বর্ষসেরা পুরুষ উদীয়মান ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র।
Published : 24 Jan 2024, 04:45 PM
বছরজুড়ে বল হাতে আলো ছড়ানো মারুফা আক্তারের সামনে হাতছানি ছিল আইসিসির বর্ষসেরা উদীয়মান নারী ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পাওয়ার। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের তরুণ পেসারকে ছাপিয়ে পুরস্কারটি জিতে নিলেন অস্ট্রেলিয়ার ফিবি লিচফিল্ড।
লড়াইয়ে এই দুজনের সঙ্গে ছিলেন ইংল্যান্ডের লরেন বেল, স্কটল্যান্ডের ডার্সি কার্টার।
২০২৩ সালের সেরা উদীয়মান পুরুষ ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র। তিনি পেছনে ফেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জেরল্ড কুটসিয়া, ভারতের ইয়াশাসবি জয়সওয়াল ও শ্রীলঙ্কার দিলশান মাদুশাঙ্কাকে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা মারুফা সময়ের সঙ্গে বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন। গত বছর ৯ ওয়ানডে খেলে ২৫.৮০ গড়ে ১০ উইকেট নেন তিনি। আর ২৩.৩০ গড়ে ১৪ টি-টোয়েন্টিতে তার শিকার ১০ উইকেট।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আইসিসি নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন মারুফা। ১৯ বছর বয়সী এই পেসার এরপর আর সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। বিশ্বকাপে মোট শিকার ছিল ৪টি, ওভারপ্রতি ৬.৩১ রান দিয়ে।
বছরের মাঝামাঝিতে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ ড্রয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হারানোর পথে ২৯ রানে নেন ৪ উইকেট। পরের দুই ম্যাচে তার শিকার ছিল ৩ উইকেট।
গত বছরের জানুয়ারিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় লিচফিল্ডের। এই সংস্করণের পারফরম্যান্স দিয়েই মূলত বর্ষসেরার পুরস্কারটি জিতে নেন ২০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। ২০২৩ সালে ১৩ ওয়ানডে খেলে ৫৩.৮৮ গড়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮৫ রান করেন তিনি। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি করেন চারটি।
এছাড়া গত বছর দুটি টেস্টে ৮৭ রান এবং ৩ টি-টোয়েন্টিতে ৮৮ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন লিচফিল্ড। পরের ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে আসে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস, করেন অপরাজিত ৬৭। এরপর কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। পরের পাঁচ ইনিংসের চারটিতেই যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ সেঞ্চুরি দিয়ে ব্যর্থতার বলয় ভাঙেন তরুণ ব্যাটার। খেলেন ১০৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। বছরের শেষ দুই ওয়ানডেতেও ফিফটি করেন তিনি; ভারতের বিপক্ষে ৭৮ ও ৬৩।
রবীন্দ্রর বর্ষসেরা পুরুষ উদীয়মান ক্রিকেটার নির্বাচিত হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে ওয়ানডেতে তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। গত বছর এই সংস্করণে অভিষেক হয় কিউই ক্রিকেটারের। ২১ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪১ গড়ে করেন ৮২০ রান। করেন তিন করে সেঞ্চুরি ও ফিফটি। বাঁহাতি স্পিনে ৪৬.৬১ গড় ও ওভারপ্রতি ৬.০২ রান দিয়ে নেন ১৮ উইকেট। গত বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্স ছিল চমকপ্রদ।
২০২৩ সালে টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি ১২টি। ১৩৩.৮২ স্ট্রাইক রেটে করেন ৯১ রান। ওভারপ্রতি নয়ের বেশি রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
ওয়ানডে অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্যের ঝলক দেখান ২৪ বছর বয়সী রবীন্দ্র। এরপর বিশ্বকাপ দলেও জায়গা করে নেন তিনি।
বছরে তার সবচেয়ে ভালো সময় কাটে বৈশ্বিক আসরে। ভারতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে ১০ ম্যাচে ৬৪.২২ গড়ে করেন চতুর্থ সর্বোচ্চ ৫৭৮ রান। ৯ ইনিংসে ওভারপ্রতি ছয়ের নিচে রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট।
বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে চমক দেখান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে করেন ফিফটি। ভারতের বিপক্ষে ৭৫ রানের ইনিংস খেলার পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পান আরেকটি সেঞ্চুরি, করেন ১১৬ রান। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৮ রান।
সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে ২০২৩ সালের সেরা পুরুষ ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন নেদারল্যান্ডের অলরাউন্ডার বাস ডে লেডে। এই পুরস্কার দুইবার জিতেছেন সাবেক ডাচ ক্রিকেটার রায়ান টেন ডেসকাট।
গত বছর ১৬ ওয়ানডে খেলে ২৮.৬৮ গড় ও একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে ৪৫৯ রান করেন ডি লেডে। পেস বোলিংয়ে ২৬.৪২ গড়ে ধরেন ৩১ উইকেট। ২০২৩ সালে কোনো টি-টোয়েন্টি খেলেনি নেদারল্যান্ডস।
সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে সেরা নারী ক্রিকেটার হয়েছেন কেনিয়ার অলরাউন্ডার কুইন্টর অ্যাবেল। অফ স্পিনে গত বছর টি-টোয়েন্টিতে ৩০ উইকেট নেন তিনি অবিশ্বাস্য ৭.৩৬ গড়ে। সঙ্গে ৩৪ গড়ে করেন ৪৭৬ রান।
২০০৭ সালে টমাস ওডোয়োর পর ছেলে-মেয়ে মিলিয়ে প্রথমবার এই পুরস্কার পেলেন কেনিয়ার কোনো ক্রিকেটার।