তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ।
Published : 11 Nov 2023, 09:30 AM
হতাশার বিশ্বকাপে শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানকে উড়িয়ে উড়ন্ত শুরু করলেও পরের যাত্রা আর সুখকর হয়নি তাদের। পরের সাত ম্যাচে জয় স্রেফ একটি। এবার জয় দিয়ে আসর শেষ করার আশা নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসদের।
পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নামছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় শুরু হবে খেলা।
এই ম্যাচ জিতলে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। এমনকি অল্প ব্যবধানে হারলেও বেঁচে থাকবে আশা। তবে জয় দিয়েই যাত্রা শেষ করতে চান প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে।
এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ভালো নয়। কার্ডিফে ২০০৫ সালে একমাত্র জয়। এর আগে-পরে শুধুই হতাশা। সবশেষ ২০১৯ বিশ্বকাপে ৩৮১ রানের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে ৪৮ রানে জেতে অস্ট্রেলিয়া।
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে দীর্ঘ অপেক্ষা ঘোচানোর অভিযানে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে দলকে নেতৃত্ব দেবেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচে কয়েনভাগ্য পাশে পেলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।
ভালো উইকেটে সকালের দিকে বোলিংয়ে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশা কামিন্সের। শান্ত জানিয়েছে, টস জিতলে তিনি আগে ব্যাটিংই নিতেন। তাই টস হেরে যাওয়ায় কোনো সমস্য নেই তার।
বিশ্বকাপে আগের আট ম্যাচের একাদশে তিন পেসার নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে তারা নামছে দুই পেসার নিয়ে। পেস বিভাগে থাকছেন তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
একাদশে মোট পরিবর্তন করা হয়েছে তিনটি। আঙুলের চোটে আগেই ছিটকে গেছেন সাকিব আল হাসান। এছাড়া বাইরে রাখা হয়েছে শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসানকে। তাদের জায়গায় এসেছেন নাসুম আহমেদ, শেখ মেহেদি হাসান ও মুস্তাফিজ।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাওহিদ হৃদয়, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচের একাদশে জোড়া পরিবর্তন করেছে অস্ট্রেলিয়া। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চোটের ধকল সামলে ইতিহাসগড়া ইনিংস খেলা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে রাখা হয়েছে বাইরে। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মিচেল স্টার্ক।
দলে ঢুকেছেন স্টিভেন স্মিথ ও শন অ্যাবট।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ: ডেভিড ওয়ার্নার, ট্র্যাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, জশ ইংলিস, মার্কাস স্টয়নিস, শন অ্যাবট, প্যাট কামিন্স, অ্যাডাম জ্যাম্পা, জশ হেইজেলউড।
মেডেন দিয়ে শুরুর পর একটু একটু করে বাড়ছে রান। জশ হেইজেলউড ও প্যাট কামিন্সের বোলিং ধৈর্য নিয়ে সামাল দিচ্ছেন লিটন দাস ও তানজিদ হাসান।
৫ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ২০। বাউন্ডারি কেবল একটি, এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে।
১৭ বলে এক চারে ৮ রানে খেলছেন লিটন। ১৩ বলে তানজিদের রান ৫। অতিরিক্ত থেকে এসেছে ৭ রান।
বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান। সাবধানী শুরুর পর ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়াচ্ছেন তারা। তাদের জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়েছে ৫০ বলে।
