নির্ধারিত সময়ে অস্ট্রেলিয়া দল না এলেও সিরিজের সূচি পরিবর্তনের শঙ্কা দেখছে না বিসিবি। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর বিশ্বাস, নিরাপত্তা পরিদর্শক দল বাংলাদেশে থাকতে থাকতেই সফরে চলে আসবে স্টিভেন স্মিথরা।
Published : 28 Sep 2015, 06:17 PM
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রধান শন ক্যারলের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুরের আগে মন্ত্রণালয়ে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসানের সঙ্গে সেই বৈঠকে ছিলেন প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীও।
সভা শেষে বিসিবি কার্যালয়ে ফিরে প্রধান নির্বাহী মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের। জানালেন, অস্ট্রেলিয়ার সফর নিয়ে তো শঙ্কা নেই-ই, এমনকি সূচি বদলের শঙ্কাও নেই বিসিবির।
“এই মুহূর্তে আমরা দেরির কোনো আশঙ্কা করছি না। সব ম্যাচই সূচি অনুযায়ী হবে। অন্তত চেষ্টা করব, মূল ম্যাচগুলি সূচি অনুযায়ী রাখতে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ ২-১ দিন আগে থেকে হয় না, অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হয়। টিভি সম্প্রচারের ব্যাপার আছে। মূল ম্যাচগুলো তাই সূচি অনুযায়ী রাখার চেষ্টা করব।”
দুটি টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সোমবার বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ‘সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির তথ্য পাওয়ার’ কথা জানিয়ে শনিবার হঠাৎ করেই সফর পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড (ডিএফএটি) বাংলাদেশে ভ্রমণে বিষয়ে সতর্কতা জারি করায় সফর পেছানোর এই সিদ্ধান্ত।
গত শুক্রবার ওয়েবসাইটে দেওয়া ডিএফএটির ওই নোটিসে বলা হয়, জঙ্গিরা বাংলাদেশে ‘অস্ট্রেলিয়ার স্বার্থের ওপর’ আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে- এমন ‘নির্ভরযোগ্য তথ্য’ তাদের হাতে রয়েছে।
আগামী ৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম এবং ১৭ অক্টোবর মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হওয়ার কথা। সফরসূচিতে ৩ অক্টোবরে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে তিন দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচও আছে।
স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের বিস্তারিতও জানালেন প্রধান নির্বাহী।
“ওরা আশ্বস্ত হতে চাইছে যে, সর্বাত্মক নিরাপত্তা সুবিধা তাদের প্রদান করা হবে। এজন্যই মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে সভা হয়েছে। বাংলাদেশের নিরপত্তা সংস্থাগুলোর অনেকগুলোরই প্রধানরা ওখানে ছিলেন। তারা সবাই এবং মন্ত্রী মহোদয় আশ্বস্ত করেছেন যে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলকে যে স্ট্যান্ডার্ড সিকিউরিটি দেওয়া হয়, তার সঙ্গে তাদের বাড়তি কোনো চাহিদা থাকলেও তা পূরণ করা হবে।”
নিরাপত্তার যে হুমকি বা ঝুঁকি নিয়ে সফর পিছিয়ে যাওয়া, সেটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পরিদর্শক দলও সুনির্দিষ্ট কিছু জানায়নি বলে জানালেন প্রধান নির্বাহী।
“অস্ট্রেলিয়ার সব নাগরিকের জন্যই যে জেনারেল ট্রাভেল অ্যাডভাইজরি, এই উপমহাদেশ, ভারত-নেপাল-মায়ানমার-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ভ্রমনের ক্ষেত্রে; সেটার ওপর ভিত্তি করেই তারা সফর পিছিয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো রিস্ক ফ্যাক্টরের কথা জানায়নি। আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও এ সম্পর্কে অবগত নয়। তারপরও আমরা বলেছি, তোমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে জানাতে পারো। ওরা বলেছে চেষ্টা করবে।”
নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আর সংশয় থাকার কথা নয়।
“আমরা যেটা বুঝতে পারছি, তারা তাদের ক্রিকেটার এবং প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনকে কিছু বিশ্বাস জোগাতে চাইছে। আমরা চেষ্টা করছি, যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট সব নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে তাদের বৈঠক করিয়ে দিতে। তবে একটা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সভা করার পর এবং সর্বোচ্চটা পাওয়ার আশ্বাসের পর আর কিছু বাকি থাকে না। আমাদের যা করার আমরা করেছি।”