সাজা পরোয়ানাসহ তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Published : 03 Feb 2025, 02:49 PM
যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা।
দণ্ডিত সুমন (৩৫) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার কফিল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি সুমনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(ক)ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
“রায় ঘোষণার সময় আসামি সুমন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, প্রেমের সম্পর্কের সূত্রে সুমনের সঙ্গে ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের মনি আক্তারের বিয়ে হয় ২০১০ সালে। তবে সুমন যে আগে একাধিক বিয়ে করেছিলেন তা তিনি মনির কাছে গোপন করেছিলেন।
বিয়ের পর থেকেই সুমন তার স্ত্রীকে নির্যাতন করত অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়, মনি আক্তার হালদা ভ্যালি চা বাগানে কাজ করতেন। নিজের আয় থেকে মনি তার স্বামীকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেয়, সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও দেন।
এর পরও আরো টাকার জন্য সুমন স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন বলে মামলায় বলা হয়।
২০২১ সালের ৩০ অক্টোবর স্ত্রী মনি ও মামাত ভাই মো. টিপুকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যান সুমন। সেখানে তিনি শ্বশুর মমতাজের কাছে যৌতুক চান।
শ্বশুর অপারগতা প্রকাশ করার পর স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির পথে রওনা দেন সুমন। পথে কালীকুম্ভ এলাকায় তিনি বাইক থামিয়ে মনিকে রাস্তায় পাশে নিয়ে মুখ বেঁধে মারধর শুরু করেন।
মারধরে মনি আক্তারের হাত-পা ভেঙে যায়। ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়। সুমন মনির বাম চোখে আঘাত করে এবং মোটর সাইকেলের সাইলেন্সারে চেপে ধরে মনির বুক জখম করেন।
এরপর মনি আক্তারকে শুরুতে একজন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে এবং সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় স্বামী সুমন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ নভেম্বর হাসপাতালে মারা যান মনি আক্তার।
মৃত্যুর দুদিন পর ২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর তার ভাই আব্বাস বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
মামলা তদন্ত চলাকালে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন সুমন। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আসামি সুমনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার এই রায় দেওয়া হল।