আসরে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির এটি কেবল দ্বিতীয় পঞ্চাশ। এই মাঠেই ভারতের বিপক্ষে ৯৩ রান যোগ করেছিলেন দুই ওপেনার।
৯ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৫৪। ২৭ বলে চারটি চারে ২৪ রানে ব্যাট করছেন তানজিদ। ২৮ বলে চারটি চারে ২০ রানে ব্যাট করছেন লিটন।
পাওয়ার প্লেতে চার পেসার ব্যবহার করেও বাংলাদেশের শুরুর জুটি ভাঙতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৬২। আসরে কেবল দ্বিতীয় কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লে কাটিয়ে দিল তারা। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটে করেছিল ৬৩ রান।
দারুণ আস্থার সঙ্গে খেলছেন তানজিদ হাসান ও লিটন দাস। তাদের শুরুটা ছিল সাবধানী।মেডেন দিয়ে শুরুর পর ৫ ওভারে তারা করতে পেরেছিলেন কেবল ২০ রান। কঠিন সময় পার করে দেওয়ার পর থেকে খেলছেন দারুণ সব শট। তাদের বাড়ছে রানের গতি। পরের ৫ ওভারে এসেছে ৪২ রান।
৩০ বলে চারটি চারে ২৮ রানে ব্যাট করছেন তানজিদ। ৩১ বলে চারটি চারে লিটন খেলছেন ২৪ রানে।
ভালো শুরুটা বড় করতে পারলেন না তানজিদ হাসান। অনেকটা শরীর তাক করে করা বাউন্সার লেগে ঘুরানোর চেষ্টায় বোলার শন অ্যাবটকে ফিরতি ক্যাচ দিলেন তিনি।
কঠিন সময় পার করে দিয়ে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন তানজিদ। কিন্তু খুব একটা সফল হলেন না। শর্ট বল আসছে বুঝতে পেরেছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। শরীর বরাবর আসা বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে ওঠে যায় সহজ ক্যাচ। ভাঙে ৬৯ বল স্থায়ী ৭৬ রানের জুটি।
১২ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৮৩। ৩৬ বলে ৩১ রানে খেলছেন লিটন দাস। ক্রিজে যাওয়ার পরপরই একটি বাউন্ডারি মারা নাজমুল হোসেন শান্তর রান ৩ বলে ৬।
নাজমুল হোসেন শান্তর বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাডাম জ্যাম্পার বল ছুঁয়ে গিয়েছিল বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের গ্লাভস।
ত্রয়োদশ ওভারে প্রথম আক্রমণে আসেন জ্যাম্পা। টুর্নামেন্টে দারুণ সময় কাটানো লেগ স্পিনারের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন শান্ত। ঠিক মতো খেলতে পারেননি তিনি, বল লাগে প্যাডে।
আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। রিপ্লেতে দেখা যায়, প্যাডে লাগার আগে গ্লাভস ছুঁয়ে গিয়েছিল বল। নষ্ট হয় অস্ট্রেলিয়ার একটি রিভিউ।
১৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৮৪।
অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন লিটন দাস। মিডউইকেটে একটুর জন্য ক্যাচ ধরতে পারেননি প্যাট কামিন্স।
লেগ স্পিনারের বলে ঠিক মতো ড্রাইভ করতে পারেননি লিটন। টাইমিংয়ে গড়বড় করে দিয়ে বসেন ক্যাচ। মিডউইকেট থেকে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পান কামিন্স কিন্তু মুঠোয় রাখতে পারেননি।
সে সময় ৩৪ রানে ছিলেন লিটন।
১৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৯৯।
নবম ওভারে পঞ্চাশ ছোঁয়া বাংলাদেশ রানের গতি বাড়িয়ে তিন অঙ্কে গেছে ষোড়শ ওভারে।
১৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ১০৫।
৪৪ বলে পাঁচ চারে ৩৬ রানে খেলছেন লিটন দাস। ১৯ বলে তিন চারে নাজমুল হোসেন শান্তর রান ১৯।
তানজিদের বিদায়ের পর রানের গতি পড়ে যেতে দেননি শান্ত। শুরু থেকে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় আছেন তিনি। বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন লিটন। তাদের জুটিতে রান আসছে প্রায় বলে বলে।
অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে ভুগছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। লেগ স্পিনারের প্রতিটি ওভারে কিছু না কিছু হচ্ছে। আগরে দুই ওভারে সম্ভাবনা জাগিয়েও উইকেট পাননি। এবার তিনি পেলেন লিটন দাসের দামী উইকেট।
