ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম রাউন্ডে গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ৬ উইকেটে হারাল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
Published : 11 Mar 2024, 03:11 PM
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ভালো শুরু এনে দিলেন আশিকুর রহমান ও ইফতেখার হোসেন। বাঁহাতি স্পিনে উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন টিপু সুলতান। পরে তার দারুণ বোলিংয়ে বেশি দূর যেতে পারল না গাজী টায়ার্স। ছোট লক্ষ্যে অনায়াস জয় পেল শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে সোমবার গাজী টায়ার্সের বিপক্ষে ৬ উইকেটে জিতেছে শেখ জামাল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী দিনে ১৬৮ রানের লক্ষ্য ১১০ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়ে ফেলেছেন নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দল।
গাজী টায়ার্সের ইনিংস একাই টেনেছেন আশিকুর। সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা ওপেনার শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে করেছেন ৮৯ রান।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের ‘ক্যারিং দা ব্যাট থ্রু আ কমপ্লিটেড ইনিংস'-এর স্রেফ দ্বিতীয় ঘটনা এটি। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া ম্যাচে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন জাভেদ ওমর। প্রায় ২৩ বছর পর তার সঙ্গী হলেন ১৮ বছর বয়সী আশিকুর।
চার ম্যাচের ছোট্ট লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে তার দ্বিতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এটি।
আশিকুরের কীর্তি ছাপিয়ে শেখ জামালের নায়ক টিপু। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১০ ওভারে স্রেফ ৩০ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। ২৫ বছর বয়সী এই স্পিনারের হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। গত প্রিমিয়ার লিগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ৪৭ রানে ৪ উইকেট ছিল তার আগের সেরা।
রান তাড়ায় শেখ জামালের শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। মারুফ মৃধার প্রথম ওভারে শূন্য রানে বোল্ড হন সৈকত আলি। ড্রাইভ খেলতে গিয়ে বল স্টাম্পে টেনে আনেন সৈকত। চতুর্থ ওভারে রবিউল ইসলামকে ফেরান তৌফিক আহমেদ।
তৃতীয় উইকেটে ৬৫ রানের জুটি গড়েন সাইফ হাসান ও ফজলে মাহমুদ। দুজনকেই আউট করেন যুব বিশ্বকাপ মাতানো বাঁহাতি পেসার মারুফ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারেন সাইফ। ৬৩ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৪৫ রান করেন শেখ জামাল ওপেনার।
এক ওভার পর হালকা লাফিয়ে ওঠা বল অফ সাইডে খেলার চেষ্টায় ফজলে মাহমুদের ব্যাটের ওপরের দিকে লাগে। উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন গাজী মোহাম্মদ তাহজিবুল ইসলাম।
এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি সোহান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি। দুজনের ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে অনায়াসেই ম্যাচ জেতে শেখ জামাল। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩২ বলে ৪৪ রান করেন ইয়াসির। ৪ চারে ৩৯ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলেন সোহান।
ম্যাচের প্রথমভাগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৬ রান যোগ করেন আশিকুর ও ইফতেখার। ২১তম ওভারে টিপুর বলে বোল্ড হন ৩১ রান করা ইফতেখার। এরপর আর কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাননি আশিকুর।
একার লড়াইয়ে দলকে প্রিমিয়ার লিগের নবাগত দলটিকে দেড়শ পার করান আশিকুর। ১৩৩ বলে ৪ চার ও ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। আশিকুর ও ইফতেখার ছাড়া গাজী টায়ার্সের কোনো ব্যাটসম্যান ১০ রানের বেশি করতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: ৪৭.৫ ওভারে ১৬৭ (আশিকুর ৮৯*, ইফতেখার হোসেন ৩১, আশিক ৯, জুবারুল ১০, তাহজিবুল ৪, সাঈদ ১, শামিম ৭, ইফতেখার সাজ্জাদ ০, আরিফুল ২, তৌফিক ৩, মারুফ ০; শফিকুল ৭-০-২১-১, রিপন ৮.৫-২-২৯-২ আরিফ ১০-০-৪৬-১, রবিউল ৪-০-১৯-০, টিপু ১০-০-৩০-৪, তাইবুর ৪-০-১১-০, সাইফ ৪-২-৭-১)
শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব: ৩১.৪ ওভারে ১৬৮/৪ (সাইফ ৪৫, সৈকত ০, রবিউল ৩, ফজলে মাহমুদ ৩১, সোহান ৩১*, ইয়াসির ৪৪*; মারুফ ৮-০-৪৭-৩, তৌফিক ৪.৪-০-৪৬-১, ইফতেখার সাজ্জাদ ৫-০-১৪-০, শামিম ৭-১-৩২-০, আরিদুল ৬-০-১৯-০, ইফতেখার হোসেন ১-০-৯-০)
ফল: শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: টিপু সুলতান