বিদেশি পর্যটক আকর্ষণেও কাজ চলছে বলে জানান পর্যটন প্রতিমন্ত্রী।
Published : 05 Jan 2023, 08:18 PM
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রেখে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
তিনি বলেছেন, “বিদ্যমান পর্যটন স্থানসমুহের পাশাপাশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের কুতুবদিয়া মহেশখালীর সৌন্দর্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবালসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রেখে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। প্রবাল দ্বীপও রাখতে হবে, সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্যও রাখতে হবে এবং পর্যটকও যেতে হবে। এ দুটোর সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। পর্যটক সীমিত করা মানে পর্যটন সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা।“
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত তিন দিনব্যাপী পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাহবুব আলী বলেন, “মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া আরও অনেক সুন্দর। সেখানেও পর্যটক যেতে হবে। এগুলো অনেক সুন্দর। কুতুবদিয়া আমার কাছে গোয়ার মত মনে হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের দেশে রয়েছে প্রায় ১৭০০ পর্যটন স্পট। রয়েছে বৈচিত্রময় ও সমৃদ্ধ পর্যটন পণ্য। আরও রয়েছে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতি, বহুমাত্রিক জীবনাচার ও উষ্ণ আতিথিয়েতা।
“কিন্তু এসব বিষয় দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে কমই তুলে ধরা হয়। মানুষকে কম জানানো হয়। ফলে ক্রমবর্ধমান পর্যটন শিল্প যে হারে বাড়ার কথা, তা কম হচ্ছে। তাই পাহাড়-সমতল-বনভূমি-সাগর-মহাসাগর-উপত্যকা বেষ্টিত দর্শনীয় স্থানসমূহের বৈচিত্র ও সৌন্দর্য সব মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।”
কোভিডে বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কাজ চলছে জানিয়ে মাহবুব আলী বলেন, “পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ইতোমধ্যে ‘ট্যুরিজম রিকভারি প্ল্যান’ ও এ সংশ্লিষ্ট ২০টি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে কী পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে- তা নিরূপণের জন্য ন্যাশনাল ট্যুরিজম হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করা হয়েছে।
“জাতীয় পর্যটন নীতিমালা ২০১০ যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্য প্রযু্ক্তির প্রসার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা হয়েছে। সরকারের এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণে ২০১৯ সালের ১ কোটি পর্যটক থেকে ২০২২ সালে বেড়ে তা ২ কোটিরও বেশি হয়েছে।”
বিদেশি পর্যটক আকর্ষণেও কাজ চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রাম অঞ্চলের কক্সবাজারের সাবরাং, নাফ ও সোনাদিয়াতে তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরসমূহের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, পুরনো টার্মিনাল সংস্কার, যশোর সৈয়দপুর কক্সবাজার প্রভৃতি বিমানবন্দরকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে।
“নতুন করে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এ লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সাথে সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাসমূহের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করা হচ্ছে।”
বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান ইকবাল, এয়ার অ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ, ইউএস বাংলার ম্যানেজার কামরুল ইসলাম, ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মার্কেটিং প্রধান আ্যানা মে ডিয়াল।
তিন দিনব্যাপী এ পর্যটন মেলার টাইটেল স্পন্সর নতুন এয়ারলাইন এয়ার অ্যাস্ট্রা। মেলায় বিদেশি ৬টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টি স্টল স্থান পেয়েছে।
সবার জন্য উম্মুক্ত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। আগামী ৭ জানুয়ারি এ মেলা শেষ হবে।