জ্যাম্পার লেংথ বলে তুলে মারেন লিটন। শটে খুব একটা জোর ছিল না তাই পার করতে পারেননি সীমানা। অনেকটা ক্যাচিং অনুশীলন করান মার্নাস লাবুশেনকে। লং অনে কোনো ভুল করেননি তিনি। ভাঙে ৩২ বল স্থায়ী ৩০ রানের জুটি।
৪৫ বলে পাঁচ চারে ৩৬ রান করেন লিটন।
১৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০৬। ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গী তাওহিদ হৃদয়।
লিটন দাসের বিদায়ের পর ক্রিজে যাওয়া তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে দ্রুত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। প্রমোশন পেয়ে চারে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েছেন তিনি, ৫০ বলে।
জুটিতে অগ্রণী হৃদয়ই। এই সময়ে ২৫ বলে তিনি করেছেন ৩৪ রান। মেরেছেন দুটি করে ছক্কা ও চার। ক্রিজে যাওয়ার একটু পরেই দারুণ এক শটে ছক্কা মারেন অ্যাডাম জ্যাম্পাকে। পরে ট্র্যাভিস হেডের বলে তার ছক্কাতেই পঞ্চাশ পূর্ণ হয় জুটির রান।
২৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১৬১।
জমে যাওয়া জুটি ভাঙল নিজেদের দোষেই। অসম্ভব একটি দুই রানের চেষ্টায় অহেতুক রান আউট হলে নাজমুল হোসেন শান্ত।
শন অ্যাবটের শর্ট বল লেগে ঘুরান শান্ত। সেখান থেকে দুই রানের কোনো সুযোগই ছিল না। মার্নাস লাবুশেনের থ্রো ধরে কিপার বেলস ফেলে দেওয়ার সময় অনেক দূরে ছিলেন শান্ত। ভাঙে ৬৬ বল স্থায়ী ৬৩ রানের জুটি।
৫৭ বলে ছয় চারে ৪৫ রান করেন শান্ত।
২৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৭০। ক্রিজে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।
নাজমুল হোসেন শান্তর রান আউটের পর কমে যেতে বসেছিল রান রেট। সেটা ঠিক করে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। মিচেল মার্শের বলে তার দুই ছক্কায় ৩২ ওভারে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করল দুইশর সীমানা।
ষোড়শ ওভারে একশ স্পর্শ করেছিল বাংলাদেশের রান। প্রায় একই গতিতে এগিয়ে গিয়ে হয়ে গেল দুইশ রানও।
৩২ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২১০। ১৫ বলে তিন ছক্কায় ২৪ রানে ব্যাট করছেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৩ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে হৃদয়ের রান ৪১।
আরেকটি ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ রানের চেষ্টার চড়া মাশুল গুনল বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর পর রান আউট হয়ে ফিরে গেলেন মাহমুদউল্লাহ।
নিজের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে জমে গিয়েছিল তার জুটি। সেটি ভাঙল অহেতুক রান আউটে।
জশ হেইজেলউডের বল কাভারের দিকে পাঠিয়েই রানের জন্য ছুটেন হৃদয়। সাড়া দেন মাহমুদউল্লাহও। তবে বলের গতি ছিল বেশ, ফিল্ডার মার্নাস লাবুশেনও এগিয়ে যান দ্রুত। তার আন্ডার আর্ম থ্রো বেলস ফেলে দেওয়ার সময় অনেক দূরে ছিলেন মাহমুদল্লাহ। ঝাঁপ দিলেও ধারে কাছে যেতে পারেননি তিনি। ভাঙে ৪৮ বল স্থায়ী ৪৪ রানের জুটি।
২৮ বলে তিন ছক্কা ও একটি চারে ৩২ রান করেন আসরে বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ।
৩৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ২১৪। ক্রিজে হৃদয়ের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
চারে নেমে বাংলাদেশকে টানছেন তাওহিদ হৃদয়। ৬১ বলে বিশ্বকাপে নিজেদের ফিফটি স্পর্শ করেছেন এই তরুণ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে দুটি করে ছক্কা ও চার। ইনিংসের শুরুর দিকেই বাউন্ডারি চারটি মেরেছিলেন তিনি। আপাতত এক-দুই রান নিয়েই খেলছেন তিনি।
