Published : 21 Oct 2024, 09:22 AM
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৬
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪১ ওভারে ১৪০/৬
তাইজুলের ৫ উইকেটের পরও দক্ষিণ আফ্রিকার লিড
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিন বাঁহাতি স্পিনে আলো ছড়ালেন তাইজুল ইসলাম। তবু দিন শেষে পিছিয়েই রইল বাংলাদেশ।
আলোকস্বল্পতায় ৬ ওভার বাকি থাকতে সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে প্রথম দিনের খেলা। এর আগে ৩৪ রানে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৪১ ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৪০ রান।
প্রথম ওভারে এইডেন মার্করামকে ফিরিয়ে ভালো শুরু করেন হাসান মাহমুদ। এরপর সফরকারী ব্যাটসম্যানদের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। তবে সবার ছোট ছোট অবদানে বাংলাদেশকে টপকে গেছে তারা।
একপ্রান্ত আগলে রেখে ৭২ বলে ৩০ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার টোনি ডি জোর্জি। রায়ান রিকেল্টনের ব্যাট থেকে আসে ৪৯ বলে ২৭ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। চতুর্থ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে দুইশ উইকেট পূর্ণ হয় তার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৬
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪১ ওভারে ১৪০/৬ (মার্করাম ৬, জোর্জি ৩০, স্টাবস ২৩, বেডিংহ্যাম ১১, রিকেল্টন ২৭, ব্রিটস্কি ০, ভেরেইনা ১৮*, মুল্ডার ১৭*; হাসান ৮-১-৩১-১, মিরাজ ১০-০-৩৩-০, তাইজুল ১৫-২-৪৯-৫, নাঈম ৮-০-২০-০)
মিরপুরে সাকিবকে ছাড়িয়ে তাইজুল
ক্যারিয়ারের দুইশ উইকেট পূর্ণ করার দিন মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সফলতম বোলার হয়ে গেছেন তাইজুল ইসলাম। দেশের হোম অব ক্রিকেটে তিনিই এখন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৪০ ওভার পর্যন্ত মিরপুরে তাইজুলের শিকার ৭৯ উইকেট। ১৬ ম্যাচে ইনিংসে ৪ বার ৫ বার তার বেশি উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার।
এত দিন ধরে রেকর্ডটি ছিল সাকিব আল হাসানের। মিরপুরে ২১ ম্যাচে ৮ বার ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেটসহ সাকিবের মোট শিকার ৭৬ উইকেট।
১২ ম্যাচে ৫৮ উইকেট নিয়ে তিন নম্বরে মেহেদী হাসান মিরাজ।
দেশের মাঠে সর্বোচ্চ উইকেটের দৌড়েও সাকিবের খুব কাছে তাইজুল। বাংলাদেশের সাকিবের উইকেটে ১৬৩টি। তাইজুলের আপাতত ১৬২ উইকেট দেশে।
রিকেল্টনকে ফিরিয়ে তাইজুলের '৫'
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছেন তাইজুল ইসলাম। সবশেষ রায়ান রিকেল্টনকে কট বিহাইন্ড করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার।
আগের ছয় ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৪ উইকেট পাওয়ার হতাশা ঝেড়ে প্রোটিয়াদের প্রথম ছয় উইকেটের পাঁচটিই নিলেন তাইজুল।
টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার ১৩তম ৫ বা তার বেশি উইকেট।
৩২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১০৮ রান। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনা ও ভিয়ান মুল্ডার।
লিড নিল দক্ষিণ আফ্রিকা
বাংলাদেশকে অল্পে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম দিনেই লিড নিয়ে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩১ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১০৮ রান। এখন পর্যন্ত ২ রানে এগিয়ে তারা।
রায়ান রিকেল্টন ৪৬ বলে ২৭ ও কাইল ভেরেইনা ৬ বলে ৩ রানে অপরাজিত।
ব্রিটস্কিকে ফিরিয়ে তাইজুলের দুইশ
একই ওভারে টোনি ডি জোর্জির পর ম্যাথু ব্রিটস্কিকেও ফেরালেন তাইজুল ইসলাম। রানের খাতা খোলার আগেই স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হলেন অভিষিক্ত ব্রিটস্কি।
টেস্ট ক্রিকেটে তাইজুলের এটি দুইশতম উইকেট। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। তার আগে ৫৪ ম্যাচে ২০০ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব আল হাসান। তাইজুলের লেগেছে ৪৮ ম্যাচ।
২৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৯৯ রান। রায়ান রিকেলটন ৩৪ বলে ২১ রানে অপরাজিত। নতুন ব্যাটসম্যান কাইল ভেরেইনা।
তাইজুলের তৃতীয় শিকার জোর্জি
একপ্রান্ত আগলে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন টোনি ডি জোর্জি। তাকে বেশি দূর যেতে দিলেন না তাইজুল ইসলাম। দারুণ টার্ন করা ডেলিভারিতে ব্যাট-প্যাড হয়ে শর্ট লেগে ধরা পড়লেন বাঁহাতি ওপেনার।
৪ চারে ৭২ বলে ৩০ রান করেন জোর্জি। নতুন ব্যাটসম্যান অভিষিক্ত ম্যাথু ব্রিটস্কি।
৩০.২ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৯৯ রান। রায়ান রিকেলটন ৩৪ বলে ২১ রানে অপরাজিত।
বেডিংহ্যামকে ফেরালেন তাইজুল
জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না ডেভিড বেডিংহ্যাম। তাইজুল ইসলামের বেশ বড় টার্ন করা ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হলেন তিনি। ২৫ বলে ১১ রান করে ফিরলেন তিনি।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান রায়ান রিকেল্টন। টোনি ডি জোর্জি ৫৯ বলে ২৪ রানে অপরাজিত।
১৯.৩ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭২ রান। আর ৩৪ রানে পিছিয়ে তারা।
বেডিংহ্যামের ক্যাচ ছাড়লেন সাদমান
ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ফিল্ডিংয়েও নিখুঁত হতে পারছে না বাংলাদেশ। ট্রিস্টান স্টাবসের পর এবার জীবন পেলেন ডেভিড বেডিংহ্যাম। তাইজুল ইসলামের বল অফ সাইডে খেলার চেষ্টায় স্লিপে ক্যাচ দেন তিনি। ডান দিকে হাত এগিয়ে নাগাল পেলেও জমাতে পারেননি সাদমান ইসলাম।
১০ রানে বেঁচে যান বেডিংহ্যাম।
১৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬৮ রান। বেডিংহ্যাম ২২ বলে ১১ ও টোনি ডি জোর্জি ৫৩ বলে ২০ রানে অপরাজিত।
২ উইকেট নিয়ে চা বিরতিতে বাংলাদেশ
চা বিরতির আগে এক ঘণ্টায় দুই উইকেট নিতে পারল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে প্রথম সেশনের মতো দ্বিতীয়টিতেও পড়ল ৬ উইকেট। বিপরীতে হলো ১১১ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শুরুতেই এইডেন মার্করামকে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এরপর জীবন পেয়ে টোনি ডি জোর্জির সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ট্রিস্টান স্টাবস। দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে ফেরান তাইজুল ইসলাম।
এরপর বিপদ ঘটতে দেননি জোর্জি ও ডেভিড বেডিংহ্যাম। জোর্জি ৪৭ বলে ১৯, বেডিংহ্যাম ১৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত। বাংলাদেশের চেয়ে আর ৪১ রানে পিছিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
স্টাবসকে ফেরালেন তাইজুল
তাইজুল ইসলামের ওভারের প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি মারলেন ট্রিস্টান স্টাবস। এক বল পরই জবাব দিয়ে দিলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার।
ফুল লেংথ ডেলিভারি ব্যাক ফুটে রক্ষণাত্মক খেলার চেষ্টায় স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ধরা পড়লেন ২৭ বলে ২৩ রান করা স্টাবস।
১১.৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫০ রান। টোনি ডি জোর্জি ৩৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত। নতুন ব্যাটসম্যান ডেভিড বেডিংহ্যাম।
স্টাবসের ক্যাচ ছাড়লেন জয়
শুরুতেই জীবন পেয়ে গেলেন ট্রিস্টান স্টাবস। মেহেদী হাসান মিরাজের বল অন সাইডে খেলার চেষ্টায় সোজা শর্ট লেগ ফিল্ডার বরাবর মারেন স্টাবস। ধরার মতো উচ্চতায় থাকলেও হাতে জমাতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। ৮ রানে বেঁচে যান স্টাবস।
৬ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৪ রান। স্টাবস ১৩ বলে ৯ ও টোনি ডি জোর্জি ১৭ বলে ৬ রানে অপরাজিত।
প্রথম ওভারেই হাসানের আঘাত
