পাঁচটি করে উইকেট নিয়েছেন এনামুল হক জুনিয়র, সালাউদ্দিন সাকিল, রবিউল হক।
Published : 07 Nov 2022, 06:29 PM
জাতীয় লিগে পঞ্চম রাউন্ডের প্রথম দিন দেখা গেছে বোলারদের দাপট। ঢাকা ও সিলেট বিভাগের ম্যাচে পাঁচ উইকেট করে নিয়েছেন এনামুল হক ও সালাউদ্দিন সাকিল। চট্টগ্রামের বিপক্ষে পাঁচটি শিকার ধরেছেন রবিউল ইসলামও।
বোলারদের রাজত্বের দিনে অবশ্য একটি সেঞ্চুরির দেখা মিলেছে। ঢাকার মেট্রোর বিপক্ষে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১০১ রান করেন রাজশাহী বিভাগের তানজিদ হাসান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ও সিলেটে ম্যাচে সোমবার দিনই শুরু হয়ে গেছে তৃতীয় ইনিংসের খেলা! প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া ঢাকা পরে ৭৬ রানেই থামিয়ে দিয়েছে সিলেটকে।
৩৭ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঢাকা। ১ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করেছে তারা। এগিয়ে আছে ১৫০ রানে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা জয়রাজ শেখ ও মাহিদুল ইসলামের ব্যাটে ভালো শুরু পায়। ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ব্যাটিং ধসে পড়ে তারা। ৬০ রানে দাঁড়িয়েই হারায় ৪ উইকেট!
চারজনই এনামুল জুনিয়রের শিকার। পরে সুমন খানকে ফিরিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের ৩৫তম পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
ঢাকার পাঁচ ব্যাটসম্যান খুলতে পারেননি রানের খাতা। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন ওপেনার মাহিদুল।
পরে ব্যাটিংয়ে নেমে আরও বাজে অবস্থা হয় সিলেটের। সুমন ও সালাউদ্দিনের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তাদের কোনো ব্যাটসম্যান। সিলেটের তিন জন কেবল যেতে পারেন দুই অঙ্কে, যেখানে সর্বোচ্চ আল আমিন জুনিয়রের ২০।
স্রেফ ১৪ রান দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে প্রথম পাঁচ উইকেট নেন বাঁহাতি পেসার সালাউদ্দিন। আরেক পেসার সুমন ৩৮ রানে ধরেন চারটি।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা প্রথম ওভারে এবার হারিয়ে ফেলে মাহিদুলকে। শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে টানেন জয়রাজ ও আব্দুল মজিদ।
১ ছক্কা ও ৮ চারে ৬৬ বলে ৫৯ রানে খেলছেন জয়রাজ। ৩ ছক্কা ও চারটি চারে ৪৯ বলে ৪৯ রান মজিদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৪০.২ ওভারে ১১৩ (জয়রাজ ১৬, মাহিদুল ৪১, মজিদ ০, রকিবুল ০, তাইবুর ০, শুভাগত ০, নাদিফ ২৮*, সুমন ১১, নাজমুল ৬, সালাউদ্দিন ১, রিপন ০; আবু জায়েদ ৮.২-০২-৩৬-৩, তারেক ১-০-৫-০, নাবিল ১৯-৯-২৯-২, এনামুল জুনিয়র ১২-৩-৩৩-৫)
সিলেট বিভাগ ১ম ইনিংস: ১৯.৩ ওভারে ৭৬ (ইমতিয়াজ ১৪, তৌফিক ৪, আমিত ০, জাকির ৪, তারেক ০, আল আমিন ২০, গালিব ০, শাহানুর ০, এনামুল জুনিয়র ৭, নাবিল ৯, আবু জায়েদ ১২*; সুমন ৯.৩-১-৩৮-৪, সালাউদ্দিন ৭-২-১৪-৫, রিপন ৩-০-২১-০)
ঢাকা বিভাগ ২য় ইনিংস: ১৯ ওভারে ১১৩/১ (জয়রাজ ৫৯*, মাহিদুল ০, মজিদ ৪৯*; আবু জায়েদ ৬-০-৩০-১, তারেক ৫-১-২৭-০, নাবিল ৪-০-২৪-০, এনামুল জুনিয়র ৩-০-২১-০, শাহানুর ১-০-৯-০)
রবিউলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং
প্রতিপক্ষকে অল্পতে থামিয়ে দিতে রবিউল হক রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এই পেসারের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে চট্টগ্রামকে একশ ছাড়াতেই দেয়নি রংপুর।
বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে চট্টগ্রামকে ঠিক ১০০ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করছে রংপুর। ১ উইকেটে ৫৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে তারা। পিছিয়ে আছে ৪৩ রানে।
রবিউল স্রেফ ১৩ রান দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দ্বিতীয়বার নেন পাঁচ উইকেট। প্রথম পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ৪১ রান খরচায়। দুটি করে উইকেট প্রাপ্তি আরিফুল হক ও আবদুল্লাহ আল মামুনের।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম নিয়মিত বিরতিতে হারায় উইকেট। তাদের হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল দুইজন। ৩৩ রান করেন পারভেজ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন করেন ২২ রান।