৩৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ২২৮।
রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায় ফিরলেন মুশফিকুর রহিম। অ্যাডাম জ্যাম্পাকে সজোরে মারতে গিয়ে ধরা পড়লেন মিডউইকেটে।
লেগ স্পিনারের শর্ট বলে পুল করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু টাইমিং করতে পারেননি। সহজ ক্যাচ নেন প্যাট কামিন্স। ভাঙে ৩৯ বল স্থায়ী ৩৭ রানের জুটি।
২৪ বলে এক ছক্কায় ২১ রান করেন মুশফিক।
৪৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২৫৭। ক্রিজে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।
ফুলটস বল কাজে লাগাতে পারলেন না তাওহিদ হৃদয়। ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়লেন তিনি।
শেষ দিকে প্রয়োজন বড় শট। তেমন শট খেলার বলই পেয়েছিলেন হৃদয়। কিন্তু একটু এগিয়ে এসে প্রায় কোমড় উচ্চতার বলে টাইমিং করতে পারেননি। মাঠে দারুণ সময় কাটানো মার্নাস লাবুশেন ডিপ মিউইকেটে নেন সহজ ক্যাচ। ভাঙে ২৬ বল স্থায়ী ৩৫ রানের জুটি।
পরের বলেই রান আউট হয়ে যেতে পারতেন নাসুম আহমেদ। কিন্তু এবার সরাসরি থ্রো স্টাম্পে রাখতে পারেননি এর আগে দুটি রান আউট করা লাবুশেন।
৭৯ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৭৪ রান করেন হৃদয়।
৪৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ২৯০। ক্রিজে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী নাসুম।
হাতে যথেষ্ট উইকেট থাকলেও শেষ দিকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারল না বাংলাদেশ। শেষ ওভারে তুলতে পারল কেবল ৩ রান, হারাল দুটি উইকেট।
শন অ্যাবটের ওভারে প্রথম বলে শর্ট স্লোয়ার বলে কাভারে ধরা পড়েন মিরাজ। চারটি চারে ২০ বলে তিনি করেন ২৯ রান।
এক বল পর রান আউট হয়ে যান নাসুম আহমেদ। ১১ বলে তার রান ৭। বাংলাদেশ ইনিংসে তৃতীয় রান আউট এটি।
৫০ ওভারে ৮ উইকেটে বাংলাদেশ করে ৩০৬ রান। আসরে এই প্রথম তিনশ রানের সীমানা স্পর্শ করল তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০৬/৮ (তানজিদ ৩৬, লিটন ৩৬, শান্ত ৪৫, হৃদয় ৭৪, মাহমুদউল্লাহ ৩২, মুশফিক ২১, মিরাজ ২৯, নাসুম ৭, মেহেদি ২*, তাসকিন ০*; হেইজেলউড ৭-১-২১-০, কামিন্স ৮-০-৫৬-০, অ্যাবট ১০-০-৬১-২, মার্শ ৪-০-৪৮-০, হেড ৬-০-৩৩-০, স্টয়নিস ৫-০-৪৫-১)
দুই নম্বরে থেকে এই পর্ব শেষ করতে ১৭.২ ওভারের মধ্যে জিততে হবে অস্ট্রেলিয়ার। তাহলে তাদের রান রেট চলে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকার উপরে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রান রেট চলে যাবে শ্রীলঙ্কার নিচে। এমনকি ২২.৪ ওভারের মধ্যে হারলেও লঙ্কানদের নিচে থাকবে শান্ত-লিটনদের রেট।
আসরে নতুন বলে খুব একটা সাফল্য নেই বাংলাদেশ। প্রথম ১০ ওভারে সবচেয়ে কম উইকেট তাদেরই। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুরুটা ভালো হলো, তৃতীয় ওভারেই মিলল সাফল্য। তাসকিন আহমেদের চমৎকার এক ডেলিভারিতে ফিরে গেলেন ট্র্যাভিস হেড।
অফ স্টাম্পের বাইরের চ্যানেল ধরে বোলিং করে যাচ্ছেন তাসকিন। আগের বলে বাউন্ডারি হজম করলেও লাইন ও লেংথ পাল্টাননি। আরেকটি ব্যাক অব দা লেংথ ডেলিভারি লেগে ঘুরানোর চেষ্টায় সফল হলেন না হেড। ব্যাটের কানায় লেগে বল গেল স্টাম্পে।
৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ১ উইকেটে ১২। ক্রিজে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গী মিচেল মার্শ।
তৃতীয় ওভারে ট্র্যাভিস হেডকে বোল্ড করে প্রথম আঘাত হানলেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম দশ ওভারে এরপর আর কোনো সাফল্য পেল না বাংলাদেশ। পাল্টা আক্রমণে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে দিলেন মিচেল মার্শ।
