Published : 02 May 2025, 05:18 PM
নিজেদের সবশেষ দুটি টেস্ট সিরিজেই খুব বাজেভাবে হেরেছে ভারত। ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে সামনের ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় দলে নতুন মুখ দেখতে চান রাভি শাস্ত্রি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাই সুদার্শান ও বাঁহাতি পেসার আর্শদিপ সিংকে দলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সাবেক অলরাউন্ডার ও সাবেক প্রধান কোচ।
গত অক্টোবর-নভেম্বরে ঘরের মাঠে তিন টেস্টের সিরিজে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পরপরই অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে পাঁচ টেস্টের বোর্ডার গাভাস্কার-ট্রফিতে ৩-১ ব্যবধানে হারে ভারত। ওই পরাজয়ে তাদের এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন ভেঙে যায়।
লাল বলের ক্রিকেটে নতুন শুরুর অভিযানে আগামী ২০ জুন থেকে ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলবে তারা।
এবারের আইপিএলে দারুণ ছন্দে থাকা সুদার্শানকে আসছে সিরিজের দলে রাখা উচিত, আইসিসি রিভিউয়ে বললেন শাস্ত্রি। ভারতের হয়ে এখন পর্যন্ত তিনটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলা ২৩ বছর বয়সী এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তিন সংস্করণেই জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারেন বলে মনে করেন তিনি।
“এই তরুণ, সাই সুদার্শানকে সব সংস্করণেই জন্য উপযুক্ত মনে করি আমি। তাকে মানসম্পন্ন খেলোয়াড় মনে হচ্ছে এবং অবশ্যই তার ওপর আমার নজর থাকবে।”
ইংলিশ কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সুদার্শানের। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে সারের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। পাঁচ ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি এবং একটি ফিফটিতে করেছিলেন ২৮১ রান ।
এখন পর্যন্ত ২৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩৯.৯৩ গড়ে তার রান প্রায় দুই হাজার। সেঞ্চুরি আছে সাতটি। গত অক্টোবরে রাঞ্জি ট্রফিতে তামিল নাড়ুর হয়ে দিল্লির বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পান তিনি।
চলতি আইপিএলে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে এখন পর্যন্ত ৯ ম্যাচে ৫০.৬৬ গড় আর ১৫০ স্ট্রাইক রেটে তিনি করেছেন ৪৫৬ রান। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন তিনিই। ওই দিন রাতে তাকে ছাড়িয়ে যান সুরিয়াকুমার ইয়াদাভ।
সব মিলিয়ে সুদার্শানকে ইংল্যান্ড সফরের দলে না নেওয়ার কোনো কারণ দেখেন না আইপিএলে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা শাস্ত্রি।
“ইংল্যান্ডে একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে, ইংলিশ কন্ডিশন সম্পর্কে জানা থাকা, তার কৌশল, যেভাবে সে খেলে, আমার মনে হয় এই দলে জায়গা পাওয়ার দাবিদার বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে সে আমার কাছে সবার ওপরে থাকবে।”
অস্ট্রেলিয়া সফরে অনেক বেশি বোলিংয়ের ধকল সইতে হয় জাসপ্রিত বুমরাহকে। যার প্রভাবে চোটেও পড়েন ভারতীয় বোলিংয়ের প্রধান এই অস্ত্র। মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দিপ, হার্শিত রানাদের ওই সফরে নিয়ে গেলেও খুব একটা প্রভাব তারা রাখতে পারেননি।
ইংল্যান্ড সফরে তাই বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, সিরাজদের পাশাপাশি একজন বাঁহাতি পেসারও নেওয়া উচিত বলে মনে করেন শাস্ত্রি। এখানেই তিনি বললেন আর্শদিপের কথা।
“আমি একজন বাঁহাতি পেসার খুঁজব। কোন বাঁহাতি বোলার ভালো ফর্মে আছে, সেদিকে নজর রাখব এবং ষষ্ঠ (বোলিং) বিকল্প হিসেবে তাকে সেখানে নেওয়ার চেষ্টা করব। এটা যে কেউ হতে পারে। এমনকি সাদা বলের বিশেষজ্ঞও হতে পারে। আর্শদিপ সিংয়ের মতো একজনকে যখন ‘সাদা বলের বিশেষজ্ঞ’ বলা হয়, তখন আমার বিষয়টি ভালো লাগে না।”
“আমি তার লাল বলের রেকর্ড এবং সে কত ওভার বোলিং করে, এসবের ওপর গভীর নজর রাখব। যদি সে ১৫-২০ ওভার বোলিং করতে পারে, তাহলে সে হয়তো দলের মধ্যে থাকবে, কারণ তার সেই মানসিকতা আছে। সে অনেক ভেবেচিন্তে বোলিং করে এবং আমার একজন বাঁহাতি বোলার দরকার।”
আরেক বাঁহাতি পেসার খালিল আহমেদের কথাও তুলে ধরলেন ৮০টি টেস্ট ও ১৫০টি ওয়ানডে খেলা শাস্ত্রি।
“একজন বাঁহাতি বোলার দরকার, তাকে খুঁজে বের করুন, যেই হোক, তাকে বেছে নিন। এখানে খালিল আহমেদ আছে, যার ছন্দ ভালো, সে ভালো বোলিং করছে।”
আর্শদিপ ও খালিল, দুজনই ভারতের হয়ে সীমিত ওভারের দুই সংস্করণে খেলেছেন। তবে তাদের কারো এখনও টেস্ট অভিষেক হয়নি।
২১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে আর্শদিপের শিকার ৬৬ উইকেট। ইনিংসে পাঁচ উইকেট আছে দুইবার। ২০২৪ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে কেন্টের হয়ে পাঁচ ম্যাচে তিনি নেন ১৩ উইকেট।
১৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে খালিলের উইকেট ৫২টি। তিনি অস্ট্রেলিয়া সফরের অংশ ছিলেন, প্রথমে ভারত ‘এ’ দলের সঙ্গে এবং পরে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের জন্য সফরসঙ্গী রিজার্ভ হিসেবে।