দুই বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটের মৃত্যু দেখছেন মইন

অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসকদের আহবান জানালেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2022, 05:52 AM
Updated : 7 August 2022, 05:52 AM

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ঠাসা সূচি নিয়ে এবার উচ্চকিত হলেন মইন আলি। ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের মতে, এখনই এদিকটায় নজর না দিলে দুই বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে ওয়ানডে ক্রিকেট।

গত এক মাসের মধ্যে মইনের ইংল্যান্ড সতীর্থ জস বাটলার, জো রুট ও বেন স্টোকসের কণ্ঠেও উঠে এসেছে একই কথা। স্টোকস তো আচমকা ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েই দিয়েছেন। পরে কণ্ঠে ক্ষোভ নিয়ে ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বলেছেন, “আমরা ক্রিকেটাররা গাড়ী নই যে তেল ভরে দিয়ে শুধু চালিয়েই যাবেন।”

চলতি ইংলিশ গ্রীস্মে ২৫ দিনের মধ্যে ১২টি সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। ঠাসা সূচি নিয়ে ইংলিশ ক্রিকেটারদের সোচ্চার হওয়ার প্রেক্ষাপট এখানেই।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন সময়ের বাস্তবতা। ক্রমশ এটির আবেদন ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আদি ও অভিজাত সংস্করণ হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের আলাদা মর্যাদা তো আছেই। বিপদে আছে তাই ওয়ানডে ক্রিকেট।

২০২৩ থেকে ২০২৭ পর্যন্ত আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচির যে খসড়া প্রকাশ হয়েছে নানা সংবাদমাধ্যমে, সেখানে ওয়ানডে ক্রিকেটের গুরুত্ব কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোকে আকর্ষণীয় করে তুলছিল যেটি, সেই আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগও সামনে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

সামনে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিই যে কেবল বাড়ছে, তা নয়। ক্রমথ নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগও আসছে। সংযুক্ত রাব আমিরাতের নতুন লিগ এর মধ্যেই ক্রিকেটারদের নাড়া দিয়েছে আর্থিক হাতছানিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগও আসছে।

সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি নিয়ে দুর্ভবাবনার জায়গা দেখছেন মইন। তিনি নিজেও গত বছর হুট করে বিদায় জানিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটকে। কেপি স্ন্যাকস সামার ক্রিকেট রোডশোতে এই অলরাউন্ডার বললেন, ওয়ানডে নিয়েই বেশি শঙ্কিত তিনি।

“এই মুহূর্তে এটা টেকসই নয় বলেই মনে হচ্ছে আমার। কিছু একটা করতেই হবে, কারণ আমার ভয় হচ্ছে, বছর দুয়েকের মধ্যে ওয়ানডে ক্রিকেট হারিয়ে যেতে পারে। সত্যি বলতে, এটিকে এখন মনে হয় দীর্ঘ ও বিরক্তিকর এক সংস্করণ।”

“টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আছে, টেস্ট আছে যা দারুণ সংস্করণ। ৫০ ওভারের ক্রিকেট মনে হচ্ছে মাঝামাঝি পড়ে গেছে-এই মুহূর্তে এটিকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না।”

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের অর্থের হাতছানিতে ক্রিকেটারদের কাছে তা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করেন মইন। তার মতে, এটির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সামঞ্জস্য করতে হবে।

“এই মুহূর্তে সব একদম এলোমেলো। আরও গোটা দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আসছে, যা আকর্ষণীয়। কিন্তু এসবের জন্য যদি টেস্ট ম্যাচ বা ওয়ানডে মিস করতে হয়, তা দুঃখজনক। কারণ ইংল্যান্ডের হয়ে সবাই সবসময় খেলতে চায়। কেউই বাদ দিতে চায় না। আমার বয়স যখন একটু কম ছিল, বিশ্রাম একদমই পছন্দ করতাম না।”

“ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এখন অনেক বেশিই হচ্ছে (খেলা)। একদিক থেকে এটা ভালো যে এত ক্রিকেট হচ্ছে। কিন্তু এসব ক্রিকেট কখনোই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণই এখনও পর্যন্ত সেরা ক্রিকেট, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এত বেশি টুর্নামেন্ট আসছে এবং ক্রিকেটাররা ঘনঘন অবসর নিচ্ছে (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে), শিগগিরই দেখবেন আরও অনেককে অবসর নিতে। কারণ সূচিতে সব একসঙ্গে ঠেসে দেওয়া হচ্ছে।”