Published : 02 May 2025, 10:27 AM
ম্যাচের আগে একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করা হয় আইপিএলের ওয়েবসাইটে। বৈভাব সুরিয়াভানশির অনুশীলন প্রক্রিয়া কেমন, রাজস্থান রয়্যালসের অনুশীলনে কীভাবে তাকে তৈরি করছেন কোচ রাহুল দ্রাবিড় ও অন্যরা। সেই ভিডিওতে দ্রাবিড় একটা কথা উল্লেখ করেন, এই উত্যুঙ্গ সাফল্যের পাশাপাশি চরম ব্যর্থতার সঙ্গেও মানিয়ে নিতে হবে ১৪ বছর বয়সেই বড় তারকা বনে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে। ঠিক এই ম্যাচেই সেই ব্যর্থতার থাবা হজম করলেন কিশোর তারকা!
ক্রিকেট তো জীবনেরই প্রতিচ্ছবি। সাফল্য ও ব্যর্থতার পথচলা এখানে হাত ধরাধরি করেই। সেই স্বাদ দ্রুতই পেয়ে গেলেন সুরিয়াভানশি। আগের ম্যাচে ৩৫ বলের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দেওয়া ব্যাটসম্যান পরের ম্যাচে আউট দুই বলে শূন্য রান করে।
জয়পুরে বৃহস্পতিবার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ২১৭ রান তাড়ায় ক্রিজে যান আগের ম্যাচের দুই নায়ক ইয়াশাসভি জয়সওয়াল ও বৈভাব সুরিয়াভানশি। ম্যাচের তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে রান করতে পারেননি সুরিয়াভানশি। পরের বলটি দিপাক চাহার করেন ফুল লেংথে, অফ স্টাম্পের বাইরে। স্রেফ ১৩০ কিলোমিটার গতির ডেলিভারি। সুরিয়াভানশির জোনেই ছিল বল। আগের ম্যাচে এর চেয়ে অনেক ভালো ডেলিভারি তিনি দুর্দান্ত দাপটে আছড়ে ফেলেছেন গ্যালারিতে।
কিন্তু সেদিন ছিল তার দিন, এ দিন তো অন্য দিন!
সুরিয়াভানশি উড়িয়ে মারার চেষ্টা করলেন। কিন্তু বলের নিচে যথেষ্ট যেতে পারলেন না, মারে জোরও হলো না। মিড অনে সহজ ক্যাচ!
আউট হয়ে কোমরে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে ক্রিজে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন সুরিয়াভানশি। এরপর আস্তে আস্তে হাঁটা দিলেন ড্রেসিং রুমের পথে।
ধারাভাষ্যকক্ষে তখন দ্রাবিড়ের কথাটি মনে করিয়ে দিলেন ইয়ান বিশপ, “সাফল্যের পাশাপাশি এই ধরনের ব্যর্থতার সঙ্গেও মানিয়ে নিতে হবে তাকে, ঠিক যেমন তার কোচ বলেছেন…।”
সুরিয়াভানশি যে মুষড়ে পড়বেন না এবং মানিয়ে নিতে পারবেন, সেই আশা অবশ্য দলের আছে। ওই ভিডিও ক্লিপেই দ্রাবিড় বলেছেন, বয়স কম হলেও এই কিশোর কোনোকিছুতে খুব বিচলিত হন না।
“তার ব্যাটিংয়ে যে ব্যাপারটি আপনারা সবাই দেখেছেন যে, প্রচুর সময় পায় সে (শট খেলার জন্য)। খেলার সময় অনেক সময় পায়। তবে আরও বেশি যেটি গুরুত্বপূর্ণ, তার টেম্পারমেন্টও খুব ভালো। সে খুবই ধীরস্থির। চারপাশের অনেক কিছু নিয়েও সে খুব প্রভাবিত হয় না।”
“প্রতিভা তো তার আছেই। আমরা চেষ্টা করছি তাকে আবহের সঙ্গে মানিয়ে তুলতে। বিভিন্ন ধরনের যে বোলিং ও বৈচিত্রের মুখোমুখি সে মাঠে হবে, সেসবের সামনে অনুশীলনে তাকে তুলে ধরতে। আমরা এটাও বুঝতে পেরেছি যে, তাকে শুধু ক্রিকেটার হিসেবেই গড়ে তোলার ব্যাপার নয়, শারীরিক ও মানসিকভাবেও গড়ে তুলতে হবে আমাদের সময় নিয়ে। একটি ভালো দল তার পাশে থাকতে হবে, ভালো একটি স্পোর্টস সায়েন্স দল… এখানে যারা আছে, তারা মাঠের বাইরেও তার সঙ্গে কাজ করে যাবে।”
দ্রাবিড় জানালেন, দলের অন্য ক্রিকেটাররাও দারুণভাবে সহায়তা করছেন সুরিয়াভানশিকে আদর্শ একটা পরিবেশে গড়ে তুলতে।
“এই দলের আরও অনেকেই… রিয়ান (পারাগ), সাঞ্জু (স্যামসন), (ইয়াশাসভি) জয়সওয়াল, (ধ্রুব) জুরেল… ওরা নিজেরাও একই পথচলায় এগিয়ে গেছে। ওরা তাই জানে এবং একদিক থেকে ওরাই সবচেয়ে ভালো শিক্ষক ও পথ নির্দেশক, যারা তাকে নির্দেশনা দিতে পারে।”