Published : 02 May 2025, 10:49 PM
কাগজের ঠোঙা দিয়ে বানানো একটি পাপেট হাতে ধানমন্ডিতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের খোলা চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ছোট্ট রাফান ও তার বোন প্রথমা; ‘ইকরি মিকরি: এ ওয়ার্ল্ড অফ পিকচার্স বুক’ প্রদর্শনীতে এসেছিল তারা।
প্রদর্শনীতে এসে তাদের দেখা হল পাপেট শো। অংশ নিয়েছে পাপেট তৈরির কর্মশালাতেও।
তাদের বাবা রিফাত আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছেলেমেয়েদের নিয়ে এসেছি, ওরা ভীষণ আনন্দ পেয়েছে। এখন তো ঢাকায় শিশুদের নিয়ে এমন আয়োজন খুব বেশি হয় না।”
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইকরি মিকরির আয়োজনে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করা হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী আগামী বুধবার পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী।
উদ্বোধন পর্বে ‘জলপুতুল পাপেটস’ এর প্রযোজনা 'চিকেন খাই না' পরিবেশিত হয়। পরে একটি পাপেট তৈরি কর্মশালায় অংশ নেয় শিশুরা।
‘জলপুতুল পাপেটস’ এর সমন্বয়ক আসিফ চৌধুরী বলেন, “আমরা পাপেট কর্মশালা করেছি যেন শিশুরা সহজেই পাপেট তৈরি করতে পারে। আমাদের হাতের কাছে যেসব জিনিসপত্র পরে থাকে, যেমন কাগজের ঠোঙা। এটা কিন্তু ফেলা দেওয়া হয়। সেই ফেলনা জিনিস থেকেই কীভাবে শিশুদের খেলনা বানিয়ে ফেলা যায় এবং পাপেট বানিয়ে আনন্দ করা যায়। সেটাই কর্মশালায় শিখিয়েছি।”
প্রদর্শনীতে ইকরি মিকরির প্রকাশিত পিকচার্স বুকের ইলাস্ট্রেশন দেখানো হচ্ছে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি আগামী বুধবার পর্যন্ত প্রতিদিন থাকবে গল্প বলা ও শোনার আসর। শিল্পী ও প্রকাশকদের সঙ্গে আলাপচারিতা, শিশুদের নিজেদের লেখা গল্প পাঠ ও একটি ‘ভিজ্যুয়াল স্টোরি টেলিং’ কর্মশালাও রয়েছে।
এ ছাড়া থাকবে বয়ঃজ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীদের জন্য টাইপোগ্রাফি কর্মশালা, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য হাতেকলমে বই তৈরির সেশন। সমাপনী দিন নাট্যদল বটতলা মঞ্চস্থ করবে নাটক 'ফাংসাং'।
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ইকরি মিকরির উদ্যেক্তাদের একজন শামীম আহমেদ বলেন, “১২ বছর হয়ে গেছে ইকরি মিকরির বয়স। কিছুদিন ধরেই আমাদের মনে হচ্ছিল শিশুদের জন্য একটা আয়োজন সাজানো দরকার। এবার সেটি করা হল। শিশুরা আনন্দ পাচ্ছে, এটাই আমাদের সার্থকতা।”
প্রদর্শনীতে আসা লেখক ও গবেষক সালেক খোকন বলেন, “এই সময়টা সব মিলিয়েই তো অস্থির। এমন সময়ে শিশুদের মননশীল বিকাশের জায়গাটি নিয়ে সবারই চিন্তা করা উচিত। শিশুদের সৃজনশীল বিকাশে এ ধরনের আয়োজনগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
এমন আয়োজন স্কুলগুলোতে করারও পরামর্শ দেন তিনি।
প্রদর্শনীতে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কথা প্রকাশ ও শৈশব প্রকাশের জসিম উদ্দিন বলেন, “শিশুদের উচ্ছ্বাস দেখতেই এসেছি। এরকম আয়োজন আরও বেশি বেশি হওয়া উচিত।ইকরি মিকরির এই আয়োজনটিতে এসে ভীষণ ভালো লাগছে। শিশুরা আনন্দ পেয়েছে, এটাই তো একটা বড় ব্যাপার।”