Published : 30 Apr 2025, 08:55 PM
১৬ ইনিংস পর অবশেষে টেস্ট ক্রিকেটে চারশ রানের সীমানা ছুঁতে পেরেছে বাংলাদেশ। দেশের মাঠে এই ৪৪৪ রানের চেয়ে বড় ইনিংস বাংলাদেশ সবশেষ গড়তে পেরেছে প্রায় তিন বছর আগে। তার পরও দলের ব্যাটিং সন্তুষ্ট করতে পারছে না নাজমুল হোসেন শান্তকে। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে ‘দশে মিলি করি কাজ’ যে সবসময় খুব ভালো কিছু নয়! বাংলাদেশ অধিনায়কের চাওয়া, থিতু ব্যাটসম্যানরা যেন ম্যারাথন ইনিংস খেলতে পারেন।
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ৩৩ ইনিংস পর শতরানের উদ্বোধনী জুটি পায় দল। শুরুর জুটিতে আসে ১১৮ রান। ওপেনার সাদমান ইসলাম করেন সেঞ্চুরি। তবে দারুণ খেলতে থাকা সাদমানের ইনিংস শেষ হয় ১২০ রানে।
শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের বাকি চারজনই থিতু হয়ে ব্যর্থ হন বড় ইনিংস খেলতে। দীর্ঘদিন পর টেস্টে ফিরে এনামুল হক আউট হন ৩৯ রান করে। মুমিনুল হক ‘আত্মহত্যা’ করেন ৩৩ রানে। আলগা এক শটে নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হন ২৩ রানে। আত্মঘাতী দৌড়ে মুশফিকুর রহিম রান আউট হন ৪০ রানে।
পরে জাকের আলি ও নাঈম হাসান দ্রুত বিদায় নিলে বাংলাদেশের রান এক পর্যায়ে ছিল ৭ উইকেটে ২৭৯। পরে মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ সেঞ্চুরি ও লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গে তার লড়াইয়ে বাংলাদেশ যেতে পারে ৪৪৪ রান পর্যন্ত।
২১৭ রানের লিড নিয়ে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নেয় ইনিংস ও ১০৬ রানে। তবে ব্যাটিং পারফরম্যান্সে অসন্তুষ্টির কথা ম্যাচ শেষে স্পষ্টই জানিয়ে দেন শান্ত।
“আমার কাছে মনে হয়, অধিনায়ক হিসেবে কখনোই আমি এরকম স্কোরবোর্ড চাই না। যদি এরকম না হয়ে, আরও দুজন ব্যাটসম্যান রান না করে সাদমান যদি দুইশ করত, বা আমার এখান থেকে একটা একশ হতো, বা মুশফিক ভাইয়ের দেড়শ হতো, কিংবা মুমিনুলের… । যদি এরকম বড় রান হতো, একটা দুইশ, একটা দেড়শ, তাহলে আমি খুশি হতাম, সাতজন মিলে ৪০ রান করে করার চেয়ে।”
“এটা ভালো দিক না একটা ব্যাটিং ইউনিটের। এখান থেকে আত্মবিশ্বাস পাওয়ার কিছু নেই। কোনো ব্যাটসম্যান এভাবে সুন্দর শুরুর পরে এরকম সফট ডিসমিসাল মানার মতো নয়। চাইব শ্রীলঙ্কায় (পরের সিরিজে) যেন এই ধরনের কিছু না হয়। যে রান করবে না তো করবে না, কিন্তু যে সেট হবে, সে যেন দেড়শ-দুইশ যেন করে।”
এই ইনিংস দিয়ে টানা ১৩ ইনিংসে ফিফটি ছুঁতে ব্যর্থ হলেন মুশফিক। ৯৬ টেস্ট খেলা ব্যাটসম্যানের দলে থাকা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে জোরেসোরে। তবে এই ইনিংসে তিনি যেভাবে খেলেছেন, চারটি চার ও এক ছক্কায় ৫৯ বলে ৪০ রানের এই ইনিংসটি আশা দেখাচ্ছে অধিনায়ককে।
“মুশফিক ভাই যতক্ষণ ব্যাট করেছেন, কখনও উনাকে দেখে মনে হয়নি যে আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন। একটা মানুষ নব্বইয়ের বেশি টেস্ট খেলার পর আত্মবিশ্বাস নিচের দিকে থাকতে পারে, আমার সেটা মনে হয়নি। আমি তার সঙ্গে যখন ক্রিজে ছিলাম, বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এবং ভালো ব্যাট করছিলেন।”
নিজের আউটের ধরন নিয়ে অবশ্য সোজাসাপ্টাই বললেন অধিনায়ক। সিলেট টেস্টেও বাজে শটে আউট হয়ে তিনি দায় নিয়েছিলেন। এবার কাঠগড়ায় তুললেন নিজেকে।
“আমার কথা যদি বলেন, আমার ওরকম মনে হয়নি যে অনেক নার্ভাস অনুভব করছি বা আজকে অনেক কিছু দেখিয়ে দিতে হবে। আমি ব্যাটিং উপভোগ করছিলাম। কিন্তু এই ধরনের সফট ডিসমিসাল হওয়া উচিত নয় এবং এগুলো হলে আসলে দলের ক্ষতি হয়। সামনে চেষ্টা করব যেন এরকম পরিস্থিতিতে যেন আমরা আউট না হই।”