ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আইপিএলের আধিপত্য বিপজ্জনক: গিলক্রিস্ট

সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কিপার-ব্যাটসম্যান মনে করেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি এখন খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণ করছে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2022, 12:17 PM
Updated : 27 July 2022, 12:17 PM

বিশ্ব জুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দাপট ক্রমেই বাড়ছে। বিভিন্ন লিগে একের পর এক দলের মালিকানা কিনছে তারা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কিপার-ব্যাটসম্যানের মতে, আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির এই একচেটিয়া আধিপত্য কিছুটা ‘বিপজ্জনক।’

অস্ট্রেলিয়ান সংবাদ মাধ্যমের খবর, এই মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) বাদ দিয়ে আগামী জানুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন টি-টোয়েন্টি লিগে খেলবেন ডেভিড ওয়ার্নার। এর প্রেক্ষিতেই বুধবার অস্ট্রেলিয়ার এসইএন রেডিওতে ওই মন্তব্য করেন গিলক্রিস্ট।

ওয়ার্নার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়। তবে ৮ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন টেস্টের সিরিজ শেষ হওয়ার পর জানুয়ারির শেষ তিন সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়ার কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ নেই।

আইপিএলে ওয়ার্নার খেলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ভারতের জিএমআর গ্রুপের মালিকানাধীন, যারা আরব আমিরাতের লিগে একটি দলের মালিক। এই লিগে দলের মালিকানা কিনেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকপক্ষও।

আইপিএল দলের মালিকরা সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগের ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানাই কিনে নিয়েছে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (সিপিএল) নিজস্ব দল আছে কলকাতা, রাজস্থান ও পাঞ্জাবের মালিকপক্ষের।

আরব আমিরাতের লিগের সূচি বিগ ব্যাশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ৬ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হওয়ার কথা আমিরাতের টুর্নামেন্ট। বিগ ব্যাশ হবে ১৩ ডিসেম্বর থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগও শুরু হবে জানুয়ারিতে।

বিগ ব্যাশের কোনো দলের সঙ্গে এই মুহূর্তে ওয়ার্নারের চুক্তি নেই। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিযোগিতাটিতে খেলেন না বাঁহাতি এই ওপেনার। বিগ ব্যাশে প্রয়োজন না হলেও অন্য লিগে খেলার অনুমতির জন্য বোর্ডের থেকে তার অনাপত্তিপত্র লাগবে।

বিগ ব‍্যাশের সময়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের অন্যান্য লিগ খেলার অনুমতি দেশের ক্রিকেটে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন গিলক্রিস্ট।

“আমি মনে করি, তার (ওয়ার্নার) মতো একজন খেলোয়াড়কে নিজেদের প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া (ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার) জন্য বলতে গেলে বাণিজ্যিকভাবে আত্মঘাতী হবে।”

“তারা ডেভিড ওয়ার্নারকে বিবিএলে খেলতে বাধ্য করতে পারে না। আমি সেটা বুঝি। কিন্তু তাকে বা অন্য কোনো খেলোয়াড়কে ছেড়ে দেওয়া… শুধু ওয়ার্নারের কথা আলাদা করে না বলি, কারণ এখানে অন্য খেলোয়াড়রাও থাকবে, আমার ধারণা, আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বিশ্বব্যাপী যে আধিপত্য তৈরি করতে শুরু করেছে, এসব তারই অংশ।”

২০০৯ সালে ডেকান চার্জার্সের হয়ে আইপিএল শিরোপা জেতা গিলক্রিস্ট মনে করেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি এখন নিয়ন্ত্রণ করছে খেলোয়াড়দের।

“...তাদের একচেটিয়া আধিপত্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে, তারা খেলোয়াড়দের ও তাদের প্রতিভার মালিকানাও পাচ্ছে, তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে কোথায় খেলতে হবে আর খেলতে হবে না।”

অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের প্রতি ওয়ার্নারের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেখেন না গিলক্রিস্ট। তবে তরুণ খেলোয়াড়রা তার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে বলে বোর্ডকে সতর্ক করে দিলেন তিনি।

“যদি ওয়ার্নার দিন শেষে বলে, ‘দুঃখিত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট, আমি বিভিন্ন টুর্নামেন্টে আমার ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর জন্য খেলতে যাচ্ছি।’ তাহলে তাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না, এটা তার বিশেষ অধিকার। বাজার মূল্য পেতে তার যা প্রয়োজন, সেটাই সে করবে। নতুন তরুণ খেলোয়াড় যারা আসছে, তারাও যদি এই পথ অনুসরণ করে তাহলে এটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে।”