চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
Published : 11 Dec 2024, 07:36 PM
মূল ক্যম্পাসে ফেরা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি ‘শিক্ষকদের অসংগতি’ দূর করার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা ২টার দিকে তারা ইনস্টিটিউটের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। সড়কে ব্যানার বিছিয়ে ও টায়ার জ্বালিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। ফলে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ ও ইনস্টিটিউট হাটহাজারীর মূল ক্যাম্পাসে হলেও চারুকলা ইনস্টিটিউট ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীতে। ২০২২ সালে শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়লে ওই বছরের ২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
মাঝে কয়েক দফা আন্দোলন ও দীর্ঘ বিরতির পর নতুন করে চারুকলার শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে শুরু করেছেন মঙ্গলবার থেকে। এদিন তারা চারুকলা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি- ‘আগেরবার আন্দোলনকারীদের হয়রানি বন্ধ’, শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের নানা ‘অসংগতি’ দূর করা এবং মূল ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়া।
চারুকলা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বেলা ১২টায় ক্যাম্পাসে যেতে বলেছে। সঙ্গে শিক্ষকদেরও যেতে বলেছে।
“আমরা বলেছি মৌখিক আদেশে আমরা যেতে আগ্রহী না। অতীতেও এমন হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষক গেলেও সবাই যান না। তাই এবার আমাদেরকে লিখিতভাবে বলতে হবে। সব শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও বৈঠকে থাকতে হবে। আমরা কেউ যাব বৈঠকে, আবার কেউ ক্লাস করব, সেটা হবে না।”
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগেরবার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ‘নানাভাবে হয়রানি করছেন’ শিক্ষকরা। পাশাপাশি পরীক্ষার ফলাফলেও ‘প্রভাব বিস্তার’ করছেন। চতুর্থ বর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে ১৩ মাস পর। আর মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের ফলাফলেও ‘প্রভাব বিস্তার’ করা হয়েছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ইনস্টিটিউটের পরিচালক উত্তম কুমার বড়ুয়া মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মুষ্ঠিমেয় শিক্ষার্থী এ আন্দোলন করছে। যাদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হয়েছে, তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “পরীক্ষায় যারা খারাপ করেছে, তাদের মনে অনেক ধরনের ধারণা এসেছে। এ ধরনের কিছু হয়নি।”
শ্রেণিকক্ষে ছাদ থেকে ইট-সিমেন্ট খসে পড়ায় ২০২২ সালে শিক্ষার্থীরা তাদের চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে নেওয়াসহ ২২ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকের পরও মূল ক্যাম্পাসে ফেরার আন্দোলনে অনড় ছিল শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি এক মাসের জন্য ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করে। পরে মূল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলন করার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
পুরনো খবর-
ফের আন্দোলনে চট্টগ্রাম চারুকলার শিক্ষার্থীরা
মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে ফের আন্দোলনে চবি চারুকলা
চবির চারুকলা: শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা
ফের আন্দোলনে চট্টগ্রাম চারুকলার শিক্ষার্থীরা
অনশনের হুমকি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলার শিক্ষার্থীদের