করোনাভাইরাসের ছোবলে সতীর্থদের ছিটকে পড়া যেন আশীর্বাদ হয়ে এলো প্রবাথ জয়াসুরিয়ার জন্য। প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে তা দুই হাতে লুফে নিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার। অভিষেকে অসাধারণ বোলিং উপহার দিয়ে চারশর আগে থামিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে। পরে জবাব দিতে নেমে রেকর্ড জুটিতে শ্রীলঙ্কাকে দৃঢ় ভিতের উপর দাঁড় করালেন দিমুথ করুনারত্ন ও কুসল মেন্ডিস।
Published : 09 Jul 2022, 07:38 PM
গলে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ৩৬৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটিং করছে শ্রীলঙ্কা। ২ উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তারা। সফরকারীদের চেয়ে এখনও তারা পিছিয়ে ১৮০ রানে।
ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে ৯ চারে ৮৪ রানে খেলছেন মেন্ডিস। ১০ চারে ৮৬ রান করে ফিরে গেছেন করুনারত্নে। দুইজনে গড়েছেন ১৫২ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়া বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে যা শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ। তারা ভেঙে দেন ২০০৭ সালে মারভান আতাপাত্তু ও কুমার সাঙ্গাকারার গড়া ১৪৩ রানের রেকর্ড।
প্রাভিন জয়াবিক্রমা, জেফ্রি ভ্যান্ডারসে কোভিড-১৯ পজিটিভ না হলে এই ম্যাচে খেলা হতো না জয়াসুরিয়ার। হুট করে পাওয়া সুযোগ তিনি কাজে লাগালেন দারুণভাবে। ১১৮ রান দিয়ে নিলেন ৬ উইকেট।
শ্রীলঙ্কার হয়ে টেস্ট অভিষেকে যা দ্বিতীয় সেরা বোলিং। দেশটির হয়ে সাদা পোশাকে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড জয়াবিক্রমার। গত বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৯২ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে টেস্টের পথচলা শুরু করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৬ চারে অপরাজিত ১৪৫ রানের ইনিংস খেলেন স্টিভেন স্মিথ। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা। ৫ উইকেটে ২৯৮ রান নিয়ে দিন শুরু করে এক সেশনও খেলতে পারেনি দলটি। স্রেফ ৩৫ রানের মধ্যে হারায় তারা শেষ পাঁচ উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে শ্রীলঙ্কান কোনো বোলার এই প্রথম পেলেন পাঁচ উইকেট। আগের সেরা ছিল ২০০৮ সালে পেসার লাসিথ মালিঙ্গার ৪/৪২।
শেষের তিন উইকেট ভাগ করে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে দেন কাসুন রাজিথা, জয়াসুরিয়া ও অভিষিক্ত মাহিশ থিকশানা।
ব্যাটিংয়ে নেমে খুব সাবধানী শুরু করেও টিকতে পারেননি পাথুম নিসানকা। স্টার্কের বলে গালিতে লঙ্কান এই ওপেনারের দুর্দান্ত ক্যাচ নেন ক্যামেরন গ্রিন। শুরুর ধাক্কা সামাল দেয় স্বাগতিকরা করুনারত্নে ও মেন্ডিসের ব্যাটে।
শুরুতে এতটাই সতর্ক ছিল শ্রীলঙ্কা, প্রথম বাউন্ডারির দেখা পায় দলটি ইনিংসের পঞ্চদশ ওভারে। ওই ওভারে শেষে তাদের রান ছিল স্রেফ ২২। এরপর কিছুটা বাড়ে রানের গতি।
১১৯ বলে মেন্ডিস ও করুনারত্নের পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি চা বিরতির আগের ওভারে ভাঙতে পারত অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ৩৪ রানে থাকা লঙ্কান অধিনায়কের ফিরতি ক্যাচ ধরতে পারেননি মিচেল সোয়েপসন। পরে বাঁহাতি ওপেনার ফিফটি স্পর্শ করেন ১০৯ বলে।
১১৮ বলে পঞ্চাশ আসে কুসল মেন্ডিসের। তাদের জুটি দেড়শ রান ছোঁয় ২৭৫ বলে। তাদের প্রতিরোধ ভাঙে করুনারত্নের বিদায়ে। লেগ স্পিনার সোয়েপসনের বলে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে থিতু হয়ে যাওয়া এই ব্যাটসম্যানকে ফেরায় অস্ট্রেলিয়া।
কোভিড-১৯ নেগেটিভ হয়ে দলে ফেরা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে নিয়ে দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেন মেন্ডিস। ম্যাথিউস ৬ রান নিয়ে আছেন অপরাজিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১১০ ওভারে ৩৬৪ (আগের দিন ১৯৮/৫) (স্মিথ ১৪৫*, কেয়ারি ২৮, স্টার্ক ১, কামিন্স ৫, লায়ন ৫, সোয়েপসন ৩; রাজিথা ২৫-৪-৭০-২, রমেশ ৩৩-১-১১৭-১, থিকশানা ১৬-২-৪৮-১, জয়াসুরিয়া ৩৬-৩-১১৮-৬)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৩ ওভারে ১৮৪/২ (নিসানকা ৬, করুনারত্নে ৮৬, মেন্ডিস ৮৪*, ম্যাথিউস ৬*; স্টার্ক ১২-২-২৮-১, কামিন্স ১৩-৪-৩৪-০, লায়ন ২১-১-৬৯-০, গ্রিন ৩-০-৮-০, সোয়েপসন ১১-২-৩১-১, হেড ৩-০-১৩-০)