কিংবদন্তি এই কিপার-ব্যাটসম্যানের মতে, ওপেনিংয়ে হেডের সঙ্গে ওয়ার্নারের থাকা নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয় অস্ট্রেলিয়ার।
Published : 23 Aug 2023, 05:41 PM
ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে ওপেনিংয়ে নেমে চমৎকার ইনিংস উপহার দেন মিচেল মার্শ। এশিয়ার দেশটিতেই হবে ওয়ানডের আসছে বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই আলোচনা চলছে বৈশ্বিক আসরেও মার্শকে ওপেনিংয়ে দেখা যাবে কিনা সেটা নিয়ে। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট অবশ্য এমনটা চান না।
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি কিপার-ব্যাটসম্যান মনে করছেন, ওপেনিং পজিশনের জন্য অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়ার্নারই দলের সেরা পছন্দ হওয়া উচিত।
গত মার্চে ভারতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে অস্ট্রেলিয়া। ২-১ ব্যবধানে জেতা সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে কনুইয়ের চোটে খেলতে পারেননি তাদের নিয়মিত ওপেনার ওয়ার্নার।
মূলত মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও, ইনিংস শুরু করার ভার যায় মার্শের কাঁধে। দায়িত্বটি ভালোভাবেই পালন করেন তিনি। দুই ফিফটিতে সর্বোচ্চ ১৯৪ রান করে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতে নেন এই ক্রিকেটার।
প্রথম ম্যাচে ৬৫ বলে ৮১ রানের ইনিংস খেলেন মার্শ। দ্বিতীয় ম্যাচে ট্রাভিস হেডকে নিয়ে দলকে এনে দেন ১০ উইকেটের বড় জয়। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে মার্শ করেন ৩৬ বলে ৬৬ আর হেড ৩০ বলে ৫১।
তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়ার্নার ফিরলেও ছন্দে থাকা মার্শকে ওপেনিংয়েই খেলায় অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচে ৩৩ রান করেন মার্শ। আর চারে খেলা ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান।
কিন্তু ভারত বিশ্বকাপে ওয়ার্নারকে ব্যাটিং পজিশনে নিচে দেখতে চান না গিলক্রিস্ট। বিশ্বকাপ জয়ী এই অস্ট্রেলিয়ানের মতে, হেডের সঙ্গে ওয়ার্নারকে ইনিংস শুরু করতে পাঠানো নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয় টিম ম্যানেজমেন্টের।
“যদি ওয়ার্নারকে না খেলান এবং ওপেন না করান, তাহলে তাকে আপনি দলে নেবেন না। যৌক্তিকভাবেই বিশ্বকাপ দলে আছে সে এবং থাকবে একাদশেও। সে একজন বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার।”
“আমার মনে হয়, (বিশ্বকাপে) ভালো করার জন্য তার জ্ঞান ও ভারতে খেলার অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪২ ওয়ানডে খেলে ৬ হাজারের বেশি রান করেছেন ওয়ার্নার। যেখানে ১৩৮ ম্যাচেই ইনিংস শুরু করতে নেমেছেন তিনি। গিলক্রিস্ট মনে করেন, ২০১৫ বিশ্বকাপ জয়ী অভিজ্ঞ এই ওপেনারের ওপর আস্থা হারানো ঠিক হবে না অস্ট্রেলিয়ার।
ওয়ার্নারের ফর্ম নিয়ে এখন ভালোই আলোচনা হয়। সবশেষ অ্যাশেজ সিরিজে তার ব্যাট থেকে আসে কেবল দুটি ফিফটি। ভালো শুরু অবশ্য পেয়েছিলেন তিনি আরও কয়েকটি ইনিংসে, কিন্তু সেগুলোকে পারেননি বড় রানে রূপ দিতে।
বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে আছেন ওয়ার্নার। মূল দলেও তার থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তবে একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাকে নিয়ে এমন সংশয় জেগেছিল ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেও। কারণ ওই বছর আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের নেতৃত্ব হারানোর পর একাদশেও জায়গা হারান তিনি।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য তার ওপরই আস্থা রাখে অস্ট্রেলিয়া। সেটার প্রতিদানও দেন তিনি। বৈশ্বিক আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে জবাব দেন সব সমালোচনার। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন বড় অবদান, হন ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট।
গিলক্রিস্ট মনে করিয়ে দিলেন সেই কথা। তার মতে, এসব আলোচনায় খুব একটা কান দেন না ওয়ার্নার।
“কোণঠাসা হয়ে পড়া নিয়ে তার কোনো আপত্তি নেই। সম্ভবত এই অবস্থায় সে সবসময় খেলতে চায় না, তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, সে জানে।”
চেন্নাইয়ে আগামী ৮ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ঘরে তোলার অভিযান।