তিন নম্বরে খেলার মতো আর কোনো ব্যাটসম্যান ছিল না দলে, বললেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
Published : 18 Dec 2022, 05:58 PM
দুই ইনিংসের দুটিতেই বোল্ড। একটি পেসে, আরেকটি স্পিনে। দুটিতেই টেকনিক্যাল সমস্যা আর মনোযোগের ঘাটতি স্পষ্ট। তিন নম্বরে নামা ব্যাটসম্যান এভাবে আউট হলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। শুধু আউট হওয়ার ধরনেই নয়, প্রশ্ন কম নয় চট্টগ্রাম টেস্টে ইয়াসির আলি চৌধুরিকে তিনে খেলানোর প্রক্রিয়া নিয়েও। উত্তর দেওয়ার পালায় রাসেল ডমিঙ্গোর কণ্ঠে অবশ্য ফুটে উঠল অসহায়ত্ব।
বাংলাদেশ কোচের ব্যাখ্যায় ফুটে উঠল, প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নয়, বরং পরিস্থিতির কারণে তারা অনেকটা বাধ্য হয়েই তিন নম্বরের চ্যালেঞ্জে পাঠিয়েছেন ইয়াসিরকে।
ব্যাটিং অর্ডারে গুরুত্বপূর্ণ পজিশন এমনিতে সবকটিই, তবে টেস্টে তিন নম্বর পজিশনকে একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় নানা কারণেই। ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে এই পজিশনেই বাংলাদেশের হয়ে নামেন ইয়াসির, এই পজিশনে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা যার খুব একটা নেই। সব সংস্করণেই মূলত মিডল অর্ডারে খেলে আসছেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে আগের ৫ টেস্টে কখনোই ৬ নম্বরের ওপরে খেলেননি তিনি। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে খেলেননি ৫ নম্বরের ওপরে।
ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অবশ্য ইয়াসির টপ অর্ডারেই খেলেছেন। ওপেন করেছেন বেশ কিছু ম্যাচে, তিন নম্বরেও খেলেছেন। তবে আরও ৬-৭ বছর আগে। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তিনি মূলত মিডর অর্ডারে খেলেই।
বাংলাদেশের হয়ে গত দুই বছরে তিন নম্বরে খেলে আসছিলেন মূলত নাজমুল হোসেন শান্ত। তার আগে খেলেছেন মুমিনুল হক। তবে ফর্ম হারিয়ে মুমিনুল এখন একাদশের বাইরে। তামিম ইকবালের চোট ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ফর্ম হারানো মিলিয়ে চট্টগ্রামে শান্তকে খেলানো হয় ওপেনিংয়ে।
সব মিলিয়ে ইয়াসিরকে তিনে খেলানো ছাড়া বিকল্প আর খুব বেশি ছিল না, টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনে বললেন ডমিঙ্গো।
“ব্যাটিং অর্ডারে আমাদের একটু ওলট-পালট করতেই হতো, কারণ… (একটু ভেবে), তিন নম্বরে ব্যাট করার মতো কেউ সত্যিকার অর্থে ছিল না। টপ অর্ডারে একজন ডানহাতি রাখতেও চেয়েছিলাম আমরা (দুই ওপেনার ছিল বাঁহাতি)। ইয়াসির যখন সবশেষ টেস্ট খেলেছে, কিছু রান করেছে। এরপর চোটে পড়ে যায়। সে রান করার পথ খোঁজে এবং ইতিবাচক থাকে। এজন্যই ওকে আমরা তিন নম্বরে খেলিয়েছি।”
“সাকিবকে তিনে নামানোর উপায় নেই, মুশফিককে নেই, লিটন বা সোহানকে তিনে নামানোর উপায় নেই। এজন্যই আমরা ইয়াসিরকে তিনে সুযোগ দিয়েছি। কাউকে ওপরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেওয়া হলে, সেটির সেরা জায়গা হতে পারে চট্টগ্রামই। কারণ উইকেট এখানে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো, নতুন বলে রান করার সুযোগ থাকে। এজন্যই ওকে তিনে খেলানো হয়েছে।”
প্রথম ইনিংসে ইয়াসির আউট হন মোহাম্মদ সিরাজের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে শরীর থেকে দূরে ব্যাট চালিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে বল আসে স্টাম্পে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি বোল্ড হন আকসার প্যাটেলের একটি টার্নিং ডেলিভারিতে ডিফেন্স আঁটসাঁট রাখতে না পেরে।
ডমিঙ্গোর কাছে বেশি চোখে লেগেছে ইয়াসিরের দ্বিতীয় ইনিংসের আউট। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে থাকা ব্যাটসম্যানের জন্য কড়া বার্তাই দিলেন তিনি।
“ইয়াসিরের সঙ্গে কিছু কথা হয়েছে আমার (আউটের পর)। বেশ ভালো একটি ডেলিভারিতে সে আউট হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো এই বলগুলি সামলাতে জানতে হবে। তার অবশ্যই কিছু কাজ করার আছে। ওই ডেলিভারি পায়ে লাগতে পারে কিংবা টার্ন করে ব্যাটের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যেতে পারে। কিন্তু (বোল্ড হওয়া মানে) ব্যাটিং নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে তাকে।”