চতুর্থ ডেলিভারিটি 'নো বল' করায় প্রথম ওভারে একটি বেশি বল করতে হলো হাসান মাহমুদকে। আর সেটিতেই পেয়ে গেলেন সাফল্য। দারুণ ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এইডেন মার্করামকে বোল্ড করলেন হাসান।
এক ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৯ রান। ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান টোনি ডি জোর্জি ও ট্রিস্টান স্টাবস।
১০৬ রানে শেষ বাংলাদেশ
কেশাভ মাহারাজের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পে টেনে আনলেন তাইজুল ইসলাম। মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ।
এনিয়ে ঘরের মাঠে সবশেষ সাত ইনিংসের ছয়টিতেই দুইশর আগে অলআউট হলো বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে এটিই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর। ২০১৯ সালে ইডেন টেস্টেও টস জিতে ব্যাট করার পর ১০৬ রানে অলআউট হয় তারা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর চেয়ে কম রানে অল আউট হওয়ার নজির আছে আর একটি। ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ৮৭ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মহারাজ, কাগিসো রাবাদা ও ভিয়ান মুল্ডার। প্রথম উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বলের হিসেবে দ্রুততম ৩০০ উইকেটের মালিক হন রাবাদা।
বাংলাদেশের পক্ষে বিশ রান ছুঁতে পারেন শুধু মাহমুদুল হাসান জয়। ৯৭ বলে ৩০ রান করেন তিনি।
কোনো জুটিই ত্রিশ ছুঁতে পারেনি। নবম উইকেটে সর্বোচ্চ ২৬ রান যোগ করেন তাইজুল ও নাঈম হাসান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪০.১ ওভারে ১০৬ (জয় ৩০, সাদমান ০, মুমিনুল ৪, শান্ত ৭, মুশফিক ১১, লিটন ১, মিরাজ ১৩, জাকের ২, নাঈম ৮, তাইজুল ১৬, হাসান ৪*; রাবাদা ১১-৪-২৬-৩, মুল্ডার ৮-৪-২২-৩, মহারাজ ১৬.১-৪-৩৪-৩, পিট ৫-১-১৯-১)
রাবাদার তৃতীয় শিকার নাঈম
বড় হওয়ার আগেই তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানের জুটি ভেঙে দিলেন কাগিসো রাবাদা। স্লিপে ভিয়ান মুল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৮ রান করা নাঈম।
৩৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১০৫ রান। ৩০ বলে ১৬ রানে খেলছেন তাইজুল ইসলাম। ক্রিজে শেষ ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদ।
তাইজুল-নাঈমের জুটিতে একশ পার
স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নবম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে সেই শঙ্কা দূর করে দিলেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।
৩৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১০১ রান। তাইজুল ২৭ বলে ১৫ ও নাঈম ১৪ বলে ৮ রানে অপরাজিত। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির সংগ্রহ ২৫ রান। ইনিংসে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ জুটি।
টিকলেন না জাকের
অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না জাকের আলি। কেশাভ মহারাজের বলে সামনের পা এগিয়ে দিয়ে বড় শট খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হয়ে গেলেন ২ রান করা ব্যাটসম্যান।
৩০.৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৭৬ রান। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম।
জয়কে ফেরালেন পিট
মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে ছক্কা মারলেন মাহমুদুল হাসান জয়। এক ওভার পর তার ব্যাট থেকে এলো বাউন্ডারি। ডেন পিটের পরের বল আবারও জায়গা বানিয়ে কাট করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে গেলেন তরুণ ওপেনার।
একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্যাটিংয়ে ৯৭ বলে ৩০ রান করে ফিরলেন জয়।
৩০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৭৬ রান। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান জাকের আলি ও নাঈম হাসান।
প্রথম সেশনেই নেই ৬ উইকেট