১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৫৮ রান। শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকা মার্শ ৪ চার ও ২ ছক্কায় স্রেফ ২১ বলে করে ফেলেছেন ৩০ রান। ডেভিড ওয়ার্নার খেলছেন ২৮ বলে ১৭ রান নিয়ে।
পাওয়ার প্লেতে রান আটকে রাখতে পেরেছেন শুধু শেখ মেহেদি হাসান। তার ৫ ওভার থেকে ১৯ রানের বেশি নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
ট্র্যাভিস হেডের দ্রুত বিদায়ের পর ক্রিজে যাওয়া মিচেল মার্শ চড়াও হয়েছেন বোলারদের উপর। আারেক প্রান্তে সাবধানী ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছেন ডেভিড ওয়ার্নার।
তাদের জুটিতে পঞ্চাশ এসেছে ৪৮ বলে। ২৪ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৩২ রানে খেলছেন মার্শ। ৩১ বলে দুই চারে ওয়ার্নার ব্যাট করছেন ২১ রানে।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছেন মিচেল মার্শ। বাংলাদেশের বোলিং এলোমেলো করে দিয়ে ৩৭ বলে তিনি ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ।
তৃতীয় ওভারে ভেঙেছিল অস্ট্রেলিয়ার শুরুর জুটি। এরপর থেকে ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন মার্শ। কোনো বোলারই খুব একটা ভাবাতে পারছেন না তাদের।
১৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ১ উইকেটে ১০০। ৩৮ বরে তিন ছক্কা ও ছয় চারে ৫১ রানে খেলছেন মার্শ। ৪১ বলে চারটি চারে ওয়ার্নারের রান ৩৮।
মিচেল মার্শের পর পঞ্চাশের দেখা পেলেন ডেভিড ওয়ার্নার। দুই জনের ব্যাটে ৯২ বলে দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বাংলাদেশের বোলিং একদমই ভাবাতে পারছে না ব্যাটসম্যানদের। অনায়াসে রান বাড়াচ্ছেন ওয়ার্নার ও মার্শ।
নাসুম আহমেদের ওভারের প্রথম বলে দারুণ কাভার ড্রাইভে জুটি রান তিন অঙ্কে নিয়ে যান ওয়ার্নার। ওভারের শেষ বলে রিভার্স সুইপে আরেকটি চারে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
১৯ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ১ উইকেটে ১২২। ৫২ বলে ছয় চারে ৫১ রানে খেলছেন ওয়ার্নার। ৫১ বলে তিন ছয় ও ছয় চারে মার্শ ব্যাট করছেন ৬০ রানে।
উইকেটের জন্য মরিয়া বাংলাদেশ ব্যর্থ হলো রিভিউ নিয়ে। তাসকিন আহমেদের বল যেত লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে।
ইম্প্যাক্ট লেগ স্টাম্পের বাইরে হওয়ায় নষ্ট হয় বাংলাদেশের একটি রিভিউ।
২২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ১ উইকেটে ১৩২।
এখান থেকে ম্যাচ হারলেও নিশ্চিতভাবেই রান রেটে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে নেদারল্যান্ডস কোনো পয়েন্ট না পেলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শান্ত-লিটনদের খেলা।
আক্রমণে ফিরেই আঘাত হানলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দারুণ খেলতে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে ভাঙলেন শতরানের জুটি।
বাঁহাতি পেসারের বলে মিড অনের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ওয়ার্নার। টাইমিং করতে পারেননি, সহজ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। উদযাপনের জন্য ছুড়তে গিয়ে আগেই তার হাত থেকে বল পড়ে যায়।
তবে ক্যাচ ঠিকঠাক নেওয়ায় ফিরে যেতে হয় ওয়ার্নারকে। ভাঙে ১১৬ বল স্থায়ী ১২০ রানের জুটি।
৬১ বলে ছয় চারে ওয়ার্নার করেন ৫৩ রান।
২৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ১৩৯। ক্রিজে মিচেল মার্শের সঙ্গী স্টিভেন স্মিথ।
৩৭ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর রানের গতি কিছুটা কমেছে মিচেল মার্শের। এরপরও তিনি তিন অঙ্ক স্পর্শ করেছেন কেবল ৮৭ বলে।
এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে চারটি ছক্কা ও ১১টি চার।
