Published : 28 Feb 2025, 11:33 AM
মাইক আথারটন থেকে মাইকেল ভন, নাসের হুসেইন কিংবা টুর্নামেন্টে না থাকা প্যাট কামিন্স, সবাই একটি জায়গায় একমত, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ভারত। একই শহরে থাকা, একই কন্ডিশনে ও একই মাঠে সব ম্যাচ খেলা, এই সুযোগ তো টুর্নামেন্টের অন্য কোনো দলের নেই। তাদের সঙ্গে এবার যোগ হলেন রাসি ফন ডার ডুসেনও। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানও সরাসরিই বললেন, ভারতের বাড়তি সুবিধা খালি চোখেই দৃশ্যমান সবার জন্য।
ভারতকে নিয়ে ফন ডার ডাসেনের বলার কারণ, সেমি-ফাইনালে এই দুই দলের দেখা হয়েও যেতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেমি-ফাইনাল যদিও এখনও নিশ্চিত হয়নি। তবে প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ও পরে বৃষ্টির কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি পয়েন্ট পেয়ে সেমির লড়াইয়ে ভালোভাবেই আছে তারা। শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারাতে পারলে তো বটেই, হারলেও তারা শেষ চারে উঠতে পারে, যদি অন্য ম্যাচের সমীকরণ পক্ষে আসে।
সেমি-ফাইনালে যদি ভারতকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় তারা, তাহলে ম্যাচটি খেলতে হবে দুবাইয়ে গিয়ে। গত তিন সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানেই আছে প্রোটিয়ারা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে সেখানে তারা খেলেছে ত্রিদেশীয় সিরিজে। হুট করে দুবাইয়ে গিয়ে খেলাটা যে কঠিন হবে, সেটা তো অনুমেয়ই। সম্ভাব্য লড়াই ঘিরে আগেই ভারতের এগিয়ে থাকার ব্যাপারটি তুলে ধরলেন ফন ডার ডাসেন।
“এটা অবশ্য বাড়তি সুবিধা। আমি দেখেছি যে, পাকিস্তানও এটা নিয়ে মন্তব্য করেছে। তবে অবশ্য এটা বাড়তি ফায়দা (ভারতের জন্য)। যদি একটি জায়গাতেই থাকা যায়, এক হোটেল থেকে নড়তে না হয়, একই সুযোগ-সুবিধার মধ্যে অনুশীলন করা যায়, একই মাঠে, একই উইকেটে সব ম্যাচ খেলা যায়, অবশ্যই সেটি বড় সুবিধা। এটা বেঝার জন্য আমার মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই।”
তবে এসব কারণে সেমি-ফাইনালে ভারতের ওপর প্রত্যাশার চাপ বেশি থাকবে বলে মনে করেন ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
“সেই বাড়তি সুবিধা কাজে লাগানোর দায়িত্বও তাদের। সেদিক থেকে, এটা তাদের ওপর বাড়তি চাপও। কারণ, সেমি-ফাইনালে বা ফাইনালেও যদি তারা ওঠে, যাদের সঙ্গে খেলা হবে, তাদের জন্য কন্ডিশন হবে অচেনা, কিন্তু ভারত সেখানে থাকবে অভ্যস্ত। সবকিছু ঠিকঠাক করার চাপ তাদের ওপরই থাকবে, কারণ সবটুকু ধারণাই আছে তাদের।”
ভারতের বাড়তি সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারটি এর আগে ধারাভাষ্যে, কলামে ও বিশ্লেষণী আলোচনায় তুলে ধরেছেন বর্তমান-সাবেক অনেক ক্রিকেটার ও বিশ্লেষকও।
ভারত দুবাইয়ে খেলার সুবিধা পাচ্ছে মূলত পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে। রোহিত শার্মার দলকে পাকিস্তান সফরের অনুমতি দেয়নি ভারতের সরকার। তাই টুর্নামেন্টের স্বাগতিক পাকিস্তান হলেও হাইব্রিড মডেলে ভারতের ম্যাচগুলি হচ্ছে দুবাইয়ে। তাদের সেমি-ফাইনাল ম্যাচ ও ফাইনালে উঠলে সেই ম্যাচও হবে একই মাঠে।
একই ভাবে, ২০২৭ সালে আইসিসির ভবিষ্যৎ সফরসূচীর বর্তমান চক্র শেষ হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানও একই পথ অনুসরণ করবে। আইসিসি বা এসিসির কোনো টুর্নামেন্ট খেলতে ভারতে যাবে না তাদের কোনো দল। তাদের ম্যাচগুলি তখন হবে অন্য কোথাও। সামনের সেপ্টেম্বরেই যেমন এশিয়া কাপের স্বাগতিক ভারত। তবে টুর্নামেন্টটি হবে শ্রীলঙ্কা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এক মাঠে ভারতের খেলার সুবিধা নিয়ে আগেই বলেছেন অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ও চোটের কারণে এই আসরে না থাকা পেসার কামিন্স।
“এটা ভালো ব্যাপার যে, টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়নি। তবে একই মাঠে খেলার ব্যাপারটি অবশ্যই ভারতকে বিশাল সুবিধা দিচ্ছে। তাদেরকে এমনিতেই বেশ শক্তিশালী মনে হচ্ছে এর মধ্যেই। সেখানে এক মাঠেই সব ম্যাচ খেলাটা অবশ্যই আরও সুবিধা দিচ্ছে ওদেরকে।”
হাইব্রিড মডেলের কারণে পাকিস্তান স্বাগতিক হয়েও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে যেতে হয়েছে অন্য দেশে। সেই ম্যাচে তারা হেরে ছিটকে গেছে টুর্নামেন্ট থেকে। ভারতের বাড়তি সুবিধা দেখলেও অবশ্য এটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাননি পাকিস্তানের কোচ আকিব জাভেদ
“দেখুন, তাদের দুবাইয়ে থাকার পেছনে তো কারণ আছে। সেই কারণে তারা যদি দুবাইয়ে থাকে, একই মাঠে ও উইকেটে খেলার সুযোগ যদি থাকে, অবশ্যই এটা বাড়তি সুবিধা। তবে একই হোটেলে থাকা বা একই পিচে খেলার সুবিধা তারা পাচ্ছে বলে অবশ্যই আমরা হারছি না। এটা কেবল পিচের কারণে নয়। তাছাড়া এমন নয় যে, তারাও (ভারত) সেখানে গোটা দশেক ম্যাচ খেলে ফেলেছে।”