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাজে শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ২৬.১ ওভারে মাত্র ৬০ রান করতে ৬ উইকেট হারিয়েছে তারা।
দিনের শুরুতেই পরপর তিন ওভারে ভিয়ান মুল্ডারের শিকার হন সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
এরপর প্রতিরোধের আভাস দিলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। পরে লিটন কুমার দাসকেও ফেরান কাগিসো রাবাদা।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগের ওভার সবশেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজ।
৮৬ বলে ১৬ রানে অপরাজিত তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর নামবেন অভিষিক্ত জাকের আলি।
মিরাজকে ফেরালেন মহারাজ
মধ্যাহ্ন বিরতির আগের ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কেশাভ মহারাজের আর্ম বল ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ হলে ২৪ বলে ১৩ রান করা অলরাউন্ডার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি তার।
মিরাজের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে মধ্যাহ্ন বিরতি ডাকেন আম্পায়াররা।
২৬.১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৬০ রান। একপ্রান্ত আগলে রেখে ৮৬ বলে ১৬ রানে অপরাজিত মাহমুদুল হাসান জয়। বিরতির পর নামবেন অভিষিক্ত জাকের আলি।
স্টাবসের দারুণ ক্যাচে লিটনের বিদায়
টিকতে পারলেন না লিটন কুমার দাস। কাগিসো রাবাদার লাফানো ডেলিভারিতে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। বাম দিয়ে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন ট্রিস্টান স্টাবস।
১৩ বলে ১ রান করেন লিটন। পঞ্চাশের আগে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ।
২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৯ রান। নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ। একমাত্র আগলে রেখে ৬৮ বলে ১৫ রানে অপরাজিত মাহমুদুল হাসান জয়।
ওয়াকারকে ছাড়িয়ে 'দ্রুততম' রাবাদা
বলের হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম ৩০০ উইকেটের মালিক হয়েছেন কাগিসো রাবাদা। এই মাইলফলক ছুঁতে ১১ হাজার ৮১৭ বল করেছেন তিনি।
১২ হাজার ৬০২ বলে ৩০০ উইকেট নিয়ে রেকর্ডটি এতদিন ছিল ওয়াকার ইউনুসের। রাবাদার স্বদেশী ডেইল স্টেইনের লেগেছিল ১২ হাজার ৬০৫ বল।
মুশফিককে ফিরিয়ে রাবাদার '৩০০'
পানি বিরতির পর আক্রমণেই ফিরেই আঘাত করলেন কাগিসো রাবাদা। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে গেলেন ২০ বলে ১১ রান করা মুশফিকুর রহিম।
একইসঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট পূর্ণ হলো রাবাদার। দক্ষিণ আফ্রিকার ষষ্ঠ বোলার হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি।
১৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪০ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস।
প্রথম ঘণ্টায় ৩ উইকেটে ৩৫
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সকালের শুরুর চ্যালেঞ্জটা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় টপ-অর্ডারের তিন উইকেট হারিয়ে ১৩ ওভারে তাদের সংগ্রহ মাত্র ৩৫ রান।
নতুন বলে প্রথম স্পেলে তেমন নিয়ন্ত্রিত লাইনে বোলিং করতে পারেননি কাগিসো রাবাদা। তবে অন্য প্রান্ত থেকে পরপর তিন ওভারে তিন উইকেট নেন পেস অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার।
বাঁহাতি স্পিনার কেশাভ মহারাজ শুরু থেকেই বড় বড় টার্ন পান। তবে প্রথম তিন ওভারে কোনো সাফল্য পাননি অভিজ্ঞ স্পিনার।
পানি বিরতির পর আবার আক্রমণে ফেরানো হয়েছে রাবাদাকে।
মাহমুদুল হাসান জয় ৪৮ বলে ১২ ও মুশফিকুর রহিম ১৬ বলে ৭ রানে অপরাজিত।
নবম ওভারে স্পিন
দুই পেসার কাগিসো রাবাদা ও ভিয়ান মুল্ডারকে দিয়ে টানা ৮ ওভার করানোর পর বাঁহাতি স্পিনার কেশাভ মহারাজকে আক্রমণে আনলেন এইডেন মার্করাম। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