নাসুম আহমেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান মার্শ। পরের দুই বলে চার-ছক্কা মারেন স্টিভেন স্মিথ। তারে জুটির রান স্পর্শ করে পঞ্চাশ, ৫১ বলে।
৩১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ১৯২।
রান তাড়ায় অনায়াসেই এগিয়ে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। আরেকটি শতরানের জুটিতে সহজ জয়ের পথে টুর্নামেন্টের সফলতম দলটি।
মাত্র ৮৪ বলে মিচেল মার্শ ও স্টিভেন স্মিথের জুটিতে স্পর্শ করেছে একশ।
৩৭ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ২৪০। ৪৭ বলে ৪৪ রানে ব্যাট করছেন স্মিথ। ১০৩ বলে মার্শ খেলছেন ১৩০ রানে।
একাদশে ফিরে বল হাতে কোনো প্রভাবই রাখতে পারলেন না নাসুম আহমেদ। উইকেট নিতে কিংবা রানের গতি বেধে রাখতে নিদারুণভাবে ব্যর্থ হলেন তিনি।
১০ ওভারে বাঁহাতি এই স্পিনার ৮৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকলেন। নয় চারের সঙ্গে হজম করেছেন তিনটি ছক্কা।
৩৮ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ২৪৯ রান। জয়ের জন্য শেষ ১২ ওভারে কেবল ৫৮ রান চাই তাদের।
এক প্রান্তে বেশ দ্রুত এগোচ্ছেন মিচেল মার্শ। আরেক প্রান্তে তাই খুব একটা চাপ নেই স্টিভেন স্মিথ। অসুস্থতা কাটিয়ে ফেরা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি, ৫৫ বলে।
এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে তিন চার ও একটি ছক্কা।
৪১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৭০ রান।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যে ভুল করেছেন, সেটি করেননি মিচেল মার্শ। থিতু হয়ে যাওয়ার পর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে তিনিই ম্যাচ শেষ করেছে এসেছেন। ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে তার দুটি শতরানের জুটির সৌজন্য বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো তিনশ ছাড়ানো রান তাড়া করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৩০৬ রান ৩২ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৯ ছক্কা ও ১৭ চারে ১৩২ বলে ১৭৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মার্শ। তার সঙ্গে ১৭৫ রানের জুটি উপহার দেওয়া স্টিভেন স্মিথ ৬৪ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে করেন ৬৩ রান।
দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান নিয়েছেন একটি করে উইকেট। তিন স্পিনার মিলে ২৫ ওভার বোলিং করে নিতে পারেননি কোনো উইকেট। শেখ মেহেদি হাসান আঁটসাঁট বোলিংয়ে অন্তত রানের গতি কমিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ রান দিয়ে গেছেন অকাতরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩০৬/৮ (তানজিদ ৩৬, লিটন ৩৬, শান্ত ৪৫, হৃদয় ৭৪, মাহমুদউল্লাহ ৩২, মুশফিক ২১, মিরাজ ২৯, নাসুম ৭, মেহেদি ২*, তাসকিন ০*; হেইজেলউড ৭-১-২১-০, কামিন্স ৮-০-৫৬-০, অ্যাবট ১০-০-৬১-২, মার্শ ৪-০-৪৮-০, হেড ৬-০-৩৩-০, স্টয়নিস ৫-০-৪৫-১)
অস্ট্রেলিয়া: ৪৪.৪ ওভারে ৩০৭/২ (হেড ১০, ওয়ার্নার ৫৩, মার্শ ১৭৭*, স্মিথ ৬৩*; তাসকিন ১০-০-৬১-১, মেহেদি ৯-০-৩৮-০, নাসুম ১০-০-৮৫-০, মিরাজ ৬-০-৪৭-০, মুস্তাফিজ ৯.৪-১-৭৬-১)
ভরাডুবির বিশ্বকাপে কেবল দুটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আসর শেষ করেছে আটে থেকে। রান রেটে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের চেয়ে এগিয়ে তারা।
তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত হয়নি এখনও। প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ডাচরা পয়েন্ট পেলেই নয়ে নেমে যাবে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে ভেসে যাবে ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশা।