বড় ইনিংস খেলার ফাঁকা বুলি না আউরে মাঠে নিজেদের কথার প্রতিফলন দেখানোর তাগিদ অনুভব করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
Published : 11 Nov 2023, 08:04 PM
পুরো বিশ্বকাপে টপ-অর্ডারের ব্যর্থতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ। ত্রিশ পেরিয়েও পঞ্চাশের আগে থেমেছেন প্রথম তিন ব্যাটসম্যান। এর মাশুল গুনেছে দল। ভালো কিছুর সম্ভাবনা জাগিয়েও তিনশ পার হয়েই থেমেছে বাংলাদেশ।
বড় পরাজয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করে এবার সামনের দিনগুলোর জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত হতে চান না নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঠেও নিজেদের কথার বাস্তবায়নের তাগিদটা টের পাচ্ছেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
হতাশায় মোড়া আসরে স্রেফ দুটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচেই রান তাড়ার কাজটা সহজ করেছেন টপ-অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা। বাকি সময়ে ধারাবাহিকতার পরিচয় দিতে পারেননি কেউই। ভালো শুরু পেয়েও বারবার ছুড়ে এসেছেন নিজেদের উইকেট।
পুরো আসরে ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে মোটে ৮টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেঞ্চুরি হয়নি একটিও। সর্বোচ্চ ৯০ রানেরি ইনিংস খেলেছেন শান্ত। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরি করেছেন মাহমুদউল্লাহ, ছয় নম্বরে নেমে।
ওপরের দিকের ব্যাটসম্যানদের রান না পাওয়া, বড় ইনিংস খেলতে না পারার খেসারত একের পর এক পরাজয়ে দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। যা স্বীকার করে নিয়েছেন শেষ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া শান্তও।
বিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ পার করে শেষ ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়মিত সেঞ্চুরি করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
“অবশ্যই (ওপরের দিকে কেউ সেঞ্চুরি করতে ভালো হতো)। আমার মনে হয় (তানজিদ) তামিম ভালো শুরু পেয়েছিল... লিটন, আমিও পেয়েছি, আজকে যেমন পেয়েছিলাম। আমরা সবাই যে ম্যাচগুলোতে ভালো শুরু করেছিলাম, সেগুলো বড় হয়নি। এটাই লক্ষ্য থাকবে যাতে সামনে বড় করতে পারি।”
“আমরা বারবারই মুখে বলি, তবে এখন এটা করে দেখানোটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা করে দেখাতে হলে কেন প্র্যাকটিস দরকার, কি রকম উইকেটে খেলা দরকার, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। আশা করব এই অভিজ্ঞতা আমাদের ভালোভাবে কাজে দেবে।”
অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল না থাকায় এবারের বিশ্বকাপে বড় দায়িত্ব ছিল লিটন কুমার দাসের কাঁধে। নয় ম্যাচ মিলিয়ে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮৪ রান করেছেন তিনি, গড়েছেন এক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
তবে তার ব্যাটিংয়ে ছিল ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব। ছয় ম্যাচে ২০ পেরোলেও তিনি ফিফটি করেছেন স্রেফ দুটি। থিতু হয়েও আলগা শটে উইকেট বিলিয়ে এসেছেন প্রায় প্রতি ম্যাচে। অন্য প্রান্তে তানজিদ হাসানও ভালো করতে না পারায় ওপেনিংয়ের সমস্যা ফুটে উঠেছে আরও প্রকটভাবে।
ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস খেলতে না পারার আক্ষেপ থাকলেও, এককভাবে কোনো ক্রিকেটারকে দায় দিতে চান না শান্ত।
“ব্যক্তিগতভাবে কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলতে আমি পছন্দ করি না। আমার মনে হয়, দল হিসেবেই আমরা ভালো করিনি। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের সুযোগ বেশি ছিল। ওপরের থেকে যদি স্কোরটা বড় হতো, তাহলে মনে হয় দল আরও ভালো অবস্থানে থাকত। আশা করব, সামনে ইনিংসগুলো বড় হবে। তবে ব্যক্তিগতভাবে কাউকে নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”