৯ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩০ রান। জয় ৩২ বলে ১২ ও মুশফিকুর রহিম ৬ বলে ২ রানে অপরাজিত।
মুল্ডারের তৃতীয় শিকার শান্ত
পরপর তিন ওভারে তিন উইকেট নিলেন ভিয়ান মুল্ডার। সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হকের পর নাজমুল হোসেন শান্তর বিদায়ে শুরুতেই চাপে বাংলাদেশ।
রাউন্ড দা উইকেট থেকে মুল্ডারের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় শান্তর ব্যাটের সামনের কানায় লাগে। শর্ট কভারে সহজ ক্যাচ নেন কেশাভ মহারাজ। ৭ বলে ৭ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২১ রান। নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। ১৯ বলে ৫ রানে অপরাজিত মাহমুদুল হাসান জয়।
অদ্ভুত রিভিউয়ের পর মুমিনুলের বিদায়
বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না মুমিনুল হক। ভিয়ান মুল্ডারের দ্বিতীয় ওভারে ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ফুল লেংথ ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় কানায় লেগে কট বিহাইন্ড হন ৪ রান করা মুমিনুল।
ওভারের প্রথম বলে দেখা মেলে অদ্ভুত রিভিউ সিস্টেমের। মুল্ডারের সোজা ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলেন মুমিনুল। বল তার প্যাডে আঘাত করলে জোরাল আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে রিভিউ নেন এইডেন মার্করাম। রিপ্লেতে দেখা যায়, মুমিনুলের ব্যাটে লাগেনি বল। কিন্তু এরপর হক-আই বল ট্র্যাকিং না করে সরাসরি মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন টিভি আম্পায়ার।
তাই তখন বিপদ ঘটেনি মুমিনুলের। তবে দুই বল পরই আউট হয়ে যান তিনি। চার নম্বরে নামলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৬ রান। ১৩ বলে ৫ রানে অপরাজিত মাহমুদুল হাসান জয়।
খালি হাতে ফিরলেন সাদমান
শুরুতেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় ওভারে ভিয়ান মুল্ডারের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় স্লিপে ক্যাচ দিলেন বাঁহাতি ওপেনার। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
১.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৬ রান। মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গে দিতে এলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক।
স্পিন উইকেটে রানের পথ খুঁজবে দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা কোচ শুক্রি কনরাড বলেছেন, 'আমাদের প্রস্তুতি দারুণ। এখানে আসার আগে প্রিটোরিয়ায় ক্যাম্প ছিল আমাদের। যতটা সম্ভব ভালো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এখানে স্পিনের দাপট আশা করবেন আপনি। আমাদের প্রস্তুতির বড় অংশ জুড়েও তাই স্পিন ছিল।'
"কন্ডিশনের ব্যাপারে আমরা যেমন আশা করছি, তেমনই দেখছি। সব দিক ভালোভাবে কভার করেছি আমরা। আমাদের জন্য এটি দারুণ চ্যালেঞ্জ। রক্ষণাত্মক ক্রিকেটে আটকে না গিয়ে রানের পথ খোঁজার দিকে মনোযোগ আমাদের।"
"আমাদের দলে বিশ্বের সেরাদের একজন কেশাভ মহারাজ আছে। ডেন পিটের অভিজ্ঞতাও প্রচুর। এছাড়া বেশ কজন অনিয়মিত স্পিনার আছে, যারা খণ্ডকালীন বোলারদের চেয়ে ভালো।"
পিচে ঘাসের আবরণের নিচে স্পষ্ট ফাটল
পিচ রিপোর্টে এড রেইন্সফোর্ড বলেছেন, 'পিচে ঘাসের আবরণ আছে। তবে এর নিচে ফাটল স্পষ্ট। আবহাওয়ার কারণে ধারণা হচ্ছিল, পানির মাত্রা বেশি থাকতে পারে। তবে আপাতত শুষ্ক দেখা যাচ্ছে। যে কোনো দল আগে ব্যাট করে বড় রান করতে চাইবে। কারণ পরের দিকে উইকেট ভাঙতে পারে।'
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে ব্রিটস্কির অভিষেক
বাংলাদেশের মতো এক পেসারের একাদশ সাজিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাও। তবে বিশেষজ্ঞ পেসার কাগিসো রাবাদার সঙ্গে তাদের দলে আছেন পেস অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার।
এক পেসারের একাদশে অভিষেক হয়েছে ম্যাথু ব্রিটস্কির। টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭তম ক্রিকেটার ২৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
স্পিন বিভাগে কেশাভ মহারাজের সঙ্গে আছেন ডেন পিট। এছাড়া এইডেন মার্করামকেও হাত ঘোরাতে দেখা যেতে পারে।
মুল্ডারসহ ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে প্রোটিয়ারা। দলের সবাই এই প্রথম বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে নামছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: ডেভিড বেডিংহ্যাম, ম্যাথু ব্রিটস্কি, টোনি ডি জোর্জি, কেশাভ মহারাজ, এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), ভিয়ান মুল্ডার, ডেন পিট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনা (উইকেটরক্ষক)।
জাকেরের অভিষেক, পেসার শুধু হাসান
স্পিন সহায়ক উইকেটের কথা মাথায় রেখে এক পেসার নিয়ে একাদশ সাজাল বাংলাদেশ। পেস বিভাগ একাই সামলাবেন হাসান মাহমুদ।
তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে স্পিন বিভাগে নেওয়া হয়েছে নাঈম হাসানকে। গত বছরের ডিসেম্বরের পর আবার জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামছেন অফ স্পিনার নাঈম।
তিন স্পিনার ও এক পেসারের একাদশে অভিষেক হয়েছে জাকের আলির। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১০৫তম ক্রিকেটার তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ৫০তম ম্যাচ এটি।
এখন পর্যন্ত ৪৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি ও ১৯ ফিফটিতে জাকেরের সংগ্রহ ২ হাজার ৮৬২ রান।
এছাড়া একাদশে ফিরেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। চোটের কারণে পাকিস্তান সফরের দুই ম্যাচ ও পরে একাদশ সমন্বয় করতে গিয়ে ভারত সফরে খেলা হয়নি তার।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলি, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, হাসান মাহমুদ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বছরের প্রথম টেস্টে টস জিতলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
শান্ত বলেছেন, উইকেটের অবস্থা দেখে তার মনে হচ্ছে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং কঠিন হবে। তাই সে পথে হাঁটছে না তার দল।
দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বলেছেন, টস জিতলে তিনিও আগে ব্যাটিং করতেন।
বিতর্ক-আন্দোলন ছাপিয়ে মাঠের ক্রিকেটের অপেক্ষা
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে হয়তো সাজসাজ রব দেখা যেত মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আগেভাগেই ঘোষণা দিয়ে রাখায় এটিই যে হতে পারল দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের শেষ টেস্ট।
কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন উল্টো নিরাপত্তাবাহিনীর কঠোর অবস্থান হোম অব ক্রিকেট প্রাঙ্গনে। সেটিও সাকিবকে ঘিরেই। ম্যাচের কয়েক দিন আগে থেকেই সাকিবে দেশে ফেরা ও শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আন্দোলন, মিছিল, ধাওয়া। এমনকি মারামারির ঘটনাও দেখা গেছে।
সেসব ছাপিয়ে মাঠের লড়াইয়ে মনোযোগ দেওয়ার কথা বারবার জোর দিয়ে বলছে বাংলাদেশ দল। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার সকাল ১০টায় শুরু হবে খেলা।
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থানে থেকে শেষ করতে সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। এমনকি অন্যান্য ফলাফল পক্ষে পেলে ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাও টিকে আছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
কেবল দুটি দেশের বিপক্ষে এখনও কোনো টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। নিজেদের সবশেষ সিরিজে যাদের বিপক্ষে পাত্তা পায়নি দল সেই ভারতের পাশাপাশি এই তালিকায় আছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য পূরণে বাইরের নানান ঘটনায় মনোযোগ ধরে রাখার কঠিন চ্যালেঞ্জ জিততে হবে স্বাগতিকদের।