পরে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুর চতুর্থ ওভারে হারায় মাহমুদুল হাসানকে। তাদেরকে টানছেন মামুন ও তানবীর হায়দার। ৩৮ রানে খেলছেন মামুন। ৮৪ বল খেলে তানবীরের রান ৯।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৫৩.৩ ওভারে ১০০ (পিনাক ৬, সৈকত ৮, পারভেজ ৩৩, শাহাদাত ৮, ইরফান ৬, শামীম ৪, সাইফ ২২, মুরাদ ০, মেহেদি ৪, মহিউল ০, রনি ৪*; রবিউল ১৩-৬-১৩-৫, মুশফিক ১০-২-২০-১, আরিফুল ৯.৩-১-২২-২, মাহমুদুল ৩-১-৯-০, আবু হাশিম ৩-১-২-০, মামুন ৯-৩-২৩-২)
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩৪ ওভারে ৫৭/১ (মামুন ৩৮*, মাহমুদুল ৩, তানবীর ৯*; সাইফ ৮-৩-১০-০, মেহেদি ১০-৩-১৫-১, সৈকত ৫-০-১০-০, মুরাদ ৭-২-৯-০, রনি ৪-১-৮-০)
তানজিদের সেঞ্চুরি
সিলেট ও বিকেএসপির মতো কক্সবাজারেও প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছে প্রথম দিনই। তবে ঢাকা মেট্রোর বোলারদের ছোবল সামলে ব্যাট হাতে ভালো জবাব দিয়েছেন তানজিদ। তার সেঞ্চুরির সুবাদে আড়াইশ ছাড়িয়েছে রাজশাহীর রান।
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে রাজশাহীকে ২৫২ রানে থামিয়ে ব্যাটিং করছে মেট্রো। কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে তারা। এখনও পিছিয়ে ২৪২ রানে।
রাজশাহীর হয়ে ৭ ছক্কা ও ৬ চারে ১৩৭ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন তানজিদ।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি জুনায়েদ সিদ্দিক। জহুরুল ইসলাম ও তানজিদ মিলে এরপর দলকে টানেন। ৫ চারে ৪৫ রান করা জহুরুলকে ফেরানোর পর আবু হায়দার রনি গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ দেন সাব্বির রহমানকে।
এরপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৯৬ রানের জুটি গড়েন তানজিদ। তাকে বিদায় করেন বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসান। এরপর একের পর এক উইকেট হারিয়ে দ্রুতই গুটিয়ে যায় রাজশাহীর ইনিংস। ৪৮ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় তারা।
অভিজ্ঞ মুশফিক ২ চারে করেন ৪৩ রান। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন সানজামুল ইসলাম।
মেট্রোর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন রকিবুল। তিনটি করে প্রাপ্তি আবু হায়দার ও শরিফুল্লাহর।
দিনের শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ ওভার খেলে দলকে কোনো বিপদে পড়তে দেননি মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও রাকিন আহমেদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: ৮২.২ ওভারে ২৫২ (জহুরুল ৪৫, জুনায়েদ ৭, তানজিদ ১০১, সাব্বির ০, মুশফিক ৪৩, প্রিতম ০, ফরহাদ ০, সানজামুল ৪০*, শফিকুল ১, পায়েল ০, নাহিদ ০; আবু হায়দার ১১.২-২-৩১-৩, শরিফউল্লাহ ৩৩-৮-৯২-৩, অনিক ১০-২-২৫-০, স্বাধিন ৯-১-৩২-০, রকিবুল ১৯-৫-৫৯-৪)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৩ ওভারে ১০/০ (নাঈম ১০*, রাকিন ০*; নাহিদ ১-০-৮৮-০, সানজামুল ১-১-০-০, শফিকুল ১-০-২-০)
শক্ত ভিত গড়ার পথে খুলনা
ইনিংসে ফিফটি নেই একটিও। তবে সবার টুকটাক অবদানে শক্ত ভিত গড়ার পথে খুলনা বিভাগ। এরই মধ্যে আড়াইশ ছাড়িয়ে গেছে তাদের পুঁজি।
রাজশাহীর শহিদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে বরিশালের বিভাগের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ২৬৪ রান করে প্রথম দিন শেষ করেছে খুলনা। জাতীয় লিগের চলতি রাউন্ডে প্রথম ইনিংস শেষ হয়নি কেবল এই ম্যাচেই।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খুলনা চতুর্থ বলেই হারায় অমিত মজুমদারকে। তাদের পরের সাত ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন। ছোট তবে কার্যকর জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নেন তারা।
খুলনার ইনিংসে ত্রিশের ঘরে পা রাখেন ৬ জন। সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন হাসানুজ্জামান। শেষ দিকে ৪০ রান নিয়ে খেলছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি। তার সঙ্গে উইকেটে আছেন টিপু সুলতান।
বরিশালের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন কামরুল ইসলাম ও সোহাগ গাজী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা বিভাগ ১ম ইনিসং: ৯০ ওভারে ২৬৪/৭ (অমিত ০, হাসান ৪৫, ইমরুল ২০, নাহিদুল ৪১, জাওয়াদ ৪০, জিয়াউর ৩৬, মৃত্যুঞ্জয় ৪০*, টিপু ১*; কামরুল রাব্বি ২১-৩-৬৪-৩, রুয়েল ১৩-৩-৪৭-০, সালমান ২-০-৯-০, তানভির ১৯-৪-৫৩-০, সোহাদ ১৬-৫-৪৮-৩, মইন ১৪-৩-২২-১, ইফতেখার ৫-১-১৩-০)