বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার ১১ বছর পর আবার ফিরে আসছেন জেমি সিডন্স। তবে সাবেক প্রধান কোচকে এবার দেখা যাবে নতুন ভূমিকায়। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালদের গড়ে তোলায় বড় অবদান রাখা এই অস্ট্রেলিয়ানকে ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি।
Published : 24 Dec 2021, 07:20 PM
বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে শুক্রবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে সিডন্সকে ফেরানোর কথা জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
৫৭ বছর বয়সী এই কোচের নিয়োগ ও ভূমিকা নিশ্চিত হলেও কোন দলের সঙ্গে কাজ করবেন, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি।
“জেমি সিডন্সকে ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। সে কোথায় কাজ করবে, কী করবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই সে কাজ শুরু করবে।”
“সে কোথায় কাজ করবে, এটা আমরা ঠিক করব। আমরা যদি বলি এইচপি, তাহলে সেখানেই। যদি জাতীয় দল কিংবা অনূর্ধ্ব-১৯ বা বাংলা টাইগার্স, যদি ১৫-১৬ জন ছেলেকে আলাদা করে তার হাতে দেই…এখনও চূড়ান্ত করিনি। তবে শিগগিরই জানতে পারবেন।”
দুই বছরের জন্য তার সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিবি।
ডেভ হোয়াটমোর বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়ার পর ২০০৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পান সিডন্স। হোয়াটমোরের সময় থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পায়ের নিচে জমিন পাওয়ার শুরু, তা আরেকটু শক্ত হয় সিডন্সের সময়ে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের ১৪ ক্রিকেটার একসঙ্গে চলে যান ভারতের আইসিএলে খেলতে, যেখানে ছিলেন শীর্ষ ক্রিকেটারদের অনেকে। সেই সময় দলের পুনর্গঠন ও গোছানোয় বড় ভূমিকা রাখেন সিডন্স। তবে দেশের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর তার সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করেনি বিসিবি। যদিও সিডন্স সেসময় থাকতে চেয়েছিলেন বলেই জানিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমকে।
প্রধান কোচ হিসেবে সিডন্সের সাফল্য নিয়ে যেমন তখন আলোচনা ছিল, তেমনি বড় সমালোচনা ছিল ‘ম্যান ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে। দলের সবাইকে সমান চোখে দেখা ও মূল্যায়ন করতেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল সেসময়।
তবে ব্যাটিং কোচ হিসেবে তার দারুণ দক্ষতার কথা নিঃশঙ্কোচে স্বীকার করে নেন সেই সময়ের বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রায় সবাই। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম, সাকিব, মুশফিকুর রহিমরা নানা সময়েই বলেছেন, ব্যাটিং কোচ হিসেবে সিডন্স তাদের চোখে অন্য উচ্চতায়।
বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সহকারী কোচ ছিলেন সিডন্স। বাংলাদেশে মেয়াদ শেষের পর ২০১১ সালেই নিউ জিল্যান্ডে ওয়েলিংটন ফায়ারবার্ডসের কোচ হন তিনি। পরে ২০১৫ সালে দায়িত্ব নেন সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ হিসেবে। সেই দায়িত্ব ছাড়েন তিনি গত বছরের মার্চে।
খেলোয়াড়ী জীবনে সিডন্স ছিলেন ব্যাটসম্যান। অনেকেই তাকে মনে করেন কখনও টেস্ট না খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান। শেফিল্ড শিল্ডে ১০ হাজার রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। কিন্তু সেই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের কারণে সুযোগ পাওয়া হয়নি তার। একটি ওয়ানডে অবশ্য খেলতে পেরেছিলেন ১৯৮৮ সালে পাকিস্তান সফরে। ওই সফরে টেস্ট খেলার কাছাকাছিও ছিলেন তিনি। কিন্তু খেলতে পারেননি পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ায়। আর কখনও সুযোগই মেলেনি। লেগ স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন তার দেখা সেরা ৫০ ব্যাটসম্যানের তালিকায় রাখেন সিডন্সকে।
বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তার। এবার তাকে আবার পাওয়া যাচ্ছে সামনাসামনিই।