইয়ের সঙ্গে বিতণ্ডার পর টমি ও অন্যরা খোকনের বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানে তারা বৈঠক করে ভোরে হামলা চালান। হামলার পরে তারা আবার খোকনের বাসায় গিয়ে কিছু সময় অবস্থান নিয়েছিলেন।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার আলী হোসেন বলেন, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন। খোকনের খোঁজে ইতোমধ্যে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। তাকে পাওয়া যায়নি।