বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৮ উইকেট নিয়েছেন আরাফাত। গড়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
লিগের দশম রাউন্ডের ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে গাজী। ২৬ ওভার ১ বলে আবাহনীকে ১১৩ রানে গুটিয়ে দেওয়া দলটি লক্ষ্য পৌঁছে যায় ১২১ বল বাকি থাকতে।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বুধবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আরাফাতের সুইংয়ে এলোমেলো হয়ে পড়ে আবাহনী। পঞ্চম ওভারে মাত্র ১২ রানের মধ্যে হারায় ৫ উইকেট।
১ রান করা সাইফ হাসানকে বিদায় করে শিকার শুরু করেন আরাফাত। তার পরের তিন শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত, নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন খুলতে পারেননি রানের খাতা।
দুই অঙ্ক ছুঁয়েই টিপু সুলতানের বলে মুমিনুল হককে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এনামুল হক। বাঁহাতি স্পিনার টিপু ভাঙেন মোহাম্মদ মিঠুনের প্রতিরোধ। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ৪২ বলে ফিরেন ৪০ রান করে।
খানিক বিরতি নেওয়া আরাফাত আবার শিকার শুরু করেন ওভারে তিন উইকেট নিয়ে। মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ফিরিয়ে নেন নিজের পঞ্চম উইকেট। শূন্য রানে ফেরান সানজামুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলামকে।
সর্বোচ্চ ৪৬ রান করা মনন শর্মাকে ফিরিয়ে আবাহনীকে গুটিয়ে দেন আরাফাত। এই উইকেটে নিয়ে তরুণ পেসার গড়েন দুটি রেকর্ড।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল আব্দুর রাজ্জাকের অধিকারে। ২০০৩-০৪ মৌসুমে ঢাকায় জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১৭ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল ব্রাদার্সের শন উইলিয়ামসের অধিকারে। ২০১৩/১৪ মৌসুমে জিম্বাবুয়ের এই বাঁহাতি স্পিনার কলাবাগান ক্রিকেট অ্যাকাডেমির বিপক্ষে ২৫ রানে নিয়েছিলেন ৭ উইকেট।
গত বছর আবাহনীর বিপক্ষে ফতুল্লাতেই লিস্ট ‘এ’ অভিষেক হয় আরাফাতের। সেবার ৬ ওভারের ৬৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। চোটের পর এরপর আর মাঠে নামা হয়নি তার। খেলতে পারেননি সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও।
১১ মাস পর মাঠে ফিরে করলেন স্বপ্নের বোলিং। ৪০ রানে ৮ উইকেট নিয়ে জিতলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ক্রিকেট ইতিহাসে মাত্র একাদশ বোলার হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে পেলেন ৮ উইকেট।
রান তাড়ায় গাজীর শুরুটা ছিল নড়বড়ে। ২১ রানের মধ্যে মেহেদি হাসান ও মুমিনুল হক। তবে ফাওয়াদ আলমকে নিয়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম।
৭৮ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন জহুরুল। পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ ৭৩ বলে ৩৯ রানে। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে দুই জনে গড়েন ৯৩ রানের জুটি।
১০ ম্যাচে তৃতীয় হারের স্বাদ পেল আবাহনী। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে তারা। সমান ম্যাচে পঞ্চম জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে গাজী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী: ২৬.১ ওভারে ১১৩ (এনামুল ১০, সাইফ ১, শান্ত ০, নাসির ০, মিঠুন ৪০, মোসাদ্দেক ০, মনন ৪৬, মাশরাফি ৮, সানজামুল ০, আরিফুল ০, সন্দিপ ৩*; আরাফাত ৮/৪০, মেহেদি ০/৭, টিপু ২/২৩, নাঈম ০/১৯, রাব্বি ০/২৩)
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ২৯.৫ ওভারে ১১৪/২ (জহুরুল ৫২*, মেহেদি ১০, মুমিনুল ১, ফাওয়াদ ৩৯*, মাশরাফি ১/১৮, আরিফুল ০/৭, সন্দীপ ১/১৯, সানজামুল ০/২৩, নাসির ০.১৭, মনন ০/৬, মোসাদ্দেক ০/১৯)
ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসিন আরাফাত