উইকেটের সামনে-পেছনে ছিলেন দারুণ সফল। কোনো কমতি ছিল না নেতৃত্বেও। ভারতীয় ক্রিকেটে তার অবদান কতটা, পরিসংখ্যান এর ঠিকঠাক চিত্র তুলে ধরতে ব্যর্থ। তবে, রেকর্ডবই দেখাচ্ছে ক্রিকেটে কতটা গভীর ছাপ রেখেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
Published : 16 Aug 2020, 06:03 PM
দীর্ঘ দিন ধরে চলা আলোচনার সমাপ্তি টেনে শনিবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান ধোনি। এর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো আলো ঝলমলে এক অধ্যায়ের।
ওয়ানডেতে দেশের হয়ে ৫০.৫৭ গড়ে করেছেন ১০ হাজার ৭৭৩ রান। সেঞ্চুরি ১০টি, ফিফটি ৭৩টি। ৩৭.৬০ গড়ে টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ১ হাজার ৬১৫ রান। একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে জিতেছেন আইসিসির ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা।
১৬ বছরের আন্তর্জাতিক সীমিত ওভারের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ব্যাটসম্যান, কিপার ও অধিনায়ক ধোনির পরিসংখ্যানের উল্লেখযোগ্য বিভিন্ন দিক নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য এই আয়োজন।
ব্যাটসম্যান ধোনি:
৫০.৫৭: ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০ হাজার বা তার বেশি রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় ধোনির। শীর্ষে থাকা বিরাট কোহলির গড় ৫৯.৩। কেবল ধোনি ও কোহলিই ১০ হাজার রান করেছেন ৫০ এর বেশি গড় নিয়ে। তৃতীয় স্থানটি শচিন টেন্ডুলকারের, গড় ৪৪.৮৩।
৪৭: ওয়ানডেতে সফল রান তাড়ায় ৪৭বার অপরাজিত ছিলেন ধোনি। এই সংখ্যায় তার ধারে কাছে নেই কোনো ব্যাটসম্যান। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্টি রোডস ছিলেন ৩৩ বার। রান তাড়ায় ধোনি অপরাজিত থাকার পরও কেবল দুটি ম্যাচে হারে ভারত। ২০১৩ সালে কলকাতায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ও ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
৯: ক্যারিয়ারে নয়টি ওয়ানডেতে ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন ধোনি। তার চেয়ে বেশিবার ছক্কায় ম্যাচ জেতাতে পারেননি আর কোনো ব্যাটসম্যান।
২২৯: সংখ্যাটি ধোনির ওয়ানডে ছক্কার সংখ্যা। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কেবল রোহিত শর্মাই তার চেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন। সব ব্যাটসম্যান মিলিয়ে এই তালিকায় ধোনি পঞ্চম স্থানে।
৭: পাঁচ নম্বরে কিংবা এর নিচে ব্যাটিং করে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা তিন ব্যাটসম্যানের একজন ধোনি। বাকি দুইজন হলেন ভারতের যুবরাজ সিং ও ইংল্যান্ডের জস বাটলার। এসব পজিশনে ব্যাটিং করে এই তিনজনের সেঞ্চুরিই সাতটি করে।
অধিনায়ক ধোনি:
৩: ভারতের একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে আইসিসির তিনটি শিরোপা জিতেছেন ধোনি। সব মিলিয়ে কেবল অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং ধোনির চেয়ে বেশি আইসিসির শিরোপা জিতেছেন।
৩৩২: ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন ধোনি। ২০০ ওয়ানডে, ৭২ টি-টোয়েন্টি ও ৬০ টেস্টে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতা অধিনায়কদের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। জিতেছেন ১৫১ ম্যাচ, এগিয়ে থাকা পন্টিং ১৭২ ম্যাচে।
৫৩.৫৫: অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় ধোনির। এ জায়গায় তার চেয়ে এগিয়ে কোহলি, ব্যাটিং গড় ৭৪.৫৯। ওয়ানডেতে অধিনায়ক হিসেবে ধোনির চেয়ে বেশি রান করেছেন কেবল রিকি পন্টিং।
২: ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম ম্যাচ হারা তিন অধিনায়কের একজন ধোনি। পন্টিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েডও হেরেছেন তার সমান দুটি করে ম্যাচ। ধোনির হার দুটি ছিল ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে এবং ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তার রেকর্ড ভালো, জিতেছেন ২০ ম্যাচ ও হেরেছেন ১১টিতে।
উইকেটকিপার ধোনি:
৪৪৪: ওয়ানডেতে ডিসমিসাল সংখ্যায় তৃতীয় ধোনি। তবে তার ১২৩টি স্টাম্পিং যেকোনো কিপারের চেয়ে বেশি। আর কেউ যেতে পারেননি একশর ঘরে। টি-টোয়েন্টিতে তার ৯১ ডিসমিসাল ও ৩৪টি স্টাম্পিংও সব কিপারের চেয়ে বেশি।
৬৬৪১: একই সঙ্গে অধিনায়ক ও কিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রান ধোনির। এই দুই দায়িত্ব এক সঙ্গে ২০০ ম্যাচে পালন করেছেন তিনি। কিপার হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ায় দ্বিতীয় জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, ৪৬ ম্যাচ। অধিনায়ক ও কিপার হিসেবে রান সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা ধোনির চেয়ে অনেক পিছিয়ে, দুই দায়িত্বে ৪৫ ম্যাচে এক হাজার ৭৫৬ রান করেছেন তিনি।