বিপিএলের রেকর্ড চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন ফরচুন বরিশালের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
Published : 29 Feb 2024, 08:01 AM
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কখনও বিপিএলের ফাইনাল হারেনি। বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি কখনও ফাইনাল জিততে পারেনি। শিরোপার মঞ্চে বিপরীতমুখি অভিজ্ঞতার দুই দলই মুখোমুখি হচ্ছে আরেকটি ফাইনালে। তবে এবার পাশার দান উল্টে দিতে চান মুশফিকুর রহিম। ফরচুন বরিশালের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান প্রথমবার বিপিএলের ট্রফিতে চুমু এঁকে দিতে চান কুমিল্লাকে প্রথম ফাইনাল হারের তেতো স্বাদ দিয়ে।
বিপিএলে সবচেয়ে বেশি ১২৫ ম্যাচ খেলার রেকর্ড মুশফিকের। রানের তালিকায় তিনি আছেন তামিম ইকবালের ঠিক পরই। এই টুর্নামেন্টে তার ব্যক্তিগত রেকর্ড সমৃদ্ধ। কিন্তু দলীয় অর্জনের থলে এখনও শূন্য তার। একবারও তিনি জিততে পারেননি বিপিএলের শিরোপা।
দুই দফায় ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা তার আছে। ২০১৯-২০ আসরে তার নেতৃত্বে ফাইনালে পা রাখে খুলনা টাইগার্স। সেখানে তারা হেরে যায় আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালসের কাছে। গত আসরে তিনি ফাইনাল খেলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে। ৪৮ বলে ৭৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসও উপহার দেন তিনি। কিন্তু তার দল হেরে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে।
এবার মুশফিক ফাইনালে পৌঁছে গেছেন ফরচুন বরিশালের ভেলায়। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার ৪৭ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরাও তিনি। অপেক্ষা এখন তার আরেকটি ফাইনালের এবং আরও একবার তার সামনে হাতছানি শিরোপার।
তবে সমস্যা হলো, তাদের প্রতিপক্ষ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ফাইনালে যারা কখনও হারে না। ট্রফির লড়াইয়ে চারবার খেলে প্রতিটিই জিতেছে তারা। এবারও তারা কাগজ-কলমে আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ দল এবং প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে আগেই। ক্রিকেটীয় শক্তির মতো মানসিকভাবেও তারা এগিয়ে থাকবে শুক্রবারের ফাইনালে।
তবে আগে কখনও যা হয়নি, এবার তা সম্ভব বলেই মনে করেন মুশফিক।
“দেখা যাক, আমার তো ইচ্ছা আছে (প্রথমবার ট্রফি জয়ের)। সবারই তো ইচ্ছা থাকে, বাকিটা ওপরওয়ালার ইচ্ছা। এত দূর এসেছি… চেষ্টা থাকবে যেন চ্যাম্পিয়নশিপটা নিতে পারি। কুমিল্লা কখনও হারেনি ফাইনালে। কে জানে, হয়তো এবারই প্রথম হারবে!”
ফাইনাল জিততে পারলে মুশফিকের যেমন প্রথম বিপিএল ট্রফি হবে এটি, তেমনি বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিরও প্রথম শিরোপা হবে এটিই। প্রথম বিপিএলের ফাইনালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কাছে হেরেছিল বরিশাল বার্নার্স, ২০১৫ আসরে বরিশাল বুলস হেরেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে। এখনকার দল ফরচুন বরিশাল ২০২২ আসরে ১ রানে হেরে যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছেই। সেই কুমিল্লা এবারও রংপুরের বাধা।
একটা পর্যায়ে অবশ্য ফাইনালকেও তাদের জন্য মনে হচ্ছিল অনেক দূরের পথ। জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর পর টানা তিন ম্যাচ হেরে যায় তারা। পরে দুটি জয়ের পর আবার হারে একটি ম্যাচ। সব মিলিয়ে তাদের শীর্ষ চারে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়ে প্লে অফে জায়গা করে নেয় তারা তৃতীয় স্থানে থেকে।
মুশফিক বললেন, দলের দুঃসময় চলছিল যখন, তখনও নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারাননি তারা।
“আপনারা কতটুকু বিশ্বাস করেছেন জানি না, তবে আমাদের প্রথম থেকেই বিশ্বাস ছিল যে আমরা প্লে অফ খেলব, এবং ফাইনাল খেলব। সত্যি বলছি। যখন এমন পরিস্থিতি ছিল যেআমরা হয়তো হারলেই বাদ… তবে দেয়ালে পিঠ ঠেকলে কিন্তু সেরা সময় পারফর্ম করার। কারণ তখন হারানোর আর কিছু থাকে না।”
“আমার মনে হয়, এটা আমাদের প্লাস পয়েন্ট হয়ে এসেছে। ওই বিলাসিতা আমরা পাইনি যে, একটা ম্যাচ এদিক-সেদিক হলে আরেক ম্যাচে পুষিয়ে দেব। সবাই অনেক ফোকাসড ছিল। যার যেদিন ভালো গেছে, বেশির ভাগ সময়ই যেদিন যে যে ভালো খেলেছে, সে ম্যাচ বের করে নিয়েছে। যে কোনো দলের জন্যই এটা ভালো লক্ষণ। আশা করি, আর একটা ম্যাচ আছে, ফাইনালে যারই দিন হবে, সে যেন ম্যাচটা শেষ করতে পারে।”