আমিরের পরামর্শে উজ্জীবিত মৃত্যুঞ্জয় বিপিএলে জ্বলে উঠতে চান আবার

বিপিএলের গত আসরে চমক দেখানো বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার এবার নিজেকে আরও পরিণত মনে করছেন টি-টেন লিগে খেলার পর।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2023, 01:53 PM
Updated : 2 Jan 2023, 01:53 PM

গোটা টুর্নামেন্টে সুযোগ মিলেছে স্রেফ দুটি ম্যাচে। একটিতে খরুচে বোলিংয়ে উইকেটশূন্য, আরেকটিতে এক উইকেট। পরিসংখ্যান বলছে, টি-টেন টুর্নামেন্ট খুব একটা ভালো কাটেনি মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরির। অথচ এই টুর্নামেন্টকেই জীবনের বড় এক প্রাপ্তি বলছেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। ম্যাচ খেলার বাইরেও যে শিখেছেন অনেক কিছু! শেখার সেই অভিযানে তিনি ‘শিক্ষক’ হিসেবে পাশে পেয়েছেন মোহাম্মদ আমিরকে।

তরুণ একজন বাঁহাতি পেসারের জন্য আমিরের মতো এমন একজন বাঁহাতি পেসারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারা অনেক বড় সুযোগই বটে। আবু ধাবি টি-টেন টুর্নামেন্টে সেই সুযোগটিই আসে মৃত্যুঞ্জয়ের জন্য। আমিরের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছেন বলেই জানালেন ২১ বছর বয়সী বাঁহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার। সেসবকে সঙ্গী করে তিনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে আবারও ঝড় তুলতে চান বিপিএলে।

গত বিপিএলের মৃত্যুঞ্জয় নজর কাড়েন চমকপ্রদ পারফরম্যান্স দেখিয়ে। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়েই ১৫ উইকেট নেন স্রেফ ৮ ম্যাচ খেলে। দলে তারকা তেমন না থাকলেও তারুণ্য নির্ভর দলটির ফাইনালের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় বড় অবদান ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের।

পরে তিনি ঘরোয়া অন্যান্য টুর্নামেন্টে খেলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে আবু ধাবি টি-টেন টুর্নামেন্টে খেলেন বাংলা টাইগার্সের হয়ে।

এই এক টি-টেন আসরেই অনেকটা পরিণত হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছেন মৃত্যুঞ্জয়। মিরপুর একাডেমি মাঠে সোমবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অনুশীলন শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, টি-টেনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান বিপিএলে।

“এক মাস আগে আমি টি-টেন খেলতে গিয়েছিলাম। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত যে এত সুন্দর জায়গায় খেলতে পারলাম। অভিজ্ঞতার দিক থেকে বললে, আমার পুরো ক্যারিয়ারে ওই এক মাস ছিল সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা। বিশ্বমানের বোলার আমিরের সাথে ছিলাম, সাকিব ভাইয়ের খুব কাছে ছিলাম এবং বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের দেখতে পেয়েছি কাছ থেকে।”

“আমি বলব, আমার ২ থেকে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের জন্য খুব ভালো হয়েছে। আমি এটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।”

টি-টেন টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে একটি ম্যাচে ২ ওভারে ৩১ রান দেওয়ার পর বেশ কিছু ম্যাচ বাইরে বসে থাকতে হয় তাকে। পরে আরেকটি ম্যাচে সুযোগ পান শেষ দিকে। সেটিতে ২ ওভারে ১৭ রান দিয়ে শিকার করেন অ্যালেক্স হেলসের উইকেট।

মৃত্যুঞ্জয় বললেন, আমিরের কাছ থেকে পাওয়া কিছু পরামর্শ তাকে সহায়তা করেছে নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলতে।

“সবাই জানি আমির বিশ্বমানের বোলার। তিনি আমাকে অনেক বড় কোনো টিপস দেননি, কিন্তু ছোট ছোট যেগুলো বলেছেন, সেগুলো আমার প্রয়োজন ছিল। আগে যেসব লিগ খেলতাম, সেখানে দু-একটি ভুল করলে সমস্যা ছিল না। কিন্তু টি-টেনে প্রথমে যখন দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছিলাম, ছোট ছোট কিছু ভুল আমাকে বাধাগ্রস্থ করছিল। এরপর আমির ভাই আমাকে ছোট ছোট কিছু টিপস দেন, যা আমাকে খুব সাহায্য করে। শেষ ম্যাচটি আমি মনে করি, আমার জন্য খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। এ টুর্নামেন্টে আমাকে সাহায্য করবে।”

টি-টেন টুর্নামেন্টে অ্যালেক্স হেলস, দাভিদ মালান, জেমস ভিন্স, ক্রিস লিনের মতো ব্যাটসম্যানদের সামনে বোলিং করার পর এখন ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী বলে মনে করেন মৃত্যুঞ্জয়।

“একটা জিনিস, আগে ভয় পেতাম যে বড় পর্যায়ে বা বড় ব্যাটারের সামনে বোলিং করলে কেমন হবে ...গত টি-টেন আমাকে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী করে দিয়েছে, যে দুনিয়ার যে-ই থাকুক না কেন, আমি আমার সেরাটা দেব এবং ভালো কিছু করব।”

বিপিএলের উদ্বোধনী দিনেই শুক্রবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।