কোচিং ক্যারিয়ার নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটছিল। সহকর্মী এক কোচের সঙ্গে সাধারণ আলাপচারিতার এক পর্যায়েই মনের বদ্ধ দুয়ারে টোকা পড়ল ফের। সেখান থেকে শুরুর পর সেই ভাবনাই এখন বাস্তবে রূপ নেওয়ার অপেক্ষায়। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের প্রায় দুই বছর পর আবার মাঠে দেখা যাবে ইয়োহান বোথাকে।
Published : 07 Dec 2020, 10:10 AM
এবারের বিগ ব্যাশে হোবার্ট হারিকেন্সের হয়ে খেলতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী এই অফ স্পিনার। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইন জাতীয় দলের হয়ে ব্যস্ত থাকবেন বলে তার বদলি হিসেবে নেওয়া হয়েছে বোথাকে।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে হারিকেন্সের হয়েই ক্যারিয়ারের সবশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন বোথা। ক্রমাগত চোটের কাছে হার মেনে অনেকটা আচমকাই সেবার অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
তার এবারের ফেরা অবশ্য আচমকা নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৫ টেস্ট, ৭৮ ওয়ানডে ও ৪০ টি-টোয়েন্টি খেলা অফ স্পিনার কয়েক বছর ধরেই থিতু হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানকার নাগরিকত্ব পেয়েছেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষের পর গড়ে তুলছেন কোচিং ক্যারিয়ার। পিএসএল, সিপিএলে কোচিং করিয়েছেন, শেফিল্ড শিল্ডে তিনি তাসমানিয়ার সহকারী কোচ।
গত অক্টোবরে এবারের শেফিল্ড শিল্ডে তাসমানিয়ার প্রথম ম্যাচের সময়ই দলের আরেক সহকারী কোচ বেন রোরার কথা প্রসঙ্গে বোথাকে জিজ্ঞেস করেন মাঠে ফেরা নিয়ে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটকে বোথা জানালেন, সেখান থেকে আলোচনা এগিয়ে যায়।
“ বেন সম্ভবত স্রেফ পরখ করে দেখছিল। সে জিজ্ঞেস করছিল, খেলা মিস করি কিনা এবং ফেরার কথা ভাবি কিনা। আগের তিন-চার মাস ধরে আমি সত্যিই ভাবছিলাম এটা নিয়ে। আইপিএল এবং নানা জায়গায় ছেলেদের খেলতে দেখি, যাদের সঙ্গে ও বিপক্ষে খেলেছি, তাদের লড়তে দেখে দিনগুলি মিস করিই।”
“ আমি যদি তখন সরাসরি বলে দিতাম যে আমি মিস করছি না এবং খেলতে আগ্রহী নই, তাহলে প্রসঙ্গটি সেখানেই শেষ হতো। আলোচনা সাধারণভাবেই শুরু হয়েছিল, এরপর তা এগিয়ে যায়।”
কয়েকদিন পর হারিকেন্সের প্রধান কোচ অ্যাডাম গ্রিফিথের সঙ্গে কথা বলেন বোথা। সবজ সঙ্কেত পেয়ে শুরু হয় বোথার ফেরার অভিযান। কোচিং করানোর সময় নেটে এমনিতেও নিয়মিত বল করতেন বোথা। তবে সেটা ছিল শুধু অন্যদের অনুশীলনে সাহায্য করার জন্যই। এবার তিনি নিজের ফেরাকে ভাবনায় রেখে গুরুত্ব দিয়ে বোলিং করতে থাকেন। ব্যাটিং অবশ্য তখন করেননি, আলোচনার খোরাক তখনই হতে চান নি।
বোথার ইচ্ছে ছিল, কিছু ক্লাব ম্যাচ খেলে নিজেকে যাচাই করা। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ায় সেটি পারেননি। কিছটা অনিশ্চয়তাও তৈরি হয়েছিল তার ফেরা নিয়ে। তবে নেটে তিনি কাজ করে গেছেন।
এভাবেই ক্রমে নিজেকে তৈরি করে এখন মাঠে নামতে প্রস্তুত বোথা। কোচিং করানোর পাশাপাশি ৩ ঘণ্টার নীচে ম্যারাথন দৌড়ানোর জন্যও নিজেকে তৈরি করছিলেন তিনি। তাই ফিটনেস এখনও দারুণ। মাঠে নামতেও তিনি রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষায়।
“ অনুশীলনে দেখতে পাচ্ছি, যে কোনো সময়ের মতোই ফিট এখন আমি এবং অনুভব করতে পারছি, এখনও দলে যথেষ্ট অবদান রাখতে পারি।”